সৌদিতে লক্ষাধিক বাংলাদেশি বৈধ হতে পারছে না

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সৌদিতে বসবাসরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের অধিকাংশ আকামা বৈধ হচ্ছে না । সৌদি আরবে অবৈধ ভাবে থাকা শ্রমিকদের বৈধ করার যে সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল।
সেটি বাড়ানোর জন্য দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয় একটি প্রস্থাপনা উচ্চপদস্থ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন সৌদির একটি পত্রিকা এ্যারাব নিউজ।
অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ করার জন্য সরকার ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল জুলাই মাসের ৩ তারিখে। সৌদি আরবে বাংলাদেশের ৩ লাখের বেশি শ্রমিক রয়েছে। যাদের মাত্র অর্ধেকের মতো শ্রমিক বৈধ হওয়ার সুযোগটি নিতে পেরেছেন। ফলে সেখানে বসবাসরত  অনেক অবৈধ শ্রমিক এখন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এই অবৈধ শ্রমিকরা অনেকেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আতঙ্কে রয়েছে।
এমনি একজন বাংলাদেশি শ্রমিক আব্দুল হাজী লিটন সৌদি আরবে বসবাস করেন। তিনি বলেন, প্রায় ৩ মাস ধরে আকামা বৈধতার জন্য কোর্টে ঘুরছেন। কিন্তু তার পরেও তিনি আকামা বৈধতা করতে পারে নাই। সে যখন আকামা বৈধতা করার জন্য কোর্টে আসে। তখন তাকে বলা হয় আজকে না আগামী কাল। এই ভাবে বলতে বলতে তার আকামা বৈধ করার সময়সীমা প্রায় পার হয়ে যাচ্ছে। তার পরেও তিনি আকামা বৈধ করতে পারেন নাই।
তিনি আরও বলেন,‘সময় পার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু এখন পর্যšত্ম সৌদি আরবে আকামা বৈধ করার কোনো সমাধান পাচ্ছে না। এখন তিনি কোন পথে যাবেন তার নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা খুঁজে পাচ্ছেন না। আর  মাত্র ৩ থেকে ৪ দিন  সময় আছে। তার মধ্যে যদি বৈধ করা না যায়। তাহলে বিনা অপরাধে জেল যেতে হবে।

লিটন বলেন,‘সৌদি আরবে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাসের কাছে শ্রমিকরা গেলে তারা বলেন তোমাদের এই সমস্যা সমাধান করবে শ্রমিক মালিকরা। তারা এই সমস্যাটি সমাধান করতে পারবে না। বাংলাদেশের দূতবাসে বাঙালি শ্রমিকদের কোনো সম্মান করা হয় না। তিনি বলেন আমরা যে একজন শ্রমিক সেই হিসাবে তারা কোনো সম্মান করে না।

তিনি বলেন,‘ আমার কাছে মাত্র কয়েদিন খাওয়া ও চলা চলের মতো কিছু রিয়াল আছে । এখানে কোনো দিন খাওয়া হয় আবার কোনো দিন না খেয়ে থাকতে হয়। কোনো দিন গোসল, আবার কোনো দিন গোসল হয় না। থাকার ঘর নেই,খাওয়া ও গোসলের কোনো ব্যবস্থা নেই, চোখে ঘুম নেই। তিন থেকে চার দিনের মধ্যে এই আকামা যদি বৈধ না করা হয়। তাহলে হয়তো আমাদের পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার আশঙ্খা আছে। এখানে তার মতো আরও অনেক শ্রমিক আছে যাদের  থাকার মত কোনো স্থান নেই। কোর্ট শ্রমিকদের কোনো মূল্যয়ন করে না। কোর্ট অবৈধ ভাবে শ্রমিকদের কাছ থেকে হাজার হাজার রিয়াল খেয়ে আকামা বৈধ করার ব্যবস্থা করেন। 

সৌদি আরবের কোর্ট বিভিন্ন শ্রমিকের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে রিয়াল আদায় করছে। তিনি বলেন, কারও কাছ থেকে কোর্ট ৮,০০০ বা ১০,০০০ রিয়াল অবৈধ ভাবে গ্রহণ করেন। আর আমার কাছ থেকে কোর্ট ৫,৫০০ রিয়াল নিয়েছে। তার পরেও আমার কোনো আকামা হয় নাই। সরকারের দেওয়া যে সময় টুকু আছে। এই সময়ের মধ্যে হয়তো আর আকামা বৈধ করা সম্ভব নয়। লিটন বলেন তবে আমার কাছে যে কাগজ আছে। তাই হয়তো আকামার কাজ করবে। এটি আমার কাছে শেষ পরিচয় পত্র হিসাবে আছে।