খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করতে বেশি পছন্দ যুক্তরাষ্ট্রের

আমাদের সময় ডটকম: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র কর্মকর্তারা ভারতকে জানিয়ে দিয়েছিল যে, তারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করতে বেশি পছন্দ করে। এরপর সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ব্যক্তিগতভাবে বারাক ওবামার কাছে বাংলাদেশে ‘রাজনৈতিক চরমপন্থার’ উদ্ভব ঘটছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মনমোহন সিংয়ের ওই উদ্বেগের প্রেক্ষিতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার পররাষ্ট্র কর্মকর্তাদেরকে বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠভাবে পরামর্শের এই নতুন আদেশ দেন।
বার্তা সংস্থা পিটিআইকে উদ্ধৃত করে এ মর্মে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতের ইকোনমিক টাইমস পত্রিকা।
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনে প্রধান সব রাজনৈতিক দলকে অংশগ্রহণেরও সুযোগ দিতে হবে। আর নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো মাথা ব্যথা নেই। সেই সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের সাথে আরো ঘনিষ্ঠভাবে পরামর্শের জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন বারাক ওবামা।
ইকোনমিক টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওবামার নির্দেশের পর বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান রাইস ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেননের সঙ্গে আলোচনা করে নিজেদের দূরত্ব আরো কমিয়ে এনেছেন বলে পিটিআই জানায়।

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনার সাম্প্রতিক নয়াদিল্লি সফর এবং ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্তাদের সাথে বৈঠকও ওই প্রক্রিয়ারই অংশ বলেই গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতকেই নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। আর আমি মনে করি না যে, এ বিষয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তেমন কোনো মতপার্থক্য আছে।

দু’দেশের মধ্যে এসব সমঝোতা বৈঠকের সূত্র মতে, যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে জানিয়ে দিয়েছে যে, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। আর নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো মাথা ব্যথা নেই।

ওয়াশিংটনের ঐ কর্মকর্তা পিটিআইকে বলেন, আমরা গণতন্ত্রকে সবসময় সমর্থন করি। আমরা চাই এই টুকুই যে, বাংলাদেশে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে যেন একটি সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হয়। যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। আমরা আন্তরিকভাবে চাই, দেশটিতে আগামী নির্বাচনটি যেন গ্রহণযোগ্য হয়। সেই নির্বাচনে প্রধান সব রাজনৈতিক দলকে অংশগ্রহণেরও সুযোগ দিতে হবে। এ বিষয়টি আমরা আমাদের ভারতীয় প্রতিপক্ষকে ভালোভাবেই বুঝাতে পেরেছি।

বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে ভারতের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টির কারণ কী- জানতে চাইলে ওয়াশিংটনের ওই কর্মকর্তা বলেন, ভারতের সঙ্গে মতভিন্নতা রয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে না। আমরা মনে করি, ভারত আমাদের চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই পদক্ষেপ নেবে। বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কী করণীয়, তা বাংলাদেশের সরকার ও রাজনীতিকদেরই ঠিক করা উচিত বলে ওয়াশিংটন মনে করে।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকার এবং দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোকেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের সঠিক পথটি খুঁজে বের করতে হবে। এটা কী তত্ত্বাবধায়ক নাকি অন্য কোনো সরকার হবে, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ কোনো পছন্দ নেই। যুক্তরাষ্ট্র শুধু বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়। আর তার পথ সুপ্রশস্ত করতে দ্বন্দ্ব মেটাতে দুই প্রধান দলের সংলাপে অংশ নেয়া উচিত বলেও মনে করে তারা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন