ফরিদুল মোস্তফা খান কক্সবাজারের আলোকিত সাংবাদিক

এম.এ আহাদ শাহীন, ১৭.০৩.১৩  


পুরো নাম ফরিদুল মোস্তফা খান। কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত দৈনিক কক্সবাজারবাণী পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক তিনি। এছাড়া তিনি বর্তমানে জাতীয় দৈনিক আমাদের অর্থনীতি ও আমাদের সময় ডট কম এর কক্সবাজারস্থ আঞ্চলিক প্রধান। পিতা অবসর প্রাপ্ত প্রয়াত শিক্ষক মোঃ ইসহাক খান। গ্রাম সীমান্ত জনপদ টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পশ্চিম সাতঘরিয়া পাড়া। ১৯৮২ সালের ৯ মে রোজ সোমবার তাঁর জন্ম। ২০০০ সালের আগেও গ্রামের বাড়িতে শিক্ষক পরিবারে থাকতেন তিনি। স্থানীয় নয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০০ সালে এসএসসি পাশের কক্সবাজার সরকারি কলেজেই তাঁর পড়ালেখার সফল সমাপ্তি। শৈশবে ছোটগল্প, কবিতা, লেখালেখিতে পাঠকনন্দিত ফরিদুল মোস্তফা খানের সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি ২০০১ সালের শুরুর দিকে।
তৎকালীন সময়ের জনপ্রিয় লেখক বরেণ্য সাংবাদিক কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি আতাহার ইকবাল সম্পাদিত দৈনিক বাঁকখালীর স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে সাংবাদিকতায় অভিষিক্ত সেই ফরিদুল মোস্তফা খান কক্সবাজারের গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বে আলোকিত সাংবাদিক। কেউ স্বীকার করুক- আর নাই করুক একথা-ই সত্য স্বাধীনতার পর কক্সবাজারের ইতিহাসে প্রান্তিক সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতায় জেলায় হাতেগুনা যে ক’জন সম্পাদক আছেন, ফরিদুল মোস্তফা খান তৎমধ্যে অন্যতম। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে কম বয়সী অথচ সফল দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের মধ্যেও সম্ভবত তিনি অদ্বিতীয়। সময়ের ব্যবধানে নানা ঘাত-প্রতিঘাত চড়ায়-উৎরাই পেরিয়ে সফলতার দ্বারপ্রান্তে উপনীত কক্সবাজারের এই কৃতি সাংবাদিকের সাথে সম্প্রতি কথা হয় এই প্রতিবেদকের। দীর্ঘ সাক্ষাতকারে অত্যন্ত বিচক্ষণ ও বিনয়ী সফল এই গণমাধ্যম ব্যক্তির মুখ থেকে বেরিয়ে আসে মফস্বল সাংবাদিকতার সুখ-দুঃখের নানা খবর। নিম্নে তা হুবুহু তুলে ধরা হল। প্রশ্ন ঃ পেশাগত সফলতায় কতদিন সময় লেগেছে? উত্তর ঃ এইতো ২০০১ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত। যে সময়গুলোতে আমি একে একে দৈনিক বাঁকখালী পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার, বাংলাদেশ বেতার কক্সবাজার কেন্দ্র’র সংবাদদাতা, চকরিয়া থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক মেহেদী, দৈনিক রূপসীগ্রাম, দৈনিক সৈকত পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার, ডেইলি নিউজ টুডে, দৈনিক খবরপত্র, দেশবাংলা, সাপ্তাহিক খবরের অন্তরালে, দৈনিক আমাদের কণ্ঠ ও আজকের বসুন্ধরা পত্রিকায় কক্সবাজার জেলা সংবাদদাতা হিসেবে কর্মরত ছিলাম। প্রশ্ন ঃ স্মরণীয় কোন প্রতিবন্ধকতা ছিল কি? উত্তর ঃ ছিলতো অবশ্যই। যেমন একজন সাংবাদিকের সত্যিকার কোন বন্ধু নেই। কাজেই খেয়ে না খেয়ে পেশায় টিকে থাকতে আমার শত্রুর অভাব ছিল না। এমনকি পেশা ছেড়ে অন্যকিছু করতে নিজের পরিবার থেকেও চাপ আসতো। ক্ষেত্রবিশেষ পরিবারের অনেক ঘনিষ্টজনও অসহযোগিতা করতো। সংক্ষুব্ধরাতো হামলা-মামলায় লেগে থাকতো। তা বড় কথা নয়, সৎ সাহস এবং পরোপকারের মানসিকতা থাকলেই এই পেশায় প্রতিবন্ধকতা কোন সমস্যাই নয়। প্রশ্ন ঃ সাংবাদিকতার বাইরে আর কি কি করতে ইচ্ছে আছে? উত্তর ঃ দৈনিক সাংবাদিকতার অবসরে কিছু গান লিখছি। যা বর্তমানে বৃহত্তর চট্টগ্রামের জনপ্রিয় সুরকার আজম চৌধুরী মিউজিক কম্পোজিশন করছেন। ইচ্ছে আছে তা দিয়ে অডিও-ভিডিও একটি এ্যালবাম করবো। এছাড়া আমার লেখা একটি ছোট গল্প আছে ‘ভালবাসায় ক্যান্সার’। তা নাট্যরূপ দিয়ে একটি ভাল নাটক বানাতেও ইচ্ছে করে। এছাড়া আমিতো পরিবহন ব্যবসা করি। আরো কিছু সেবামূলক ব্যবসা করতে চাই। সবমিলিয়ে মৃত্যুর আগের ক্ষণ পর্যন্ত শুধুই মানুষের কল্যাণ ও সৃজনশীল কাজ করতে চাই। প্রশ্ন ঃ স্মরণীয় মুহুর্ত? উত্তর ঃ কাছের মানুষ যখন সবকিছু অস্বীকার করে স্বার্থপরতা দেখিয়ে দূরে চলে যায়। প্রশ্ন ঃ প্রিয় গণমাধ্যম? উত্তর ঃ প্রশ্নটা আসলে খুবই কঠিন। কারণ গণমাধ্যম বলতে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, রেডিও, অনলাইন পত্রিকাসহ সব প্রকাশনাই আমার প্রিয়। কারণ আমি সেখান থেকে অনেক কিছুই শিখি। বিশেষ করে অনলাইন পত্রিকাগুলো আমার জ্ঞানাভাব পূরণ করে। প্রশ্ন ঃ সবচেয়ে পছন্দের সাংবাদিক কে? উত্তর ঃ এই প্রশ্নটির উত্তর আরো কঠিন। কারণ সাংবাদিকতার বাস্তবতায় প্রিয় সাংবাদিকের অভাব থাকে না। যখন যার প্রতিবেদন সত্য-সুন্দর ও সাহসী মনে হয়, তখন সেই সাংবাদিকই আমার সবচেয়ে প্রিয় মনে হয়। এছাড়া যাঁদের আন্তরিকতায় আজ আমি সাংবাদিক থেকে সম্পাদক হয়েছি সেই সকল সাংবাদিকগুরুদের আমি সবসময় পছন্দ করি। বিশেষ করে সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খাঁন, বাংলাদেশ বেতারের বার্তা নিয়ন্ত্রক আবু আলম, আমাদের অর্থনীতির সাংবাদিক দুলাল আহমদ চৌধুরী, রিমন মাহফুজ, সাংবাদিক কাজী আব্দুস সামাদ, আবদুল মতিন, চট্টগ্রামের সাংবাদিক আয়ান শর্মা, ভূপেন দাশ, দৈনিক সাঙ্গু সম্পাদক কবির হোসাইন সিদ্দিকী ও জসিম উদ্দিন কিশোরসহ আরো অনেকেই রয়েছেন, যাঁদের হৃদয় ছোঁয়ায় আজও আমি এগিয়ে চলছি। এছাড়া কক্সবাজারের অনলাইন পত্রিকা সমূহের সম্পাদকবৃন্দতো রয়েছেন, যারা প্রতিদিন আমার লেখা বিদেশিদেরও পড়ার সুযোগ করে দেন। লেখক- সাব-এডিটর আমাদের সময় ডট কম, ঢাকা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন