নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংলগ্ন বিস্তৃর্ণ উঁচু পাহাড় গুলো বৃক্ষ শূণ্য হয়ে ন্যাড়া অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী বন-বিভাগের অসংখ্য বিশাল আকৃতির পাহাড়ে কোন গাছপালা নেই। বৃক্ষহীন ন্যাড়া পাহাড় গুলো হাহাকার করছে। পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় হিমছড়ি এলাকা জুড়ে প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে উঠা এসব পাহাড়ে বনায়নের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনীতে রূপান্তর করা হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পর্যটকদেরকে সৌন্দয্যবদ্ধন সক্ষম হবে। এ মুহুর্তে সবুজায়নের জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষকে সঠিক পরিকল্পনার গ্রহন করার প্রয়োজন বলে মনে করছেন পরিবেশবাদী সচেতন মহল। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের কলাতলি-দরিয়ানগর থেকে শুরু করে হিমছড়ি ঝর্ণার ¯পট হয়ে রেজু মোহনা পর্যন্ত শতশত একর বিশাল উঁচু উঁচু পাহাড় রয়েছে। বন বিভাগের এসব অসংখ্য পাহাড় গুলোতে কোন বৃক্ষ নেই। দেখলে মনে হয় যেন মরুভূমি। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কটি পাহাড়ের পাদদেশে দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এ মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা সময় এসব ন্যাড়া পাহাড় মনে হয় মাথা উপর পড়বে। এছাড়া ও প্রতিদিন শতশত পর্যটকবাহী গাড়ী চলাচল করছে ন্যাড়া পাহাড়ের পাশ দিয়ে মেরিন ড্রাইভ সড়কে। সমুদ্র ও হিমছড়ি ঝর্ণা দেখতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকরা অবহেলায় পড়ে থাকা উঁচু পাহাড় গুলো দেখে হতাশা প্রকাশ করেছে।
ঢাকার রাজবাড়ীর বাসিন্দা ও বুয়েটের ছাত্র সাহেদ ও সৌরভ এ প্রতিবেদককে জানান, সমুদ্র তীরবর্তী বিস্তৃর্ণ উঁচু পাহাড়ে নান্দিকতার নকশায় সবুজায়ান করা হলে পর্যটকদের দৃষ্টি নন্দন হবে। সাগর দেখার পাশাপাশি মন ভরে পাহাড়ে ও বেড়াতে পারবে। তাই এভাবে পাহাড় গুলো বৃক্ষ শূণ্য অবস্থায় ফেলে রাখা সংশ্লিষ্ঠ বনবিভাগের উচিত হয়নি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বেড়াতে আসা একদল বোটানিক্যাল বিভাগের ছাত্ররা এসব ন্যাড়া পাহাড় দেখে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, বৃক্ষ না থাকার কারনে দিনদিন উঁচু পাহাড় গুলো ক্ষয় ধরেছে।
শুধু তাই নয়, বর্ষার সময় বৃষ্টিপাতে এসব পাহাড় ধ্বসে পড়ে জীবন হানির ঘটনা ঘটছে। তাদের মতে, পাহাড়ের সুরক্ষা, ক্ষয়রোধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য দ্রুত সবুজায়ন পরিকল্পনা গ্রহন করা উচিত। হিমছড়ি বিট কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন বলেন, বনবিভাগ ইতিমধ্যেই ন্যাড়া পাহাড়ে বনায়ন করার জন্য ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। বনায়নের জন্য বর্তমানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারার নার্সারীর কাজ শুরু হয়েছে।
পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা জানান, বিশাল আকারের উঁচু উঁচু ন্যাড়া পাহাড় গুলো বনায়ন করা হলে সবুজ বেষ্টনী গড়ে উঠবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, প্রাণ হানির ও পাহাড় ধ্বসের পড়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে। তাই পর্যটকদের আকর্ষনের সৌন্দয্যবদ্ধন ও পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকানোর জন্য আধূনিক পদ্ধতিতে সবুজায়ন পরিকল্পনা গ্রহন করা উচিত বনবিভাগের।
এব্যাপারে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইতিমধ্যেই বনবিভাগের আওতায় হিমছড়ি এলাকায় চলতি বছরে ৩০ হেক্টর বনভূমিতে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে বৃক্ষ রোপন করা হবে। এছাড়া ও আগামী বছরে ও ৪০ হেক্টর ভূমিতে অনুরূপ বনায়নের কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে কলাতলি-দরিয়ানগর হতে হিমছড়ি ও রেজুর মোহনা পর্যন্ত বনায়নের আওতায় এনে সবুজায়ন করা হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন