মহেশখালীতে মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় চলছে লুটপাট ও নিয়োগ বাণিজ্য

ছৈয়দ মোস্তফা আলী, মহেশখালী
মহেশখালীর কালারমারছড়ায় মঈনুল ইসলাম সি:মাদ্রাসায় পরিচালনা কমিটির অজান্তে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অধ্যক্ষ কর্তৃক বির্তকিত লোকদের নিয়ে কমিটি গঠন করে প্রতিষ্টান কে বন্ধের উপক্রম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, অধ্যক্ষ মাওঃ ছলিম উল্লাহ বিভিন্ন ভাবে মাদ্রাসা নিয়ে ষড়যন্ত্র, পারিবারিক ভাবে কমিটি গঠন, মাদ্রাসার জায়গা বিক্রি, নগদ তহবিল আত্মসাৎ ও বাগানের গাছ বিক্রি সহ লাগামহীন অনিয়মের অভিযোগ স্থানীয়দের। মাদ্রায় র্দীগদিন যাবত বিভিন্ন স্থরে ১৪ জন শিক্ষকের পদ শূন্য থাকলেও নিয়োগ বাণিজ্য করার জন্য নানা অজুহাতে সময় ক্ষেপন করে সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন অধ্যক্ষ। বর্তমানে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নামে আইনের তোয়াক্কা না করে অধ্যক্ষের পারিবারিক পকেট কমিটি গঠন করে শুরু করেছেন নিয়ম বর্হিভুত নিয়োগ বাণিজ্য, হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায়  সরকারী প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলে কৌশলে অনিয়ম করে পার পেয়ে যাচ্ছেন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের বিগত ১৭/০৬/০৯ ইং তারিখের প্রজ্ঞাপনের ২ ধারার ”জ, উপ ধারায় দাখিল বা আলিম স্তরের বেসরকারী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকারী কোন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হতে গেলে মাদ্রাসার ব্যাংক হিসাব নং এ ৬ লাখ টাকা নগদ বা চেকের মাধ্যমে কিংবা রেজেষ্ট্রিকৃত দলিলের মাধ্যমে সমমুল্যের স্থাবর সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার অনুকুলে দান করার বিধান থাকলেও নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে নিজ পুত্র মুবিনুল হককে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য করিয়েছেন। আরো জানা যায়, সরকারী নীতিমালা অনুসারে দাখিল মাদ্রাসায় ৩ জন কর্মচারী সহ ১৭ শিক্ষক নিয়োগের বিধান রয়েছে পাশাপাশি আলিম মাদ্রাসায় শিক্ষক আরো বেশী থাকার কথা এরমধ্যে উক্ত মাদ্রাসায় ২জন কর্মচারী সহ ১১ জন শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছে যারদ্বারা লেখা পড়ার দারুন বিগ্ন ঘটেছে, এবং অধ্যক্ষ যে মোটরযান ব্যবহার করে তাও অত্র প্রতিষ্টানের সহকারী মৌ:কামালের এবং সম্প্রতি মাদ্রাসায় বার্ষিক সভায় উত্তোলনকৃত নগদ বাকী ২ লক্ষ ১৫ হাজার, চাল প্রায় ৭০ মন চাল সহ যাবতীয় জিনিষ পত্র তুলে নিজের পকেটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া গত ৫ মে/১৩ ইং তারিখ দু’জন শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় কক্সবাজার সরকারী কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সলিমুর রহমান সরকারী প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার সময় অনিয়ম প্রমানীত হওয়ায় তিনি ঐ দিন এবতেদায়ী শাখার জুনিয়র শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে দেন। কিন্তু দাখিল শাখার সহকারী মৌলানা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও তাতেও জঘন্য অনিয়ম হয়েছে বলে দাবী করেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের সুযোগ বঞ্চিত কায়রুল আমিন। জানা যায় কামাল হোছাইন নামের ্এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষ ছলিম উল্লাহ নুরুল আবছার ও দেলোয়ার হোছাইন নামের দুু’জন নামে মাত্র পরীক্ষার্থীর ব্যবস্থা করেন। এরই মাঝে সহকারী মৌলানা নিয়োগের শেষ পর্যায়ে এসে বের হচ্ছে অনিয়মের কল্পকাহিনী। সংশিষ্ট সুত্রে জানা যায় সহকারী মৌলানা নিয়োগ পরীক্ষায় ৪ জন পরীক্ষার্থী থাকলেও এরই মধ্যে কায়রুল আমিন নামের এক ব্যক্তির প্রবেশ পত্র নিয়ে জাকের হোছাইন নামের এক  ভুয়া পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন  করেন, যে বর্তমানে অত্র মাদ্রাসার কর্মরত শিক্ষক। আরো জানা যায় সোলতান আহমদ নামের এক ব্যক্তি ্মাদ্রাসার নামে (৩০) শতক জায়গা দান করেন। উক্ত জায়গা ১৯৯২ সালে ধলঘাট থেকে আগত হাজী আবু জাফর, হাজী গুনু বহদ্দারের নিকট বিক্রি করে দেন মাদ্রাসার জায়গা অধ্যক্ষ মাওঃ ছলিম উল্লাহ । এছাড়া মাদ্রাসার দু শিক্ষক মাওঃ মফিজুর রহমান, মাওঃ মোহাম্মদ হোছাইন ও ধলঘাট থেকে আগত মৃত আবু ছৈয়দকে মাদ্রাসার প্রায় ৪ কানি জায়গা বিক্রিসহ ইতোপূর্বে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ সমস্ত অনিয়মের মূলে রয়েছে তৎকালীন সময়ের একান্ত আস্তাবাজন ব্যক্তিদের নিয়ে তথাকথিত  কমিটির নামে পকেট কমিটি এ ধরনের পকেট কমিটি করে মাদ্রাসার ধন সম্পদ আত্মসাতে রের্কড সৃষ্টিকারী মাওঃ ছলিম উল্লাহ আবারো বিভিন্ন কলাকৌশলে গোঁপনে কমিটি গঠন করে তার ছেলেকে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য করে বেপরোয়াভাবে মাদ্রাসার সম্পদ আত্মসাত করে যাচ্ছেন। মেয়াদ উর্ত্তীন কমিটির দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কতৃক স্বাক্ষরিত অধ্যক্ষের অনিয়ম ও আত্মসাতের বিভিন্ন প্রমান পত্রসহ নির্বাচিত কমিটির দাবীতে এক বছর পূর্বে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিলেও ফাইল বন্দি হয়ে পড়ে অভিযোগ পত্রটি । দীর্ঘদিন যাবৎ মাদ্রাসায় গুরুত্বপূর্ন গণিত বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয়ের ১৪ জন শিক্ষকের পদশূন্য থাকলে নিয়োগ বাণিজ্য করার জন্য সময়ের অপেক্ষায় থেকে বর্তমানে অনিয়ম  তান্ত্রিকভাবে কমিটির নামে পারিবারিক আত্মীয় স্বজন নিয়ে পকেট কমিটি গঠন করে টাকার বিনিময়ে অযোগ্য, অদক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া নিয়ে চলছে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ বাণিজ্য।অতীতে বিভিন্ন সময় কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে অনিয়ম করেও পার পেয়ে যাওয়ায় নিয়ম বর্হিভূতভাবে মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি,ও নামে বেনামে টাকা আদায় করেন বলে জানান অভিভাবক সমাজ। মাদ্রসার বর্তমান কমিটি,শিক্ষক নিয়োগ, জায়গা বিক্রি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে অধ্যক্ষ মাওঃ ছলিম উল্লাহ সাথে যোগাযোগ করলে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে পরিনাম ভাল হবেনা বলে জানান। পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি বশির আহমদ মেম্বার জানান, তিনি (অধ্যক্ষ) মাদ্রাসার জায়গা বিক্রি থেকে শুরু করে যাবতীয় সম্পদ আত্মসাত করে  মাদ্রাসাকে অনিয়মের আখড়ায় পরিনত করেছেন। অধ্যক্ষ কর্তৃক মাদ্রাসার জায়গা বিক্রির বিষয় নিয়ে পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ারুল নাছের জানান, জায়গা বিক্রির বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে অনিয়মের অভিযোগ থাকায় এবতেদায়ী শাখার শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করার সত্যতা স্বীকার করেন। এছাড়া কাইরুল আমিনের প্রবেশ পত্র নিয়ে জাকের হোছাইনের পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের বিষয়ে খোজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান। কমিটির সাবেক দাতা সদস্য সেলিম চৌধুরী জানান, অধ্যক্ষ বর্তমানে যে পকেট কমিটি গঠন করেছে তা অব্যাহত থাকলে অল্প দিনের মধ্যে মাদ্রাসাকেও তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাবী করে বসবেন। নাম  প্রকাশে অনিশ্চুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, মাদ্রাসা থেকে আত্মসাতকৃত টাকা দিয়ে সে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করে যাচ্ছেন। সুষ্ট তদন্তে বিষয়টি প্রমানীত হবে এমনটাই দাবী শিক্ষানুরাগিদের। মাদ্রাসা নিয়ে অধ্যক্ষের অপতৎপতায় এলাকার শিক্ষানুরাগী ও সর্বস্তরের মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন