রামু পানের ছড়া ঢালায় গণডাকাতি

কোটি টাকার মালামাল লুট, আহত ১৬০ : পুলিশের বিরুদ্ধে নির্লিপ্ততার অভিযোগ

সাঈদ রহমান: কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের রামু পানের ছড়া ঢালায় শতাধিক যানবাহনে স্মরণ কালের ভয়াবহ গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত সোয়া ৯ টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১০ পর্যন্ত এই ডাকাতির ঘটনা চলে। এসব উভয় দিক দিয়ে আসা যাত্রীবাহি বাস সহ বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মুল্যবান মালামাল সহ প্রায় কোটি টাকার মালামাল লুট করা হয়েছে। সশস্ত্র ডাকাত দলের বেপরোয়া মারধরে আহত হয়েছেন অনন্তত দেড় শতাধিক নারী পুরুষ ও শিশু। আহতদের মধ্যে বেশীর ভাগই যাত্রী ও গাড়ী চালক বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে কিছু ব্যক্তিকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে এবং অন্যান্যদের উখিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। দীর্ঘ সময় গণডাকাতি ঘটলেও পুলিশ এগিয়ে আসেনি রহস্য জনক কারণে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ডাকাত আক্রান্তলোকজন সুত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত সোয়া ৯ টা থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের পানেরছড়া ঢালা নামক স্থানে ২০/২৫ জনের একদল সশস্ত্র ডাকাত সড়কের ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। এসময় কক্সবাজার থেকে টেকনাফগামী এবং টেকনাফ থেকে চট্টগ্রাম ও ঢাকাগামী যাত্রীবাহি বাস, ট্রাক,ভ্যান,লরি সহ অনন্ত অর্ধ শতাধিক যান উভয় পার্শ্বে আটকা পড়ে। সশস্ত্র ঢাকা দল পর্যাক্রমে শতাধিক যানবাহনে গণডাকাতি সংগঠিত করে। এসময় যাত্রী, চালকদের বেপরোয়া মারধরও করা হয়।
ডাকাত আক্রান্ত ট্রাক নং- চট্টমেট্রো-ক-১০৭ এর চালক মরিচ্যা এলাকার মোঃ আলী জানান, ডাকাতি কালে তার বালিভর্তি ট্রাকটিও কবলে পড়েন। নগদ টাকা লুট ছাড়াও তাকে এবং হেলফারকে বেদম মারধর করা হয়েছে। তার মতো আরো অনন্ত দেড় শতাধিক যাত্রীকে বেপরোয়া মারধর করা করা হয়েছে।কয়েকজন যাত্রী ও চালক জানান, টেকনাফ থেকে ঢাকাগামী ও ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফগামী নাইটকোচের যাত্রীদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার,মোবাইল সেট, নগদ টাকা সহ প্রায়কোটি টাকার মালামাল লুট করা হয়েছে।

ইনসেপটা ওষুধ কো¤পানীর ভ্যাট চালক ও হেলফার জানান, তারা পানের ছড়া ঢালায় ডাকাত আক্রান্ত হয়েছে। তাদের গাড়ী থেকে লুট করা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকা। 

উখিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি এডভোকেট আবদুর রহিম জানান, স্মরণ কালের ডাকাতির ঘটনায় আহত কিছু ব্যক্তিকে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা করা হয়েছে।

ডাকাত আক্রান্ত কয়েকজন যাত্রী জানান, তারা শ্যামলী পরিবহণ যোগে ঢাকায় যাচ্ছিল। তারা পথিমধ্যে ডাকাতের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন। এদের মতো আরো কিছু যাত্রীকে আহত অবস্থায় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানান তারা।

এলাকাবাসী ও আহত যাত্রীদের অভিযোগ, সড়কের পানেরছড়া ঢালায় স্থায়ী একটি সশস্ত্র পুলিশ চৌকি রয়েছে। কিন্তু গণডাকাতির সময় পুলিশ যাত্রীদের সাহায়্যে এগিয়ে না এসে দুরে চলে যায়। তাদের অভিযোগ, ওই ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ স¤পৃক্ত রয়েছে।

প্রসংগ, প্রতি বছর রোজা ও কোরবানের ঈদের আগে কক্সবাজার-টেকনাফ ও কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অনন্তত ৯টি স্থানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে আসছে। আর দেড় সপ্তাহ পরে আসছে ঈদুল আযহা। কিন্তু জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সড়কে টহল জোরদার না করায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গিয়াস উদ্দিন মিয়ার বক্তব্য নেয়ার জন্য সরকারি মোবাইল নাম্বারে বার বার রিং করার পরেও তিনি রিসিভ করেননি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন