সেন্টমার্টিনে জোয়ারের অতিরিক্ত পানিতে বাড়িঘর বিধ্বস্থঃ আতংকে দ্বীপবাসী

টেকনাফ প্রতিনিধি
প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে জোয়ারের পানি অতিরিক্তহারে বেড়ে জলোচ্ছাস সৃষ্টি হয়ে ভাঙ্গন ও বাড়িঘর বিধ্বস্থ হয়েছে। এতে সেন্টমার্টিনের নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলো পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বঙ্গোপসাগরের মাঝখানে একটি দ্বীপে ভয়াবহ জলোচ্ছাসে প্রায় ৮ হাজার লোকজন চরম আতংকে ভুগছে। এসব এলাকার লোকজন বিধ্বস্থ বাড়িঘর ছেড়ে উচু স্থান ও আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। 
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল ২৮ মে সকালে জোয়ারে সেন্টমার্টিনদ্বীপে স্মরণকালের ভয়াবহ ভাঙ্গন এবং জলোচ্ছ্বাসের ঘটনা ঘটেছে। জোয়ারের পানি ৮ থেকে ১০ ফুট বৃদ্ধি পেয়ে সাগরের ঢেউ জনবসতিতে ডুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে দ্বীপের চর্তুদিকে ভাঙ্গন ধরে।
বেশি ভাঙ্গন ধরেছে উত্তরপাড়া, ডেইলপাড়া, পশ্চিমপাড়া, পূর্বপাড়া, হাবিরজোরা এলাকার গ্রামগুলোর বসতবাড়ি বিধ্বস্থ হয়ে বসতভিটা সাগরে বিলীন হয়ে গিয়েছে। ভাঙ্গনে প্রায় ১২/১৫ টি বসতবাড়ি সাগরে বিলীন হয়ে গিয়েছে। সেন্টমার্টিনদ্বীপের চর্তুরদিকে ভাঙ্গন ধরলেও সবচেয়ে বেশি মারাত্বক ভাঙ্গন ধরেছে উত্তর ও পশ্চিম অংশে বিশেষতঃ কবরস্থানের বেশিভাগই ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গিয়েছে। অনেক কবরে মৃতদেহ উম্মুক্ত হয়ে পড়েছে। জলোচ্ছ্বাসে সেন্টমার্টিন দ্বীপ বাজারের মোঃ আমিন, মনির উল্লাহ, আলী আহমদ, হাবিব উল্লাহসহ ৫টি দোকান বিধ্বস্থ হয়েছে। তাঁরা আরো জানান- দ্বীপের উত্তর ও পশ্চিম অংশে অর্ধ কিলোমিটার, শীলবনিয়া পাড়া  থেকে দক্ষিণ পাড়া মসজিদ পর্যন্ত, নেভী গেইট থেকে জাদিবিল কবির মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত, হোটেল সীমানা পেরিয়ে থেকে গলাচিপা পর্যন্ত ভাঙ্গন ধরেছে। বঙ্গোপসাগরে অতিরিক্ত পানির বৃদ্ধির ফলে গত ২দিন ধরে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া ৬ জন মাঝি-মাল্লাসহ একটি ফিশিং ট্রলার সাগরে ডুবে গিয়েছে। মাঝিমাল্লারা সাতঁরে তীরে ফিরলেও ফিশিং ট্রলারটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, সেন্টমার্টিনদ্বীপে গত ২দিনে ইতিহাসে এত অল্প সময়ের মধ্যে এধরণের ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে রাস্তাঘাট ভাঙ্গন, বাড়িঘর বিধ্বস্থ, কবরস্থানসহ বিভিন্নস্থান পানিতে তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যা সেন্টমার্টিনের ইতিহাসে এধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ হয়নি। এমুহুর্তে ক্ষতিগ্রস্থ সেন্টমার্টিনবাসীর চিকিৎসার পাশাপাশি জরুরী সাহায্যে দরকার বিধায় সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানান। 
সেন্টমার্টিনদ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হারুন অর রশিদ জানান জলোচ্ছ্বাস ও ভাঙ্গনের ফলে ২দিন ধরে টেকনাফের সাথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন