রামু-উখিয়া-টেকনাফে ইটভাটাঃ বন অঞ্চলের কৃষি জমি ধ্বংসের পথে

নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজারের ইট ভাটাগুলোতে নীতিমালা উপেক্ষা করে ব্যাপকহারে বন অঞ্চলের কাঠ, মাটি ও ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে ইট ভাটায় সরবরাহ দিয়ে পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে অনৈতিক বানিজ্য।
যার ফলে কক্সবাজার জেলার বিশেষ করে দক্ষিন বন বিভাগের সংরক্ষিত বন অঞ্চল ও পাহাড় নিধন অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে পরিবেশের মারাতœক হুমকির সম্মূখিন উখিয়া ,টেকনাফ ও রামু ইটভাটা এলাকাগুলো। কক্সবাজারে অসংখ্য ইট ভাটায় জমির টপ সয়েল কেটে ইট ভাটায় সরবরাহের ফলে বিলুপ্তি হচ্ছে, কৃষি, ফসলী জমি।  হ্রাস পারছে কৃষি ও ফসলী জমির পরিমাণ। ইট ভাটা গুলোর কালো ধোয়াই পরিবেশে মারাতœক হুমকির মূখে ধাবিত হচ্ছে। সরজমিন গিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি সময়ে উখিয়া উপজেলার পার্শ্ববর্তী রামু উপজেলার খুনিয়া পালং উখিয়া উপজেলার থাইংখালী, ভালুকিয়াপালং, সাবেক রুমখাঁ হলদিয়াপালং এলাকায় নিম্নত্ত ইট ভাটা গুলোতে কয়লার পরিবর্তে দেদারচ্ছে, পুড়ানো হচ্ছে সংরক্ষিত বন অঞ্চলের কাঠ ও বন বিভাগের পাহাড়ের মাটি ও কৃষি জমির  উর্ব্বর মাটি ব্যবহারের মাধ্যমে বন পরিবেশ, কৃষি ফসলী সহ সার্বিক ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে চলছে। উল্লেখিত ইট ভাটা গুলো নাম মাত্র নীতিমালা দেখিয়ে অনুমতি নিলেও উক্ত ইট ভাটা গুলোতে বাস্তব কর্ম-কান্ডের সাথে সম্পূর্ণ নীতিমালা বর্হিভূত কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়েছে। দেখা গেছে, উক্ত ইট ভাটা গুলোর দাগ খতিয়ান ও জায়গার কাগজ পত্র কলমে ঠিক থাকলেও মূলত অধিকাংশ ইট ভাটাগুলো বন অঞ্চলের ভিতর ফসলী জমির উপর জনবহুল জনগোষ্ঠীর এলাকায় স্থাপিত। উক্ত ইট ভাটাগুলোতে ২০/২৫ টির মত ট্রাক, পিকআপ, ডাম্পার, গাড়ী দিয়ে কৃষি জমির উপরী ভাগের জমির মাটি, বনাঞ্চলের পাহাড়ী মাটি, বনাঞ্চলের কাঠ নির্বিঘেœ দিবা-রাত্রি ইট ভাটা সরবরাহ করে যাচ্ছে। জমির মালিকের অসচেনতা অভাবকে কাজে লাগিয়ে ইট ভাটার মালিকগণ অল্প টাকা দিয়ে জমির উপরি ভাগের মাটি কেটে ইট ভাটায় সরবরাহ করতে দেখা গেছে। যার ফলে এক দিকে সাধারণ গরীব কৃষক প্রতারিত হচ্ছে, অন্যদিকে উক্ত কৃষি জমিগুলো দ্রুত হারিয়ে ফেলছে উর্ব্বরত শক্তি, বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশের। এভাবে জমির উর্ব্বরতা কেটে নেওয়ার ফলে জমির ধরণও পাল্টে যাচ্ছে। জমিগুলো হয়ে যাচ্ছে নিচু এবং ফসল উৎপাদনে ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে ফেলছে। এই ভয়াবহতার ব্যাপারে স্থানীয় লোকজন জানান, স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগের সাথে, আমলাদের সাথে ইট ভাটা মালিকের সাথে আতাত বা অনেকের সরকারী দলের লোকজন হওয়ায় পরিবেশের মারাতœক ক্ষতি সাধন করে চললেও কোন প্রশাসনের নজরদারী বা কোন রকম তৎপরতা নেই বললেই চলে। অপরদিকে বন পরিবেশ অধিদপ্তর যাচাই বাচাই না করে ঢালাও ভাবে ইট ভাটা নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার কারনে কক্সবাজার জেলার ভবিষ্যৎ পরিবেশ আরও মারাতœক ঝুকিতে পড়বে বলে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিমত। ২০০৮(৩) -চ ধারা মতে সংরক্ষিত হুকুম দখল বা অধিক গ্রহণকৃত বা সরকারের নিকট ন্যস্ত বন অঞ্চল আবাসিক এলাকা ফসলের বা ফলের বাগান হতে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে ইট ভাটা নির্মাণ বে-আইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এতে এই আইন অমান্যকারীকে ৫০হাজার টাকা জরিমানা ও ৬মাস জেল উভয় প্রকার বিধান রয়েছে। অথচ উল্লেখিত নিমিত্ত ইট ভাটাগুলোর মালিকেরা এই আইনের কোন প্রকার তোয়াক্কাও করছে না। এছাড়াও ইট ভাটায় ১২০ ফিট উচ্চতা সম্পন্ন ফিল্টার যুক্ত চিমনী লাগানোর নির্দেশ থাকলেও উক্ত ইট ভাটাগুলোতে তা মানা হচ্ছে না। এ সমস্ত ইট ভাটা গুলোর মধ্যে রাবেতা এলাকার মেসার্স এমআরসি ব্রিকস সহ অর্ধশতাধিক ইট ভাটা।