জুলুমে বিপর্যস্ত দৈনিক কক্সবাজারবাণী ও সম্পাদকের শেষ কথা

ফরিদুল মোস্তফা খান: প্রিয় পাঠক, একজন প্রকৃত সাংবাদিকের কোন বন্ধু থাকে না। বস্তুনিষ্ঠ ও নৈতিকভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করলে তিনি হয়ে পড়েন গণদুষমন। তাই সম্ভবত আমি ও আমার সম্পাদিত কক্সবাজারের সর্বাধিক পাঠক নন্দিত দৈনিক কক্সবাজারবাণীও এখন অনেকটা এই অবস্থায়। কারণ পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত ক’দিন আগে আমি প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আবদুল কুদ্দুস রানার কিছু অপকর্মের তথ্য ফাঁস করেছিলাম। কিন্তু দূর্ভাগ্য শুধু এই অপরাধটির কারণে ক’দিন আগেও কক্সবাজারে যেসব আমার স্বজন ছিলেন, তারা কেউই এখন আমার সাথে কথা বলছেন না। ফোন দিলে রিসিভও করেন না। বিতর্কিত একজন আবদুল কুদ্দুস রানার পক্ষ অবলম্বন করতে গিয়ে শুধু কক্সবাজারবাণী ও ফরিদুল মোস্তফা ঠেকানোর জন্য সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দূর্বলের উপর সবলের জুলুমের ন্যায় বিনাকারণে কক্সবাজারের প্রসিদ্ধ দুয়েকটি সাংবাদিক সংগঠন আমার মত অসহায় এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছেন।
সংক্ষুব্ধ জনাব আবদুল কুদ্দুস রানা এদেরকে একত্রিত করে দৈনিক কক্সবাজারবাণী চিরতরে হত্যা ও আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন।
প্রিয় পাঠক, তেমন বড় কোন অপরাধ না করেও আমার পরম শ্রদ্ধা ও স্নেহের কিছু সাংবাদিক সম্পূর্ণ একরোখা হয়ে আমাকে চরম বিপর্যস্ত করে তোলার কারণে আমি একজনে উনারা ১০ জনের বিরুদ্ধে আর কুলিয়ে উঠতে পারছি না। সুযোগটি কাজে লাগিয়ে আমার সত্য লিখনিতে আক্রান্ত জনাব আবদুল কুদ্দুস রানা আদালতে আমার  বিরুদ্ধে মামলা করে ক্ষান্ত হননি, তিনি সম্পূর্ণ বে-আইনি ও গায়ের জোরে কক্সবাজারবাণী বন্ধ করে দিতে নানামুখী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছেন। একই সাথে কক্সবাজারে কর্মরত আমার পরম শ্রদ্ধার ও স্নেহের কিছু সাংবাদিকও আমার প্রতি ন্যূনতম সহানুভুতি না রেখে তার সাথে যোগ দিয়েছেন।
প্রিয় পাঠক, এজন্য সাম্প্রতিক সময়ে আমি একের পর এক অবাঞ্ছিত, বয়কট ও মামলার শিকার হয়ে একঘরে হয়ে পড়লাম। আমি একজন দূর্বল ও নিরপরাধ লেখক কেবল আবদুল কুদ্দুস রানা ছাড়া জীবনে কাউকে অসম্মান না করেও তাদের অবিচারের কারণে কোনদিকেই কুলিয়ে উঠতে পারছি না। 
প্রিয় পাঠক, আপনাদের যে অকুন্ঠ সমর্থন ও ভালবাসায় তিল তিল করে বেড়ে উঠা আমি ফরিদুল মোস্তফা আজ চরম নিরাপত্তাহীনতা ও জুলুমের শিকার হয়ে অনেকটা শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে আছি। এই অবস্থায়, শত্রুরা আমার বিরুদ্ধে মামলা ও দৈনিক কক্সবাজারবাণী হত্যার নানামুখী ষড়যন্ত্র শেষে কক্সবাজার শহরের সকল সম্মানিত হকার, কম্পিউটার অপারেটর, সাংবাদিক ও সম্পাদক ভাইদের বিভ্রান্ত করে আমি ও আপনাদের প্রিয় দৈনিক কক্সবাজারবাণীর বিরুদ্ধে উঠে পড়েছেন।
পাঠক, একারণে কক্সবাজারের কোন ছাপাখানা দৈনিক কক্সবাজারবাণী ছাপাচ্ছেন না তা বড় কথা নয়, একটি কাগজের দোকানেও কক্সবাজারবাণীকে ছাপানোর সরঞ্জাম কাগজ, প্লেইট, ট্রেসিং বিক্রি করছেন না। অতএব, আমি একে ১০ জনের জুলুমে বিপর্যস্ত হয়ে প্রিয় পাঠক এখন থেকে হয়তো আপনাদের প্রিয় এই দৈনিকটি আর প্রকাশ করতে পারব না। হে পাঠক, ১০ জনের অন্যায় শত্রুতায় হয়তো আমি আর আপনাদের কাছে নতুন কোন খবর পৌঁছাতেও পারব না। কারণ, গণমাধ্যমে মত প্রকাশের অবাধ স্বাধীনতা থাকলেও কক্সবাজারের কোন পত্রিকা আমাকে সেই সুযোগটিও দিচ্ছেন না। কেউ আমার একটি বিজ্ঞাপনও ছাপাচ্ছেন না। এমন শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে প্রিয় পাঠক, চরম একলা এই মানুষটির জন্য আপনারা দোয়া করবেন। ইচ্ছা ও অনিচ্ছাকৃতভাবে কোন অপরাধ করলে তাও পাঠক আমি আপনাদের কাছ থেকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। একই সাথে আমার মত একজন অসহায় মানুষকে বিনাকারণে বুঝে আর না বুঝে যারাই এত বড় জুলুমে লিপ্ত, আমি মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে তাদের জন্যও শুভ কামনা করি। তিনি যেন ইহ কিংবা পরকালে তাদের এর উপযুক্ত পুরস্কার দেন। 
প্রিয় পাঠক, তবে মনে রাখবেন আসলেই যদি আমি সত্যিকার সাংবাদিক ও ন্যায়ের পথে থাকি মহান সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয় আমাকে আবার আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিবেন। তখন সাময়িক এই প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে আবার প্রকাশিত হবে আপনাদের প্রিয় দৈনিক কক্সবাজারবাণী। বলব সবার কথা। বুঝে না বুঝে যারা আমাকে নিঃশেষ করে দিতে তৎপর সেদিন আমি তাদেরকেও ক্ষমা করে দিব। দোয়া করব আল্লাহ যেন সবাইকে ন্যায়ের পথে শান্তিতে রাখেন। ঋণী আমি ওই সমস্ত সম্মানিত সকল সাংবাদিক, পাঠক, হকার, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, বিজ্ঞাপন দাতা ও শুভানুধ্যায়ী  যারা এখনো কক্সবাজারবাণী ও আমাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। খোদা হাফেজ।


লেখক-
সম্পাদক ও প্রকাশক
দৈনিক কক্সবাজারবাণী
আঞ্চলিক প্রধান
দৈনিক আমাদের অর্থনীতি ও আমাদের সময় ডটকম
০১৭২৭ ৭৯৬০৭৯

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন