উখিয়ার রেজু-আমতলী সীমান্ত দিয়ে চোরাই পণ্য আসছে

কায়সার হামিদ মানিক
কক্সবাজারের উখিয়ার রেজু আমতলী বিজিবি ও স্থানীয় চোরাকারবারিদের যোগসাজসে ব্যাপক হারে চোরাচালান বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ৫ মাস ধরে এ সীমান্তে চোরাচালান বাড়ছে।
সীমান্তে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)’র নায়েব সুবেদার চোরাকারবারিদের নিকট থেকে অলিখিত চুক্তি মোতাবেক উৎকোচ নিয়ে চোরাচালান ব্যবসায় সহযোগীতা করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। রেজু আমতলী এলাকার স্থানীয় চোরাকারবারি ও উখিয়া সদর ষ্টেশন ভিত্তিক একটি চোরাচালানি সিন্ডিকেট রেজু আমতলী বিজিবিকে হাতে নিয়ে সীমান্ত দিয়ে দিনে রাতে গরু, ছাগল, পলিথিন, ইয়বা ও অবৈধ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের দেশের প্রবেশ করার সুযোগ করে দিচ্ছে। এতে করে রেজু আমতলী সীমান্তে বিজিবির নিরব ভূমিকার কারণে স্থানীয় সচেতন জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম নিচ্ছে। সীমান্তে বিজিবির টহল ও পাহারা জোরদারের কথা কক্সবাজার ১৭ ব্যাটালিয়নের বিজিবি জানালেও বাস্তব ক্ষেত্রে তাদের এ বিবৃতির কোন মিল খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জানা যায়, রেজু আমতলী বিজিবির লালিত এক শ্রেণীর ডাককারী তথা ঘাট থেকে টাকা আদায়কারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিজিবি প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিশেষ করে রেজু আমতলী সীমান্ত এলাকার মৃত কালা মিয়ার ছেলে আশরাফ আলী ও তার পুত্র ছৈয়দ নুর, ছৈয়দ করিম, জসিম উদ্দিন সহ আরো ৪/৫ জনের একটি সিন্ডিকেট ঘাট থেকে বিজিবির নামে টাকা তুলে তা বিজিবির সুবেদারের নিকট হস্তান্তর করে থাকে বলে বিজিবির একাধিক ঘনিষ্টসুত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সীমান্তের দরগাহবিল, হাতিমোরা, তুলাতুলী, ডেইল পাড়া, ডিগলিয়া এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, গত  ৫ জুলাই কক্সবাজারস্থ লিংকরোড এলাকার খোরশিদা (২০) অসুস্থ মাকে মিয়ানমার সীমান্তের নিকট থেকে আনতে গিয়ে বিজিবি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে তাদেরকে আটক করে। এসময় খোরশিদা ও তার স্বামী মো: সেলিমের কাছ থেকে বিজিবি ১ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। তাদের কাছে ১ হাজার টাকা না থাকায় তারা ২জনে ৪শ টাকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে বিজিবি তাদের কথার কর্ণপাত করেনি। উল্টো এদেশের নাগরিক হয়ে বিজিবি মিয়ানমারের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী সাজিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। সীমান্ত এলাকার ইউপি সদস্য মুন্সি আলম জানান, সরকারের বেতন ভাতা নেওয়ার পরও বিজিবি অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নিতে চোরাচালানিদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে যা সীমান্ত আইন লংঘনের সামিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি জানান, কিভাবে সীমান্ত প্রহরীর মতো একটি সংস্থার লোকজন কার অনুমতি নিয়ে সীমান্ত দিয়ে অবাধে চোরাচালান প্রবেশ করতে সুযোগ দিচ্ছে তা কে জানে। এছাড়া মিয়ানমারের কোন অসুস্থ নারী পুরুষকে সীমানা পার হয়ে চিকিৎসার জন্য দেশে চোরাই পথে ঢুকতে চাইলে তাদেরকে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানান, বিজিবির জোন কমান্ডার সীমান্তের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ও চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত টহল জোরদার অব্যাহত রাখার চেষ্ঠা চালালেও জোন কমান্ডারের অগোচরে সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানিদের মালামাল পাচার কাজে এক প্রকার নিরব থাকে। এছাড়া গরু-১হাজার, ছাগল-৩শ, অনুপ্রবেশকারী-২০০ ও অন্যান্য চোরাচালান পাচার হয় মাসিক চুক্তিভিত্তিতে। গ্রামবাসী রেজু আমতলী বিজিবির এধরনের অনৈতিক অর্থ বাণিজ্য বন্ধ ও দুর্নীতিবাজ নায়েব সুবেদার সহ অন্যান্যদের অপসারণ পূর্বক সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানান।