(ফলোআপ) দালাল মুক্ত হয়নি টেকনাফ উপজেলা ভূমি অফিসে

আবুল কালাম আজাদ: টেকনাফ উপজেলা ভূমি অফিসে দৈন্যদশা এখনো কাটেনি। দালাল ছাড়া কোন কাজ হয়না। দালাল দিয়ে কাজ করলে  অল্প সময়ে কাজ সমাধান হয়। দালাল ছাড়া করলে সময় হয় অনেক বেশি। এ সমস্যা দীর্ঘ দিন হলেও কোন কর্তৃপক্ষ এর সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসেনি। ফলে দিন দিন জনভৌগান্তি বাড়ছে। গত ২৭জুলাই টেকনাফ ভূমি অফিসে
ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়েনা মর্মে বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশ হলেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারীগণ বীরদর্পনে তাদের নিজষ¦ দালালের মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ভূমি অফিস পরিদর্শন করে ও ভূমি কর্মকর্তাকে বার বার অভিহিত করার পরও দালালদের ব্যপারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। জনসাধারণের ভাষ্যমতে এখানে কোন অদৃশ্য শক্তির ইঙ্গিত রয়েছে। এ প্রতিবেদক ভূমি অফিস পরিদর্শন করে দেখতে পায়, কাননগো আরম্ভ করে পিয়ন পর্যন্ত প্রতিজন ২/৩জন নিজস্ব দালাল রেখে ভূমির নামজারী, খতিয়ান তোলা, রেকর্ড পত্র ইত্যাদি অনায়সে করে যাচ্ছে। ভূমি পরিদর্শন করে দেখা যায় সার্ভেয়ার রুমে হাবিব ও সার্ভেয়ারের মধ্যখানে একটি প্লাস্টিক চেয়ার বসিয়ে নুর মোহাম্মদ নামক এক দালাল দীর্ঘদিন পর্যন্ত অফিসের একজন নিজস্ব ষ্টাফের মতো সরকারী ফাইলপত্র নড়াচড়া, টাকা পয়সা লেনদেন, লোকজনকে হাকাবকা ইত্যাদি করে যাচ্ছেন। তার ক্ষমতার দাপট এতযে, সে উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমির চেয়ে বেশি ক্ষমতা রাখে। এ.সি ল্যান্ডের অতি সর্নিকটে বসে এভাবে জনসম্মূখে দালালি করে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে টেকনাফ ভূমি অফিসে ক্ষমতা কার বেশি দালালদের? না অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের। এছাড়া কাননগো, অফিস সহকারী, নাজির, সার্ভেয়ার ও নামজারী কারকের অফিসে ২/৩জন করে দালাল প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এদের কারণে সাধারণ ভূমির মালিক তাদের জমির নামজারী, বিভিন্ন রেকর্ডপত্র, খতিয়ান ইত্যাদি বিষয়ে ভূমি অফিসের কর্তাদের নিকট যেতে পারছেন না। তাদের কাছে যেতে হলে দালালদের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে। নামজারীর বেলায় সরকারী ম্যানুয়েল মোতাবেক ৪৫দিন সময় বেধে দেওয়া হলেও কিন্তু তা বছরের পর বছর থেকে যাচ্ছে। যারা দালাল দিয়ে ও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নামজারী করতে দেয় তাদের গুলো সরকারী সময়ের আগেই পেয়ে যায় বলে ভোক্তভোগি জমির মালিকগণ জানায়। সরকারী ম্যানুয়েল মোতাবেক জমির নামজারী খতিয়ানে শুধুমাত্র ডিসিআরএ ২৩৪ টাকা দেখালেও তার স্থলে ১০ হাজার টাকা থেকে আরম্ভ করে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। যারা টাকা বেশি দেয় তাদেরটায় আগে পাওয়া যায়। এছাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অবস্থা আরও করুন। সেখানে পরিদর্শন করে দেখা যায় প্রতিটি অফিসে ৪/৫ জন করে পাবলিক দালাল রয়েছে। এদের প্রত্যেকের একটি করে চেয়ার টেবিল সাজানো রয়েছে। মনে হবে যেন তারাই সরকারী রাজস্ব খাতের কর্মকর্তা কর্মচারী। কিন্তু খোজ খবর নিয়ে জানা যায় এরা মোটেও অফিসের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী না। এরা কারা? এরা হচ্ছে, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার নিয়োগকৃত ষ্টাফ। এদের বেতন ভাতা, ভরনপোষন, যাতায়াত ভাতা, উৎস ভাতা, ঈদ ভাতা, কোরবানী ভাতা ও সম্মানী ভাতা ইত্যাদি ভূমি সহকারী কর্মকর্তা দিয়ে থাকেন। জনমনে প্রশ্ন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার মাসিক সরকারী বেতন কত? সে ৪/৫জনের বেতন ভাতা কোত্থথেকে প্রদান করে। এটাই হচ্ছে মূল প্রশ্ন। এ ব্যপারে এলাকাবাসি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের ভূমি অফিসকে দালাল মুক্ত করার জন্য আহবান জানিয়েছেন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন