ঈদগাঁওতে কবরস্থানের জায়গা দখল নিতে ভাংচুরের অভিযোগ


নুরুল আজিম: কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও ইউনিয়নের জঙ্গল মাছুয়াখালী মুরাপাড়ার শতবছরের প্রাচীন কবরস্থানের জায়গা জবর দখলে নিতে গভীর রাতে চিহ্নিত ভূমিদস্যু কর্তৃক গাছের চারা উপড়ে ফেলে সীমানা দেয়ালসহ ঘেরাবেড়া ভাংচুরের  অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১৯ জুলাই দিবাগত গভীর রাতে ঘটে এ ঘটনা। সরেজমিনে জানা যায়, বর্ণিত এলাকার বন বিভাগের অধীন কিছু পিএফ জায়গাকে কবরস্থান হিসাবে শতবছর পূর্ব থেকে ব্যবহার করে আসছে অত্র এলাকায় বসবাসরত লোকজন। বিগত কয়েকবছর পূর্বে হঠাৎ কবরস্থান পাহাড়ের দক্ষিণ পার্শ্বে বসত ঘর নির্মাণ করে সৌদি প্রবাসী আবু ছৈয়দ । এরপর থেকে তার স্ত্রী রহিমা ও পুত্র খালেদ বসত ভিটার সাথে লাগোয়া কবরস্থানের জায়গা অবৈধ দখলে নিতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে। এক পর্যায়ে দক্ষিণ দিকে বেশ কিছু জায়গা দখলে নিয়ে তাতে মুরগীর ফার্ম নির্মাণ করে। এ নিয়ে কবরস্থান কমিটিও এলাকাবাসীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে তাদের চরম বিরোধ চলে আসছে। সম্প্রতি এ বিরোধ চরম আকার ধারণ করলে উভয়পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ মামলা দায়ের করে। কবরস্থান কমিটি নিরুপায় হয়ে কবরস্থানটি রক্ষার দাবীতে গত ১০ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ১৮ জুন জেলা প্রশাসক, স্থানীয় বন বিভাগ, চেয়ারম্যান ও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রসহ কয়েকটি বিভাগে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দেয়া নির্দেশ মোতাবেক সম্প্রতি বদলী হওয়া ঈদগাঁও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক কবরস্থান কমিটির পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করে। বিগত ২/৩ মাস পূর্বে স্থানীয় মেহেরঘোনা রেঞ্জ কর্মকর্তা নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে বন বিভাগের লোকজন দখলদারদের দেয়া ঘেরাবেড়া উচ্ছেদ করে তাতে সাইনবোর্ড স্থাপন করে পুরো কবরস্থানের পাহাড়ে গাছের চারা রোপন করে এ বনায়ন রক্ষার দায়িত্ব অর্পন করে কবরস্থান কমিটির নিকট। কিন্তু পরে ওই ভূমিদস্যুরা আবারও রাতের আধাঁরে তা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। এ নিয়ে উভয়পক্ষ একাধিক অভিযোগ দায়ের করে। এক পর্যায়ে এলাকাবাসীর বাঁধার মুখে জবর দখলে ব্যর্থ হয়ে ভূমিদস্যু খালেদ বাদী হয়ে তার মাকে নির্যাতন করেছে মর্মে কবরস্থান পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দায়ের করেছে। পরে এলাকাবাসীর দাবীর মুখে বন বিভাগ আবারও গাছের চারা রোপন করে তাতে ঘেরাবেড়া দিয়ে বনায়ন শুরু করে। এ অবস্থায় গত শুক্রবার গভীর রাতে ভূমিদস্যু চক্রের প্রধান প্রবাসীর পুত্র খালেদ হোসেনের নেতৃত্বে আব্বাস, শফি, শুক্কুর, সুলতান, আলম ও তৈয়মসহ ১০/১৫ জনের দল ফের কবরস্থানের পশ্চিম পার্শ্বের পাকা দেয়াল, ঘেরাবেড়া ভাংচুরসহ সহস্রাধিক গাছের চারা উপড়ে ফেলে অর্ধ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করেছে বলে কবরস্থান কমিটি ও এলাকাবাসী সংবাদ কর্মীদের জানিয়েছে। এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দাবী কবরস্থানের মত পবিত্র জায়গা নিয়ে চলছে নানা রকম বাণিজ্য । তাদের  প্রশ্ন বন বিভাগ কর্তৃক বার বার বনায়নের জন্য রোপিত চারা উপড়ে ফেলে জায়গা দখল চেষ্টার পরও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা না করায় জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। অপর দিকে কার ইশারায় পরিবারটি  সহস্রাধিক এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে কবরস্থানের জায়গা নিয়ে কিভাবে একের পর এক মামলা হামলা চালিয়ে যাওয়ার দুঃসাহস দেখাচ্ছে তা রীতিমত অবিশ্বাস্য বলে তারা ক্ষোভের সাথে জানিয়েছে। এলাকার লোকজন শতবছরের প্রাচীন এ পবিত্র কবরস্থানটি ভূমিদস্যুদের কবল থেকে রক্ষা করতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে স্থানীয়সহ উর্ধ্বতন প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।