রূপকথা বা উপকথায় বুদ্ধিমান কোনো প্রণীর কথা এলে শিয়াল পন্ডিতের নামটিই আসে সবার আগে। কিন্তু বিজ্ঞানীদের চোখে পন্ডিতমশাই এতটা বুদ্ধিমান না, তাই আমাদের এ তালিকায় তার নাম নাই।
আছে তার চেয়ে অনেক বেশি বুদ্ধিমান প্রাণীর নাম।
মানুষ এবং শিম্পাঞ্জির ডিএনএ(উঘঅ) এর মধ্যে ৯৪ ভাগ মিল আছে। অবিশ্বাস্য হলেও বিজ্ঞান এ কথা প্রমাণ করেছে। যখনই কোনো প্রাণী মানুষের মতো আচরণ শিখে বা প্রদর্শন করে তখন আমরা আশ্চর্য হয়ে তা উপভোগ করি। সাধারণত এসব প্রাণীকেই আমরা স্মার্ট বলে থাকি। শিম্পাঞ্জিরা একটি উচ্চমানের সমাজে বাস করে। তারা সুন্দর সূর্যান্ত উপভোগ করতে পারে। একজন সঙ্গী মারা গেলে শোক এবং ভালোবাসা প্রকাশ করে। মানুষের মতো তারা ভাষা শিখতে না পারলেও সহজেই ভাবের আদান-প্রদান করতে পারে।
অক্টোপাস: প্রাণীদের মধ্যে অক্টোপাস সবচেয়ে বুদ্ধিমান এবং স্মার্ট। তারা ক্ষণস্থায়ী এবং দীর্ঘস্থায়ী দু ধরনের স্মৃতি ধারণ করে রাখতে পারে। এমনকি তারা জলের ভেতর গোলকধাঁধা থেকেও বের হয়ে আসতে পারে একুইরিয়াম থেকে বের হওয়ার মতো করে।
অক্টোপাস অনেক সময় দুষ্টুমি করে জেলেদের নৌকা আটকে দেয়। এমনকি তারা কাঁকড়ার খোলস ছাড়িয়ে তাদের মাংস খেয়ে উদরপূর্তি করতে পারে। জার খোলার ব্যবস্থাও এ প্রাণীর জানা আছে।
হাতি: চার হাজার বছর আগে থেকে মানুষ হাতিকে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। মানুষ তাদের শক্তি এবং বুদ্ধি ব্যবহার করেছে উৎপাদনমুখী কাজে এবং যুদ্ধে। আর বিনোদন-প্রাণী হিসেবে হাতির খ্যাতি তো আছেই। ইদানীং অনেক হাতিকে আঁকার প্রশিক্ষণ দিয়েও সফল হয়েছেন অনেকে। পরিতাপের বিষয়, সারা বিশ্বে বুনো হাতি নিধনের যে হার দেখা যায় তাতে আফ্রিকান হাতি ১৫ বছরের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
কাক : পাখিদের মধ্যে বুদ্ধিমান পাখি হিসেবে কাকের খ্যাতির কথা সবার জনা। কাক চতুর প্রাণী শিম্পাঞ্জি ও গরিলার মতো নিজের সমস্যা নিজেই সমাধান করতে পারে। কাকের আইকিউ স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন মানুষ, বানর, বনমানুষ ইত্যাদির কাছাকাছি এবং তাদের আচরণের সাথেও বেশ মিল। এরা খাদ্য পাওয়ার জন্য বিভিন্ন উপাদান বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারে।
ছোটবেলায় গল্পে পড়া কলস থেকে কাকের পানি খাওয়ার কথা সবার মনে আছে নিশ্চয়ই। কাকের সত্যি সত্যি এ রকম বুদ্ধি আছে। কাক ভবিষ্যৎ ঘটনা সম্পর্কে ধারণা করতে পারে, বিশেষ করে তাদের নিজের সমস্যা সমাধানের জন্য। স্মৃতিশক্তিও খুব ভালো। কাক যে কোনো মুখ চিনে রাখতে পারে।
শূকর: কুকুর আর শূকরের ঝগড়ায় সবসময় যে শূকর পরাজিত বা হেনস্থা হয় তা আমাদের সবার মনে আছে। কিন্তু এ দুই প্রাণীর মধ্যে শূকর বেশি স্মার্ট। কারণ এটি শব্দ এবং শব্দগুচ্ছ মনে রাখতে পারে। এমন কি এক বছর আগে শোনা শব্দও মনের রাখতে পারে অনায়াাসে। শূকরছানাকে যখন তার মা শিক্ষা দেয় তখন তারা একজনের ভুল দেখে আরেকজন শিক্ষা নেয়।
আশ্চর্যের বিষয়, তিন বছরের শিশুর জন্য যে ভিডিও গেইম জটিল সে গেইম শূকরছানারা খেলতে পারে।
জিনরহস্য আবিষ্কারের আগে ধারণা করা হতো, প্রাণীসাম্রাজ্যে কেবল মানুষ খাবারের জন্য যন্ত্রপাতি ব্যাবহার করতে পারে। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, শিম্পাঞ্জি এ কাজটি বেশ ভালোভাবে পারে। তারা লাঠি দিয়ে গর্ত খুঁড়ে সুস্বাদু উইপোকা খোঁজে বের করতে পারে। পারে মাছ শিকার করতে। এছাড়া অন্যান্য শিকারেও তারা বেশ পারদর্শী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন