নতুন বাজেটে অগ্রাধিকার পাচ্ছে জ্বালানি ও যোগাযোগ

এ কে আজাদ : 
আগামীকাল সোমবার নবম জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এটি বর্তমান সরকারের শেষ বাজেট অধিবেশন। আসন্ন এই বাজেটে পদ্মা সেতুসহ পরিবহন, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, কৃষি ও পল্লী উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।


একই সঙ্গে সরকারের আয় বাড়াতে বিভিন্ন টোল, জরিমানা ও সরকারি সেবার ফি প্রায় দ্বিগুন করা হচ্ছে। কমিয়ে আনা হচ্ছে জ্বালানি খাতের ভর্তুকি। আর অপরিবর্তিত থাকছে প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া সব ভাতার পরিমাণ। তবে নতুনত্ব থাকছে জেলা বাজেটে।

এবারের বাজেটে পদ্মা সেতুর জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৬ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। পদ্মা সেতু এবং রেল ও সড়ক যোগাযোগসহ পরিবহন খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা, যা সর্বোচ্চ।

এরপরই অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ খাতকে। এ খাতে বরাদ্দ থাকছে ৯ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। আর জ্বালানি খাতের ভর্তুকি ১৩ হাজার কোটি টাকা থেকে কমিয়ে তা করা হয়েছে ৭ হাজার কোটি টাকা।

জ্বালানি খাতে ভর্তুকি কমালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রভাব পড়বে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, এতে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।

যুক্তি দেখিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে যে বিদ্যুতের অর্ডার দিয়েছে, সেগুলো আসলে আগামী ২০১৭ সালের মধ্যে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন দ্বিগুন হবে।

এদিকে সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সরকারের এই সময়ে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধাšত্ম সঠিক নয়।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু দুই বছর পরও করা যাবে। এর আগে অন্যান্য অবকাঠামোগত সমস্যা সমাধান করা উচিত। তা করা হলে পদ্মা সেতু ছাড়াই ৭ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়ানো সম্ভব।

নতুন এ বাজেটে প্রতিবন্ধী ভাতা ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হচ্ছে। তবে অন্য কোনো খাতে ভাতার পরিমাণ না বাড়িয়ে অপরিবর্তিত রাখা হচ্ছে। তবে বাজেটে আরো বেশি সংখ্যক মানুষকে ভাতা দেয়ার উদ্যোগ রাখা হচ্ছে। নিতপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির চাপ সহনীয় রাখতে এবারের অধিবেশনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। পুঁজিবাজারের জন্য আলাদা তহবিলও থাকাতে পারে।

তবে সরকারের আয় বাড়াতে করযোগ্য ও কর ফাঁকিবাজদের ওপর আগামী অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে থাকছে বিশেষ নরজাদারি। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশাসনিক ফি, টোল, লেভি, সেবার ফি ও জরিমানা বাড়িয়ে ৫০ থেকে ১০০ ভাগ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে এই বাজেটে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘যারা প্রত্যক্ষ কর দাতা আছে তাদের অনেকেই কর দিচ্ছে না। বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দেয়া দরকার। অথচ সরকার তা না করে পরোক্ষ করের দিকে বেশি নজর দেয়। কারণ, ভ্যাট, ফি ইত্যাদি বাড়ানো সহজ উপায়।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন