কক্সবাজার জেলাব্যাপী হুন্ডি ব্যবসা জমজমাট

কক্সবাজারবাণী ডেস্ক: ঈদ উপলক্ষে বিদেশ থেকে অবৈধপথে টাকা লেনদেন সিন্ডিকেট হুডি ব্যবসায়ীদের জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। এর ফলে একদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব, অপরদিকে হুন্ডি ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতায় ব্যাংকগুলোতেও গুনতে হচ্ছে লোকসানের হিসাব। এছাড়া হুন্ডির টাকা নিয়েও ঘটছে নানা ধরনের অপরাধ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পুরো জেলাব্যাপী একটি শক্তিশালী হুন্ডি সিন্ডিকেট বহু বছর ধরে সক্রিয় থাকলেও প্রশাসন বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ পর্যন্ত কাউকেই তেমন কার্যকর শাস্তি দিতে পারেনি। বরং উল্টো হুন্ডি সিন্ডিকেটের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা নেওয়ার যথেষ্ট প্রমাণ আছে।
কক্সবাজার শহরের তারাবনিয়ারছড়া এলাকার আহসান উল্লাহ মেজবাহ উদ্দিনসহ অনেকে বলেন এলাকায় অনেক আগে থেকে অবৈধ টাকা লেনদেন অর্থাৎ হুন্ডি ব্যবসা চলে আসছে তবে সম্প্রতি ঈদ উপলক্ষে অনেক বেড়ে গেছে। মূলত তারাবনিয়ারছড়ার মসজিদ রোডের নায়েক আলী ও তার আত্মীয় আবছার, উত্তর তারাবনিয়ারছড়া এলাকায় শামসুল আলম নামের এক ব্যক্তি প্রত্যেক দিন রাত হুন্ডির টাকা লেনদেন করছে। আর এ নিয়ে এলাকায় যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। 
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তোতকখালী এলাকার মনজুর, শফি, পাতলী  এলাকার মৌলভী গফুর ইদানিং ব্যাপকভাবে হুন্ডির ব্যবসা করে বিপুল অবৈধ অর্থ আয় করছে। উখিয়া উপজেলাতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে দুবাই কেন্দ্রীক কোটবাজার এন আলম মার্কেটে বসে নুরুল আলম ও তার সহযোগী শেখ আহামদ, সৌদিয়া আরব কেন্দ্রীক কোটবাজার চৌধুরী মার্কেটে একরাম, শাহ আলম এবং ওমান কেন্দ্রীক হেলাল উখিয়া সদরে বসে হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। এলাকাবাসী জানান তারা প্রত্যেকে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে দৈনিক কোটি কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন করে। তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন এই অবৈধ ব্যবসা করে আসলেও রয়ে গেছে ধারাছোঁয়ার বাইরে। এছাড়া টেকপাড়া এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে টেকনাফ সদরে বাট্টা আয়ুব, টেকনাফ বাহারছড়ায় মৌলভী আজিজ প্রকাশ্য হুন্ডি ব্যবসা করে আসছে। 
কক্সবাজার শহরের অসংখ্য হুন্ডি ব্যবসায়ীর লাগামহীন দৌরাত্ম্যে এখন ব্যাংক পাড়াও অস্থির বলে জানা গেছে। আলাপকালে কক্সবাজার সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ম্যানেজার মো. জাহিদ হোসাইন বলেন ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা আসলে সরকার ভাল পরিমাণ রাজস্ব পায়। এর মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন বা সমৃদ্ধি হয়। বর্তমানে ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে বিদেশ থেকে টাকা পাঠালে ১০ মিনিটের মধ্যেই এখন থেকে টাকা পাচ্ছে। সে সুবিধা না নিয়ে অনেকে অবৈধ উপায়ে ব্যক্তি পর্যায়ে টাকা লেনদেন করছে এর ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। দেশের উন্নতিতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ঈদগাঁও কেন্দ্রীক রুহুল আমিন, মশিউর রহমান মূল হুন্ডি ব্যবসায়ী আবার তাদের আয়ত্বে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে ব্যাপক হারে হুন্ডি ব্যবসা চলছে। এদিকে প্রতি বছর ঈদকে সামনে রেখে হুন্ডি ব্যবসার টাকা লেনদেনকে ঘিরে কয়েকটি বড় ধরনের ঘটনা ঘটছে তার প্রেক্ষিতে এবারও অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করছে অনেকে। তবে অনেক সুশীল সমাজের অভিযোগ হুন্ডি ব্যবসা এখন অপরাধ নয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সবাই মিলে এই অবৈধ ব্যবসা করছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন