রওশনের বাসায় মন্ত্রি-এমপি, প্রেসিডেন্ট পার্কে বঞ্চিতরা

ডেস্ক রিপোর্ট: আরও দুই ভাগ হওয়ার পথে জাতীয় পার্টি। দলটি দৃশ্যত জাতীয় সংসদের বিরোধী দলে থাকলেও ভেতরে চলছে বিভক্তি প্রক্রিয়া। বিরোধী দলের নেতা হওয়া ও অনুগতদের মন্ত্রিসভায় স্থান দেয়াকে কেন্দ্র করে পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের সঙ্গে রওশন এরশাদের দ্বন্দ্ব এখন নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। নয়া সরকার গঠনের দিন শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার পর ‘অসুস্থ’ এরশাদ হঠাৎ সুস্থ হয়ে ওঠেন। তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরিয়ে দেয়া হয়। গতকাল সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পর থেকে জাতীয় পার্টিতে নয়া মেরুকরণ শুরু হয়েছে।
আজ সকালে এরশাদের নির্দেশে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো এবং মন্ত্রিসভায় স্থান না পাওয়া নেতারা যান এরশাদের বাসায়। অন্যদিকে এমপি ও মন্ত্রী হওয়া নেতারা ভিড় করেন রওশন এরশাদের বাসায়। সকালে এরশাদের বাসায় যান প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদের, সোহেল রানা, সালমা ইসলামসহ বেশ কয়েকজন নেতা।

সূত্র জানিয়েছে, বাসায় ফেরার পর থেকে এরশাদ অনেকটা চুপচাপ হয়ে আছেন। কথা কম বলছেন। সাক্ষাৎকালে একজন নেতা প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদেরকে মন্ত্রিত্ব বঞ্চিত করার প্রসঙ্গ আনলে এরশাদ ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, মন্ত্রিদের নাম আমার সামনে বলবে না। আমি এদের নাম শুনতে চাই না। এ সময় হাসপাতালে আটকে রাখার কথাও বলেন এরশাদ। 

প্রেসিডেন্ট পার্ক থেকে বের হয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য সোহেল রানা জানান, এরশাদ সুস্থ ছিলেন। তাকে হাসপাতালে কার্যত আটকে রাখা হয়েছিল। একই কথা জানান, সালমা ইসলাম। তিনি বলেন, স্যারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম সুস্থ আছেন কিনা। জবাবে তিনি বলেন, আমিতো সুস্থই ছিলাম। অসুস্থ হয়েছি কখন? আমাকে ওরা আটকে রেখেছিল। ওদের কাজ শেষ হওয়ার পর আমাকে দিয়ে গেছে। 

এদিকে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরাও সকাল থেকে এরশাদের বাসার সামনে জড়ো হয়েছেন। তাদের অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান রওশনপন্থি নেতাদের অবস্থানে। বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে দলীয় কয়েকজন সংসদ সদস্য সাক্ষাৎ করে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কর্মীরাও ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে যান। তবে সকাল থেকে তিনি বাসার বাইরে আসেননি। 
নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়াকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টিতে বিভক্তি দেখা দিলে কাজী জাফর আহমেদের নেতৃত্বে দলটির একটি অংশ ‘জাতীয় পার্টি’ নামে নতুন কমিটির ঘোষণা দেয় কাউন্সিলের মাধ্যমে। তারা এরশাদকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়। এরশাদের সঙ্গে থাকা নেতাদের মধ্যেও পরে নির্বাচন নিয়ে দ্বৈত অবস্থান দেখা যায়। 

এরশাদ নির্বাচন বর্জনে অনড় থাকলেও রওশন এরশাদের নেতৃত্বে দলটিকে নির্বাচনে রাখতে কিছু নেতা তৎপর হয়ে উঠেন। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নির্বাচনকালীন সরকারে অংশ নেয় জাতীয় পার্টি। এরপরও আরেক দফা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন এরশাদ। জাপাকে নির্বাচনে রাখতে সরকারের কৌশল হিসেবে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে রাখা হয় এক মাস।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন