পেকুয়া এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ

পেকুয়া প্রতিনিধি: কক্সবাজারের পেকুয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডির) পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী বাবু হারু কুমার পালের বিরুদ্ধে সরকারী বিভিন্ন প্রকল্প থেকে কমিশন আদায়সহ নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। নানা অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই দূর্নীতিবাজ প্রকৌশলীকে
গত কয়েক মাস পূর্বে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ অন্যত্র বদলী করেন। কিন্তু কয়েক লাখ টাকা ব্যয় কয়ে এ বদলী আদেশ ঠেকিয়ে পেকুয়ায় বহাল রয়েছে।
       প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, গত ৪ বছর পূর্বে পেকুয়া এলজিইডিতে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন কুষ্টিয়া জেলার বাসিন্দা বাবু হারু কুমার পাল। আর পেকুয়ায় যোগদান করেই শুরু করেন নানান অপকর্ম। এলজিইডির অধীনে বাস্তবায়িত বহু প্রকল্পের ঠিকাদারদের জিম্মি করে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করে ওই প্রকৌশলী কাড়ি কাড়ি অর্থের মালিক হয়েছেন। হারু বাবুর নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না। এছাড়াও কয়েকজন ঠিকাদার তার অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে বেশ কয়েকবার লাঞ্চিত হয়েছেন। এ প্রকৌশলীর লাগাম কোন ভাবেই টেনে ধরা যাচ্ছেনা। 
        খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২০১২-১৩ অর্থ বৎসরের পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের এলজিএসপি প্রকল্পের তদারকী জন্য ওই প্রকৌশলীর উপর দায়িত্ব অর্পন করেছিল উপজেলা বিজিসিসি কমিটি। আর এ সুযোগে তিনি প্রতিটি প্রকল্প থেকে মূল বরাদ্দের ৩ শতাংশ অর্থ ঘুষ নিয়েছেন এমনই অভিযোগ তুলেছে সংশ্লিষ্টরা। এলজিএসপি প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট এক ইউপি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের একটি বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস সংস্কারের জন্য ৫০হাজার টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছিল। সেখানে প্রাক্কলন তৈরী করার নামে উপ সহকারী প্রকৌশলী ৫হাজার টাকা ঘূষ নিয়েছেন। এতে থেমে নেই ওই প্রকৌশলীর ঘুষ বানিজ্য। সব প্রকল্প থেকেই এভাবে নানা ফন্দির ফিকির করে সরকারী বরাদ্দের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। 
    পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,গত ২০১২-১৩ অর্থ বৎসরে উপজেলার সাত ইউনিয়নে এলজিএসপি প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৮০লাখ টাকার ও বেশি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এসব বরাদ্দের মধ্যে পেকুয়া সদরে ৭টি প্রকল্প, উজানটিয়া ইউনয়নে ৭টি প্রকল্প, টইটং ইউনিয়নে ১০টি প্রকল্প, শিলখালী ইউনিয়নে ৪টি প্রকল্প,বারবাকিয়া ইউনিয়নে ৯টি প্রকল্প, মগনামা ইউনিয়নে ৮টি প্রকল্প, রাজাখালী ইউনিয়নে ৫টি প্রকল্প ছিল। আর এসব প্রকল্পের অনূকূলে ওই ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। প্রকল্পের মধ্যে ছিল, গ্রামীন পর্যায়ে রাস্তাঘাট সংস্কার, শিক্ষা প্রতিষ্টানের উন্নয়নসহ গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্প। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নে জনপ্রতিনিধিরা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি ও করেছিল। এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, পেকুয়া সাত ইউনিয়নের প্রত্যেকটি প্রকল্প কমিটিকে প্রাক্কলন তৈরী করে দেওয়ার নামে উপ-সহকারী প্রকৌশলী বাবু হারু কুমার পাল মোটা অংকের ঘুষ নিয়েছেন। 
    এসব অভিযোগে ব্যাপারে জানতে পেকুয়া এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী বাবু হারু কুমার পালের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সমূহ সরাসরি অস্বীকার করে বলেন, এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ। কোন প্রকল্পের দূর্নীতির সাথে আমি জড়িত নই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন