তারেক আগমনের খবরে চাঙ্গা বিএনপি

ঢাকা ডেস্ক:
তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে বিএনপি মাঠে আছে আগ থেকেই। এ ইস্যুতে মাঠগরম করা আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে তেমন সফল হয়নি দলটি। উল্টো হরতাল-সমাবেশে দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার কথা উপেক্ষা করে সিনিয়র নেতারা ঘরেই অবস্থান করেছেন। সম্প্রতি বিএনপির ইস্যুতে নতুন যোগ হয়েছে তারেক রহমানের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। আর এ ইস্যুতে রাজপথে নেমে এসেছে বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদল। একই সঙ্গে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলও। বিশ্লেষকদের ধারণা, তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহাল আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে তারেক ইস্যু।


হেফাজতের ঢাকা অবরোধ ব্যর্থ হওয়ার পর ঝিমিয়ে পড়েছিল ১৮ দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি। চাপা পড়তে বসেছিল তত্ত্বাবধায়ক দাবিটিও। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া মাত্র পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। তারেক ইস্যুতে হতাশা কাটিয়ে হঠাৎ প্রাণিত হয়ে উঠেছে ছাত্রদল-যুবদলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা। 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ ও রাজপথ কোথাও সফল হতে পারছিল না বিএনপি। বর্তমান সরকারের একের পর এক কৌশলে রাজনৈতিকভাবে ধরাশায়ী দলটি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েও জুত করতে পারেননি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রাজপথে দলীয় অবস্থান দুর্বল হওয়ায় জামায়াতের কর্মসূচিতেও সমর্থন দিতে বাধ্য হয়েছে দলটি। ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থন ও পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েও সফল হতে পারেনি। উল্টো ৮৩ কার্যদিবস পর সদস্যপদ টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সংলাপেও দিতে হয়েছে দ্বিধা থরোথরো সাড়া। একদিন যেতে না যেতেই সরে আসতে হয়েছে সেখান থেকেও।

গত ২৬ মে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর বিশেষ আদালত-৩ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ও ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন। আদালতের এ নির্দেশের পরপরই সামনে চলে আসে তারেক রহমান ইস্যু। মূলত ছাত্রদল, যুবদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের তরুণরা আদালতের আদেশের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়। সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা রাজপথে নেমে আসে। তাতে বিএনপির বার্ধক্যখচিত কেন্দ্রীয় নেতারাও যেন হালে পানি পান। পর-পরই তারেক রহমান ও তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু এক করে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার কৌশল অবলম্বন করছে দলটির হাই কমান্ড। এরই অংশ হিসেবে দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। এছাড়া তারেক ইস্যুতে গত মঙ্গলবার দেশের প্রায় ১০ জেলায় হরতাল করেছে স্থানীয় বিএনপি। নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, তারেক রহমান দেশে ফিরে দায়িত্ব গ্রহণ করলেও খালেদা জিয়া অবসরে যাবেন না। তারেক রহমান দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেই তার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি বলেন, তারেক রহমানকে প্রতিহত করতে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদসহ সরকারি দলের নেতারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। সভা-সমাবেশ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে আমরা এসি রুমে নয়, রাজপথে সরকারের সব অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন করব।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন