জেলা সদর হাসপাতালে রোগীদের খাবার নিয়ে অনিয়ম!

নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজার জেলা হাসপাতালে রোগীদের খাবার সরবরাহে অনিয়ম চলছে। খাদ্য তালিকায় সপ্তাহে অন্তত ৩দিন মাছ ও ৩দিন মাংস দেয়ার নিয়ম থাকলেও দেয়া হচ্ছে পাঙ্গাস মাছ। নিয়ম রয়েছে এক টুকরো মাছের ওজন কমপক্ষে ৪২২ গ্রাম হওয়ার কথা।
সেখানে দেয়া হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ গ্রামের এক টুকরো পাঙ্গাসের পোনা মাছ, সঙ্গে এক টুকরা আলু। দুপুর রাতে একই খাবার দেয়া হচ্ছে। আর সকালে দেয়া হচ্ছে ৫ টাকা দামের একটি বনরুটি, সঙ্গে একটি কলা। গত শুক্রবার দিনব্যাপী  হাসপাতালে গিয়ে এমনচিত্র দেখা গেছে। অথচ একজন রোগীর জন্য উন্নত মানের ২৫০ গ্রামের ওজনের পাউরুটি ও চিনির জন্য ঠিকাদারকে সরকারীভাবে পরিশোধ করা হচ্ছে ২৫ টাকা ৪০ পয়সা। এছাড়া দুপুর কিংবা রাতের খাবারের জন্য একজন রোগীর জন্য দেয়া হচ্ছে এক শ’ ২৫ টাকা। আর শুধুমাত্র রোগী প্রতি মাছের মূল্য নির্ধারন করে দেয়া হয়েছে ৬৯ টাকা ৬০ পয়সা। হাসপাতালে এমন ফ্রি-স্টাইলের নিম্নমানের খাবার রোগীদের সরবরাহ চলছে। এছাড়া কোন সময় রোগীদেরকে পথ্য সরবরাহ করা হয় না বলেও অভিযোগ রয়েছে রোগীদের। ঠিকাদারের এসব খাবার একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার এবং একজন নার্স বুঝে রাখছেন সরকারী নিয়ম উপেক্ষা করে। তাদের সঙ্গে কথা বললে অসহায়ের মতো ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকছেন। কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি। বয়োবৃদ্ধা রোগী সাফিয়া খাতুন জানান, হাতের ব্যাথার জন্য তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার উচ্চমাত্রার ডায়বেটিক। অথচ তাকে বিকল্প খাদ্য সরবরাহের নিয়ম থাকলেও তা মানা হয়নি। বরং তাকেও দেয়া হচ্ছে নিম্নমানের ৫ টাকা দামের একটি পাউরুটি ও কলা। বাধ্য হয়ে তিনি বাইরে থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন। একই অবস্থা অন্য রোগীদের। একাধিক রোগী জানান, দুপুরে ও রাতে ছোট্ট এক টুকরা পাঙ্গাস মাছ ও ডিম  ছাড়া গত ৫ দিনে আর কিছুই দেয়া হয় নি। নিম্নমানের চালের ভাত দেয়া হচ্ছে। অনেকে দুপুরে হোটেল থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন। আর মাংসতো মাসেও একবার দেয়া হয়না। হাসপাতালে রোগীদের রান্নার কাজে নিয়োজিত নাম প্রকাশ না করার শর্তে  জানান, গত বুধবার তিনি ২০০ জন রোগীর জন্য শুধু পাঙ্গাস মাছ ও আলু রান্না করছেন। গত ৫দিন থেকে শুধুই ছোট চাষের পাঙ্গাস পোনা মাছই দেয়া হচ্ছে।এ বিষয়ে জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সুলতান আহমদ সিরাজী জানিয়েছেন,রোগীদের বরাদ্দকৃত খাবার অত্যন্ত নি¤œমানের। আর চাষের পাঙ্গাস মাছ প্রতিদিন সরবরাহ করায় রোগীরা বাইরে থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন। এ ব্যাপারে তিনি ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন