(ফলো আপ) মহেশখালীতে বন্দুক যুদ্ধে নিহতের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি

Update Time: 2011-12-28 23:16:17 
আব্দুর রাজ্জাক,মহেশখালী:

মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব কালা গাজির পাড়ায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় জোনাব আলী মেম্বার বাহিনী ও জালাল বাহিনীর  মধ্যে গত ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে সৃষ্ট বন্দুক যুদ্ধে নিহতের ঘটনার ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও  এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত এখনো থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে থানা পুলিশ বলছে মামলার বাদী এখনো পর্যন্ত থানায় না আসায় তারা মামলা নিতে পারছেনা। গতকাল গ্রেফতারকৃত ওসমান ও আকতারকে ৫৪ দন্ড বিধি দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
          জানা যায়,উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব কালাগাজী পাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় জোনাব আলী মেম্বার গ্রুপ এবং ছিদ্দিক আহাম্মদ এর পুত্র জালাল গ্রুপের  মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত ২৭ ডিসেম্বর  সকাল ১০ টায়  জালাল বাহিনী ও জানাব আলী মেম্বার বাহীনির মধ্যে তুমুল বন্দুক যুদ্ধ শুরু হয়। দীর্ঘক্ষন দুই  পক্ষের মধ্যে বন্দুক যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে হঠাৎ জালাল বাহিনীর লোকজনের  অস্ত্র বিকল হয়ে  পড়লে জালাল বাহিনীর লোকজন পিছু হটে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় জোনাব আলী মেম্বার বাহিনীর দেলোয়ারের নেতৃত্ব একদল অস্ত্রধারী গুলি করতে করতে কমান্ডো স্টাইলে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী জালাল নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ঢুকে পড়ে। তারা এখানে ঢুকেই প্রথমে বশীর আহমদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে সন্ত্রাসী জালালের বাড়িতে আগুন দেয়। এ সময় তারা উভয় বাড়িতে থাকা মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে এলাকাবাসী জানায়। পরে জোনাব আলী মেম্বারের বাহিনীর লোকজন আরও বেশ কয়েকটি পানের বরজ ও গরুর গোয়ালে আগুন দেয়। এবং শতাধিক সুপারী গাছ কেটে ফেলে। বাড়িতে আগুন দেয়ার পর হামিদা, মুন্নি নামের দুই কিশোরীকে সন্ত্রাসীরা বাড়ি থেকে টেনে বের করে নির্যাতন চালালে এতে বাড়ির অন্য মহিলারা বাধা দেয়। এসময় সন্ত্রাসীরা নুরুল আমির ওরফে বদের স্ত্রী ৫ সন্তানের জননী কালাখাতুনকে (৪০) গুলি করে। পরে ওই মহিলা পালিয়ে মৌলানা জালালের বাড়ির মুরগি রাখার ঘরে লুকিয়ে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে উপর্যুপরি গুলি করে হত্যা করে।গুলি বিদ্ধে নিহত কালা খাতুনের দেড় বছরে একটি দুগ্ধ সন্তান রয়েছে।  এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় সাকেরা বেগম ওরফে সিকু আকতার, তৈয়বা আখতার, মরিয়ম খাতুন, ওসমান, হামিদা, মুন্নি, পদ্মা খাতুন, নিলু বেগম, কাসেম, খদিজা আকতারসহ প্রায় ২৫ জন গুরুতর আহত হয় । আহতদের কে প্রথমে মহেশখালী  হাসপাতালে পরে ককসবাজার সহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ জানায় ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনা স্থল থেকে এই ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে হোয়ানক কালাগাজি পাড়া এলাকা থেকে  ওসমান (৩০), আকতার (৩২) কে গ্রেফতার করেছে এবং সন্ত্রাসীদের ব্যবহারকৃত ৫টি গুলির খোসা ও একটি তাজা খার্তুজ উদ্ধার করেছে এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে যে কোন র্মহুত্তে বড় ধরনের সংহিষ ঘটনা ঘঠার   আংশকা করা হচ্ছে।
 স্থানীয়দের সুত্রে জানাগেছে ,দুই সন্ত্রাসী দল দীর্ঘ দিন থেকে সরকারী পাহাড়ী  খাস জমি দখল,পানের বরজ চুরি ,গাছকাঠা,গরু-ছাগল লুঠ করার বিষয় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে  কয়েক বছর ধরে উভয় বাহিনীর মধ্যে দফায় দফায় সহিংস ঘটনায় নারী-শিশুসহ একাধিক ব্যক্তি হতাহত হয়। দু’বছর ধরে দুই বাহিনীর মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। গত কয়েকদিন আগে সন্ত্রাসী জোনাব আলী মেম্বারের ছেলে আবুল শামার নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী প্রতিপক্ষের পানের বরজে লুটপাট চালায়। এ সময় সন্ত্রাসী জালাল বাহিনীর ক্যাডাররা শীর্ষ সন্ত্রাসী আবুল শামাকে আটক করে ব্যাপক মারধর করে পাহাড়ে ফেলে দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করায়। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর ৩০-৩৫ জনের নামে মহেশখালী থানায় মামলা হয়। এ মামলায় নিরীহ লোকজনকে আসামি করা নিয়ে এলাকা ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গত এক বৎসর পূর্বে ১টি  গ্রুপ অপর একটি গ্রুপকে ঘায়েল করতে জন্নাতুল মাওয়া নামে একটি শিশু হত্যার স্বীকার হয়।
এব্যপারে মহেশখালী থানার অফিসার ইনর্চাজ রনজিত বড়–য়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান আমরা তাদেরকে বলার পরও এখনও পর্যন্ত খুন হওয়া মহিলা পক্ষের কোন আতœীয়স্বজন অথবা লোকজন থানায় মামলা করতে আসেনি। আসলে অবশ্যই মামলা রেকর্ড় করা হবে বলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন