ডেস্ক রিপোর্ট
পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজিত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে জনগণ রায় দিয়েছে বলে মনে করছে বিএনপি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলছে সরকার নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করে প্রমাণ করেছে
তাদের অধীনে নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব। পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর প্রধান দুই জোটের সাথে সাধারণ জনগণও এ বিষয়টি নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে। গাজীপুর নির্বাচনের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নির্দলীয় সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পাঁচ সিটি নির্বাচনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। যদি প্রধান দুই দল নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে একমত না হয় তাহলে সংঘাত অনিবার্য। তারা বলছেন, স্থানীয় নির্বাচনের ফলাফল দিয়ে জাতীয় নির্বাচনকে মূল্যায়ন করা যাবে না। সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদিন মালিক বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে দুই দলের মধ্যে সমঝোতার সময় শেষ হয়ে গেছে। যেহেতু এখন পর্যšত্ম উভয় দল যার যার অবস্থানে অনঢ় তাই আরেকটি ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন আমাদের সময় ডটকমকে বলেছেন, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিয়ে আমাদের দেশেও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব তা গত পাঁচটি সিটি নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া ৯০ এর গণআন্দোলনের পর পরপর তিন বার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। যেহেতু তিন মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তাই এখন আর এই অসাংবিধানিক সরকারের প্রয়োজন নেই। তবে তিনি বলেন, যেহেতু প্রধান দুই জোটই তাদের দাবিতে অনঢ় তাই আগামীতে জাতীয় রাজনীতিতে সংঘাত অনিবার্য।
আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ উল আলম লেনিন রোববার সন্ধ্যায় ৭১ টেলিভিশনকে বলেছেন, সংবিধান ও আদালতের রায়কে সামনে রেখে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতেই আওয়ামীলীগ তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করেছে। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে অসভ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিচারপতি লতিফুর রহমান, ইয়াজউদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্দিষ্ট মেয়াদে নির্বাচন না করে দীর্ঘ মেয়াদে থেকেছে। এছাড়া এই সরকারগুলোর কোন জবাবদিহীতা না থাকায় তারা যা ইচ্ছা তাই করে যায়।
লেনিন বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন এ ইস্যুতে প্রতিটি সরকারের শেষ মেয়াদে দেশে রক্তক্ষয়ী অবস্থার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে।
৭১ টেলিভিশনকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর (অব) এম হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসভ্য হলে সব রাজনীতিবিদই অসভ্য হবেন। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়লাভ করে রাজনৈতিকদলগুলো দেশ পরিচালনা করেছে। এছাড়া এ ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ জনগণ করেনি বরং তা করেছেন প্রধানমন্ত্রী । সংবিধান সংশোধনের জন্য গঠিত কমিটি এবং আদালতের রায়ে আরো দুই মেয়াদে নির্বাচন করার কথা বলা হলেও প্রধানমন্ত্রী তা মানেন নি।