এক বছরেও জোড়া লাগেনি শাহপরীরদ্বীপ সড়ক : দূর্ভোগে ৪০ হাজার বাসিন্দা

টেকনাফ সংবাদদাতা: গত একটি বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো জোড়া লাগেনি মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্নি হওয়া টেকনাফ-শাহপরীরদ্বীপ সড়কটি। এতে চরম দূর্ভোগ ও ভোগান্তির মধ্যে যাতায়াত এবং জীবন যাপন করছে শাহপরীরদ্বীপের ৪০ হাজার বাসিন্দা। এছাড়া জোয়ারের পানি ও অতি বৃষ্টির ফলে
সৃষ্ট বন্যায় প্লাবিত হয়েছে শাহপরীরদ্বীপ এলাকার শত শত বাড়ীঘর। সাগরের করাল গ্রাসে বিলীন হয়েছে কয়েক হজার মিটার উপকূলীয় বেড়িবাঁধ। তলিয়ে গেছে মসজিদসহ অর্ধ শতাধিক ভিটা-বাড়ী। বিধ্বস্থ হয়েছে টেকনাফ-শাহপরীরদ্বীপ প্রধান সড়ক ও কালর্ভাট। নষ্ট হয়েছে ৪টি ¯¬“ইস গেইট। উপকূলীয় বেড়িবাঁধের ভয়াভহ ভাঙ্গনের ফলে সাগর ও নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি প্রবেশ করে দিবা-রাত্রি গ্রামের শত শত বাড়ী-ঘরসহ গোটা শাহপরীরদ্বীপে। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রায় ৪০ হাজার বাসিন্দার দুর্ভোগের অন্ত নেই। বাঁধের ভাঙ্গন পরিস্থিতি ক্রমেই মারাত্বক আকার ধারন করায় অসংখ্য লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে অন্যত্রে ছুটছে।
৭ জুলাই সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- সাগরের জলোচ্ছাসে কয়েক হাজার মিটার এলাকা জুড়ে উপকূলীয় বাঁধ ভেঙ্গে সাগরে বিলীন হয়ে পড়েছে। বাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে বিভিন্ন স্থানে বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্টান, রাস্তা-ঘাট, চিংড়ি ঘের, পানবরজ, সুপারি বাগান ও ফসলির বীজতলা ডুবে গেছে। বিশেষ করে, শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া, মাঝরপাড়া, দক্ষিণপাড়া, ঘোলাপাড়া, জালিয়াপাড়া, টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়ক জোয়ারের পানিতে “ভরাখাল -উত্তরপাড়া ” পর্যন্ত ডুবে আছে। এমনকি শাহপরীরদ্বীপ-টেকনাফ প্রধান সড়ক প্রায় ৩ থেকে ৪ ফুট পানিতে নিমজ্জিত এবং পানির স্রাতে সড়ক ভেঙ্গে বা ছিড়ে গিয়ে যোগাযোগ এক প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রয়োজনের সাপেক্ষে শাহপরীরদ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা নৌকা নিয়ে সড়ক পারাপার করছে। এদিকে সংশ্লিষ্ট এলাকার গ্রামগুলোতে পানি ঢুকায় অধিকাংশ লোকজন উচু স্থানে আশ্রয়সহ আত্মীয়স্বজনদের বাড়ীতে চলে গেছে। 
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হামিদুর রহমান জানান- উপকূলীয় বাঁধ ভেঙ্গে শাহপরীরদ্বীপের হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এলাকায় নাজুক অবস্থা দেখা দিয়েছে। শাহপরীরদ্বীপ হয়ত এভাবে অবহেলার কারণে একদিন ঘোলার চর বদর মোকামের মতো দেশের মানচিত্র হতে মুছে যেতে পারে শাহপরীর দ্বীপের ভূ-খন্ড। সরকারকে দেশের ভু-খন্ড রক্ষার্থে ও জনস্বার্থে অতি শীগ্রই পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। 
ইউপি মেম্বার আব্দস সালাম জানান- “রমজানে মাসের এদিনে ঘরে জোয়ারের পানি ঢুকে রান্না-বান্না করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এতে সঠিক সময় সেহেরী-ইফতার করা দুসাধ্য হয়ে পড়েছে। স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঘরের ভেতর মাঁচা বেঁধে বসবাস করছি।’ এদুদর্শা কবে আমাদের কপাল থেকে মুছে যাবে জানিনা ।
শাহপরীরদ্বীপ বাসী লোকজন জানান- ‘কদিন আগেও এখানে আরও ২০-৩০টি বসতবাড়ি ছিল। বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের কারণে এসব বাড়ীঘর তলিয়ে যায়। গত কয়েকদিন হঠাৎ করে জোয়ারের পানি ডুকে পড়েছে। আর জোয়ারের পানিতে শাহপরীরদ্বীপ নিয়মিতভাবে প্লাবিত হয়ে শত শত বড়ীঘর, শিক্ষা প্রতিষ্টান ও স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্টান ধ্বংস হচ্ছে। শাহপরীরদ্বীপ, নয়াপাড়া, সাবরাং এলাকার ১০-১৫টি গ্রামে এখন জোয়ার ভাটা চলে। পাউবো টেকনাফ অঞ্চলের উপ-সহকারি প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন বলেন, বর্ষা মৌসুমে বেড়িবাঁধে কোন সংস্কার কাজে হাত দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বেড়িবাঁধে নতুন নতুন ভাঙ্গন সৃষ্টি হওয়ায় নাফনদী ও বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এলাকাগুলো প্লাবিত হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন