তিন ঘণ্টার নাটকীয় মুহূর্তের পর বারো ঘণ্টা অপেক্ষা!

প্রিয় দেশ: মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে চরম নাটকীয় তিনটি ঘণ্টা পার করল বাংলাদেশ। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত সময়টা কেটেছে রুদ্ধশ্বাস। নাটকীয় মুহূর্তগুলো শুরু হয় একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জামায়াতের নেতা কাদের মোল্লার স্ত্রীকে পাঠানো কারা কর্তৃপক্ষের একটি চিঠির মধ্য দিয়ে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগারের কর্তৃপক্ষ কাদের মোল্লার স্ত্রী সানোয়ার জাহানের কাছে একটি চিঠি পাঠায়। তাতে লেখা ছিল, ‘রাত আট ঘটিকার সময় আপনাকে কাদের মোল্লার সঙ্গে দেখা করার অনুরোধ জানানো হলো। বিষয়টি অতিব জরুরি।’ এরপরই বিষয়টি গণমাধ্যমে জানাজানি হয়। 
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় নির্বাচনকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু ও আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম সংবাদ সম্মলনে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।

তারা জানান, ‘মঙ্গলবার রাত বারোটা এক মিনিটে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। সে অনুযায়ী সবকিছু প্রস্তুত করা হয়।’ দেশে এই প্রথম কোনো ব্যক্তির ফাঁসির রায় কার্যকর করার ক্ষণ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হলো।

ঘোষিত সময়ের দেড় ঘণ্টা আগে জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার ফাঁসির কার্যক্রম স্থগিত করলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তিনি কাদেরের ফাঁসি কার্যকরের আদেশ পরের দিন বুধবার সকাল সাড়ে দশটা পর্যন্ত স্থগিত করেন মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটার দিকে।

কারা কর্তৃপক্ষের চিঠি পেয়ে পরিবারের সদস্যরা কাদেরের সঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগারের ফটকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেখাও করেন।

গত রোববার বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আদেশের কপি পাঠান। আদেশের ওই কপি পাওয়ার পর সন্ধ্যায় ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কেন্দ্রিয় কারাগারে গিয়ে তিন পেয়ার ফাঁসির মঞ্চ পরিদর্শন করেন।

প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ গত ১৭ সেপ্টেম্বর কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন। বিচারকদের স্বাক্ষরের পর সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা ৫ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে। ২০১০ সালের ১৩ জুলাই অন্য একটি মামলায় কাদের মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ১৪ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তদন্ত শুরু হয় ২১ জুলাই। গত বছরের ২৮ মে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ৩ জুলাই থেকে সাক্ষ্য নেয়া শুরু হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন