ব্যবস্থাপনা কমিটির অনৈতিক দাপট

কিশলয় প্রধান শিক্ষক লাঞ্চিত, অপসারণের চেষ্টা

নুরুল আমিন হেলালী
ককসবাজার জেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ খুটাখালি কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলামকে অপসারনের চেষ্টা ও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, ১ বছর পূর্বে  নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক বাহাদুর হককে টাকার বিনিময়ে পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ম্যানেজিং কমিটি ওই অপসারণ চেষ্টা চালিয়েছে।
অভিভাবক ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সূত্রে প্রকাশ, বেশ কিছুদিন ধরে প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির মধ্যে নানা বিষয়ে মত বিরোধ চলে আসছে। ওই সূত্র ধরে ব্যবস্থাপনা কমিটি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ইতোপূর্বে  প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে  উপজেলা নির্বাহী অফিসার, চকরিয়া বরাবর লিখিত অনিয়মের  অভিযোগ দায়ের করে যা এখনো তদন্তাধীন।
 প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অনিয়মের কোন অভিযোগ নেই। নিয়মনীতিতে অজ্ঞ ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্য অর্থের মোহে পড়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করার চক্রান্তের অংশ হিসেবে আমাকে গত ১৩ জুন শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জোর পুর্বক পদত্যাগপত্র নেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। তিনি আরো বলেন, ‘‘আমি এদের অপকর্মের  বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি, প্রশাসনের নিকট ন্যায় বিচার দাবী করছি।” অন্যদিকে ম্যানেজিং কমিটির ভাষ্য, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির যথেষ্ট অভিযোগ রয়েছে। 
জানা যায়, গত ১৩ জুন বৃহস্পতিবার ব্যবস্থপনা কমিটির নিয়মিত সভায় কমিটির সদস্যবৃন্দ জোরপূর্বক প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগপত্র নেয়ার চেষ্টা করে। এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার পাশাপাশি স্কুলের চাবী ও দাপ্তরিক খাতাপত্র ছিনিয়ে নেয়।
ওই সংঘটিত ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং বিদ্যালয়ের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে উঠে। 
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, কমিটির সুবিধাভোগী ও অবৈধভাবে নিয়োগকৃত কর্মচারী ও সক্রিয় জামায়াত ক্যাডার সেলিমও বিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নেপথ্যে কাজ করছে। হোষ্টেল সুপার পীযুষ প্রধান শিক্ষককে ডিঙ্গিয়ে এবং কমিটির কতিপয় সদস্যদের মাসিক মাসোহারা দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষককে অপসারনের চক্রান্ত হিসেবে বিএনপি জামায়াত জোটের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। ওই চক্রটির রক্ষাকবচ হিসেবে রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা। অভিভাবক কামরুল হাসান, শহিদুল ইসলাম, আবদু সালামসহ অনেকেই জানান, আমরা চাই আমাদের সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যত ও বিদ্যালয়ে সুশিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থপনা কমিটির একযোগে কাজ করবে। সূত্রে আরো জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল সভাপতি অবৈধভাবে যে অভিযোগসমূহ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে আবেদন করেন তাতে তিনি নিজেই উল্লেখ করেন প্রতিষ্ঠান ও ছাত্রাবাসের উদ্ধৃত্ত আয় হতে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয় ও ছাত্রাবাসের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। অতীতে গাড়ি বিক্রয়ের কথা উল্লেখ করে প্রধান শিক্ষকের অসহযোগিতার কারনে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়ার সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির মধ্যে বিবদমান সমস্যা নিরসনে প্রশাসনের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবী করেছে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন