বাজেটে পর্যটনের বিকাশ ও কক্সবাজারের উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আসন্ন জাতীয় বাজেটে পর্যটনের বিকাশ ও কক্সবাজারের উন্নয়নে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়েছেন কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোন মালিক সমিতি নেতৃবৃন্দ। বুধবার দুপুরে কক্সবাজারের তারকা খচিত হোটেল ওসান প্যারাডাইসের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলন উপযুক্ত দাবি জানানো হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটনের বিকাশ ও কক্সবাজারের উন্নয়নে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোন মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব শাহ আলম চৌধুরী প্রকাশ রাজা শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ওসান প্যারাডাইসের চেয়ারম্যান নুরুল করিম, কক্স টুডের আবদুল কায়েম চৌধুরী, হোটেল-মোটেল জোন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী প্রমুখ।
সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়, কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার পূঁজি বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু বর্তমানে কক্সবাজার পর্যটক শূন্য। এসব হোটেল-মোটেলে ৩০ হাজার কর্মচারির মধ্যে ১০ হাজার কর্মচারিকে ইতোমধ্যে বাধ্যতামূলক ছুটি দেয়া হয়েছে। বর্তমান নেতিবাচক অবস্থার অবসান ঘটিয়ে পর্যটন শিল্পে সু-বাতাস বইয়ে দিতে সমিতির পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবি উত্থান করা হয় এবং আসন্ন বাজেটে দাবিগুলো পূরণ করার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, মন্ত্রণালয় ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ১১ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামি ৫ বছরের জন্য কর অবকাশ প্রবর্তন, কক্সবাজারে অবস্থিত হোটেল-মোটেলগুলো সেবা খাত হিসেবে ভ্যাট আওতামুক্ত করা, পর্যটকদের যাওয়া-আসার সুবিধার্তে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইন সম্প্রসারণ দ্রুত বাস্তবায়ন ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক ৪ লেন বিশিষ্ট সড়কে রূপান্তরিত করা, পর্যটন শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, শুল্ক মুক্ত গাড়ি আমদানির অনুমতি প্রদান, বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন, কক্সবাজারে অবস্থিত হোটেল-মোটেল জোনে বিনিয়োগকৃত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণের বিপরীতে সুদের হার ৯% নির্ধাণের পাশাপাশি বিগত নভেম্বর মাস থেকে জুন পর্যন্ত ঋণের সুদ মওকুফ করা, কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোনকে আলাদা নিরাপত্তা জোন হিসেবে ঘোষণা করা, ট্যুরিস্ট পুলিশকে আরো কার্যকর ও গতিশীল করা, কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা, কক্সবাজারকে দৃষ্টি নন্দন করার উদ্দেশ্যে সৈকত এলাকায় লাইটিং, ড্রেনেজ ও ফুটপাত সংস্করণের জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখা এবং ঢাকা-কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ রুটে বাংলাদেশ বিমানের প্রতিদিন একটি করে ফ্লাইট চলাচলের জন্য দাবি জানানো হয়। একই সাথে বেসরকারিভাবে পরিচালিত কক্সবাজার-ঢাকা বিমানের ভাড়ার ট্যাক্স মওকুফ করে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে আসার মাধ্যমে বিমান পরিবহনকে জনপ্রিয় গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সাংবাকি সম্মেলনে বলা হয়, পর্যটনের উন্নয়ন মানেই কক্সবাজারের উন্নয়ন আর কক্সবাজারের উন্নয়ন মানে জাতীয় উন্নয়ন। এশিয়ার বিভিন্ন দেশ পর্যটন শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে তাদের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অথচ পর্যাপ্ত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এখনো সে পর্যায়ে উন্নীত হতে পারেনি। সরকারি দৃষ্টিকোণ থেকে কক্সবাজার ও পর্যটনের উন্নয়নে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে এবং সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা করা হলে কক্সবাজারের পর্যটন সারাদেশের জন্য উন্নয়নের মাইল ফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, অনুন্নত যাতায়ত ব্যবস্থা, হোটেল-মোটেল জোনে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার অভাব ও চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতাই বর্তমানে পর্যটনের নেতিবাচক অবস্থার জন্য দায়ী। এর উত্তোরণের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখার মাধ্যমে ইতিবাচক কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন