উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান’র মুক্তি লাভ

বিশেষ প্রতিবেদক:
উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর এডভোকেট একেএম শাহজালাল চৌধুরী মুক্তি পেয়েছেন। আজ বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। আদালত সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুর ১২টি বৌদ্ধ বিহারে এবং পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর উখিয়ার ৬টি বৌদ্ধ বিহারে হামলা ও ভাংচুরের ঘটে। এসব ঘটনায় মোট ১৯টি মামলা রুজু করা হয়। এর মধ্যে উখিয়া পরিষদ চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর এডভোকেট একেএম শাহজালাল চৌধুরীকে দীপাংকুর বৌদ্ধ বিহার ভাংচুর মামলায় এজাহারনামীয় আসামী করা হয়। মামলার আসামী হওয়ার পর তিনি দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। পরে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে এলে গত ১৭ জানুয়ারী রাতে পুলিশ তাকে অন্য মামলায় গ্রেফতার করে। বর্তমানে তিনি উখিয়া ও রামুর ছয়টি মামলায় অভিযুক্ত রয়েছেন।
জামায়াত নেতার আইনজীবী এডভোকেট আবদুল মান্নান জানান, ছয়টি মামলার সবকটিতেই জামিন পেয়েছেন শাহজালাল চৌধুরী। সর্বশেষ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রামুর মামলায় তিনি জামিন পান। তবে জামিননামা কারাগারে পৌঁছাতে দেরী হওয়ায় তাকে মুক্তি দেয়া হয়নি। বুধবার দুপুরে তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
জানা যায়, মুক্তি পাওয়ার পর শাহজালাল চৌধুরী কক্সবাজার শহর থেকে উখিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।
শহিদুল ইসলাম, উখিয়া জানিয়েছেন, দেশব্যাপী জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের ডাকা হরতাল ভঙ্গ করে জামায়াত ও বিএনপি নেতৃবৃন্দরা গাড়ীর বহর নিয়ে কক্সবাজার থেকে উখিয়া আসে। বুধবার দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট একেএম শাহজালাল চৌধুরীকে জেলা কারাগার থেকে উখিয়ায় নিজ বাড়ীতে গাড়ী বহর নিয়ে নেতা-কর্মীরা নিয়ে আসে। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৫ মাস কারাভোগের পর উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট একেএম শাহজালাল চৌধুরী গতকাল বুধবার কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে রামু ও উখিয়ায় বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার ৬টি মামলায় সবকটি মামলা থেকে মঙ্গলবার জামিন লাভ করেন।
তার জামিনে মুক্তির ঘটনায় উখিয়া-টেকনাফে জামায়াত-বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। উল্লেখ্য উক্ত জামায়াত নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রামু ও ৩০ সেপ্টেম্বর উখিয়ার বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ঘটনায় একাধিক মামলার আসামী হয়ে গত ১৭ জানুয়ারী উখিয়ার রাজাপালংস্থ নিজ বাড়ী থেকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল। দীর্ঘ আইনী লড়াইয়ের পর অবশেষে তিনি সব মামলা থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে গতকাল জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। উখিয়ার রাজাপালংস্থ বাড়ী ফেরার পথে কোটবাজারে জামায়াত-বিএনপি নেতা-কর্মীরা তাকে ব্যাপক ভাবে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায়। ওই সময় উপজেলা চেয়ারম্যান নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে অভিভাদন জানান।
ওই গাড়ী বহরে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহ জাহান চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার জাহান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবুল ফজল, সেক্রেটারী মাওলানা সুলতান আহমদ, সাবেক শিবির নেতা সাংবাদিক হুমায়ুন কবির জুশান, সহ-সভাপতি নুরুল আলম ও প্রধান সমন্বয়কারী নুরুল কবির মাহমুদসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরীর আইনজীবি আবদুল মান্নান জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানকে উখিয়া-টেকনাফের আওয়ামী লীগের কিছু নেতার ইন্ধনে বৌদ্ধ মন্দির ভাংচুরের মামলায় আসামী করে হয়রানী করছে। আগামীতে এ জবাব উখিয়া-টেকনাফবাসী দিবেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর উখিয়ার বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দির ও বৌদ্ধ পল্লীতে তান্ডবের ঘটনায় মন্দির পরিচালনা কমিটি ও উখিয়া থানা পুলিশ ৯মাস পরেও মামলার চার্জসীট আদালতে প্রেরণ করতে পারেনি।
উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আজ বৃহস্পতিবার এসব মামলার চার্জসীট প্রদানের বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।