মোহাম্মদ ইউনুছ
পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ছাড়িয়ে রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে এক ব্যক্তি নৌবাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ভূমি দখলের চেষ্ঠার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিভিন্নস্থানে নিজেকে ঐ ব্যাক্তি নৌবাহিনীতে কর্মরত লোক পরিচয় দেওয়ায় ,তাঁর অন্যায় কাজে বাধা দিতে সাহস পাচ্ছেনা এলাকার লোকজন। এছাড়াও নিজেকে ক্ষমতাধর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সম্প্রতি স্থানীয় সংবাদকর্মীর সেল ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের নতুন তিতার পাড়া এলাকার আবুল কালাম আজাদ গত কয়েক মাস যাবত কচ্ছপিয়া মৌজার আর,এস ৩৭৬ খতিয়ানের জনৈক মোজাফ্ফর আহমদের মালিকানাধীন এম,আর আর ৩০১ ও আর,এস ২৯১২ দাগে এক একর জায়গাসহ ভোগ দখলীয় বেশ কিছু জায়গা দখলের প্রানপন চেষ্টা শুরু করেছে। এসব কাজে তিনি কতিপয় যুবককে ভাড়াটিয়া হিসেবে ব্যবহার করে হামলা-মামলার পরিস্থিতিও সৃষ্ট করেছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রহিমা বেগম, নূর নাহার, খতিজা, আকবরসহ অনেকে এ প্রতিবেদকের কাছে জানান, বিগত ৩০ বছর ধরে মোজাফ্ফর আহমদ এলাকায় শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করছেন। তবে গত কয়েক মাস ধরে জনৈক আবুল কালাম আজাদ নিজেকে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করেছেন। সম্প্রতি তিনি জনৈক মহিলাসহ এক যুবকে দিয়ে মোজাফ্ফর আহমদের পরিবারকে উচ্ছেদের জন্য হামলা চালান।
জানা গেছে, আবুল কালাম উক্ত জায়গা দখল নিতে সরকারী চাকুরিজীসহ বিভিন্ন মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোসহ টাকার বিনিময়ে ম্যানেজের চেষ্টা চালাচ্ছেন। আর এসব কাজে মহিলাসহ ভাড়াটিয়া জনৈক যুবককে ব্যবহার করছেন। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, আবুল কালাম আজাদ নৌবাহিনীতে কর্মরত থাকলেও বর্তমানে তিনি অবসর নিয়েছেন। তারপরও তিনি নৌবাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন মানুষকে প্রভাবিত করছেন। এলাকায় তিনি নিজে প্রকাশ্যে না এলেও জাহানারা বেগম ও শিহাব উদ্দিন নামে এক যুবকে দিয়ে এলাকার পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তোলছেন। এরই ধারাবাহিকতায় শিহাব উদ্দিন বিভিন্ন সময়ে মোজাফ্ফর আহাম্মদ ও তাঁর পরিবারকে প্রাণ নাশসহ জায়গা থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। গত ১৭ জুন জাহানারা বেগম কর্তৃক জোর পূর্বক মোজাফ্ফর আহাম্মদের সীমানা অতিক্রম করার চেষ্টা করে। এসময় মোজাফ্ফর আহাম্মদ তাকে বাধা দিতে গেলে শিহাব উদ্দিন ধারালো অস্ত্রে আঘাত করে। এতে মোজাফ্ফর আহাম্মদের ডান হাতে কাটা জখম হয়। এসময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় তিনি নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এব্যপারে হাসপাতালের সরকারী চাকুরীজীবি মোজাফ্ফর আহাম্মদ এ প্রতিবেদককে বলেন- বসবাসের জন্য জায়গা দিয়ে তিনি বর্তমানে নিজের জীবন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি বিগত ৩০ বছর ধরে তার ক্রয়কৃত জায়গাসহ পার্শ্ববর্তী রির্জাভ ভুমির জন্য সরকারী নিয়ম মোতাবেক আবেদন করে ভোগ দখলে আছেন। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে কুচক্রি মহল বিভিন্ন ছলচাতুরীর মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন বলে তিনি জানান। অভিযোগের বিষয়ে গত শুক্রবার বিকালে আবুল কালাম আজাদের ব্যবহৃত ০১৮১৩১৭৮৩৩৭ নং মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্ঠা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
অভিযোগের বিষয়ে গর্জনিয়া পুলিশ ফাড়ি ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম জানান, উভয় পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। বিষয়টি নিয়ে জনৈক শিহাব নামে যুবক রামু থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে এবং মোজাফ্ফর আহাম্মদও মৌখিক অভিযোগ করেছেন। সম্প্রতি এ ঘটনায় মারামারি ঘটনাও ঘটে। বিষয়টি তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন এবং প্রয়োজনে পূনরায় তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান। ইতিপূর্বে ভূমি দস্যু আবুল কালাম খতিয়ান জাল করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের এক ব্যক্তি থেকে জায়গা নিয়ে ক্ষমতার জোরে জায়গা খানা জবর দখল করে কলোনী তৈরি করেন । উল্লেখ্য যে,পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় জায়গা ক্রয় করতে পূর্বে জায়গার মালিক বা পিতার নামে জায়গা থাকার নিয়ম থাকলেও তিনি জায়গা না থাকায় খতিয়ান জাল করে এই জায়গা খানা জবর দখল করে নেয় ।