উখিয়ায় ২৭ দিনের মাথায় মাদ্রাসা ছাত্রীর লাশ উত্তোলন

এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া
কক্সবাজারের উখিয়ায় ২৭ দিনের মাথায় মাদ্রাসা ছাত্রী মরিয়মের লাশ গতকাল বৃহস্পতিবার ২৩ মে সকালে কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল মাদ্রাসা ছাত্রী মরিয়মকে উখিয়া সদরের একটি ষ্টুডিওতে আটকিয়ে রেখে ষ্টুডিও মালিক লম্পট সোহেল নাথ উরপে রানা শ্লীলতা হানীর অপমান সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
পুলিশ রানাকে আটক করলেও এলাকাবাসী মরিয়ম হত্যার দৃষ্টান্তর মূলক শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
উল্লেখ্য গত ২৬ এপ্রিল উখিয়ার রতœাপালং ইউনিয়নের অজপাড়া গাঁ চাকবৈঠা করই বনিয়া এলাকার দিন মুজুর আমির হামজার মেয়ে মরিয়ম বেগম (১৬) নিজের প্রয়োজনে ছবি উঠানোর জন্য উখিয়া সদরে লিটন ষ্টুডিওতে আসে। ছবি উঠানোর পর ষ্টুডিও মালিক পুত্র লম্পট রানা মাদ্রাসা ছাত্রীকে জিম্মি করে তার ছবি ইন্টারনেট সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করার হুমকী দিয়ে মরিয়মকে আটকিয়ে রাখে। ২৬ এপ্রিল সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ষ্টুডিও ভিতরে আটকিয়ে রেখে ইচ্ছার বিরুদ্ধে শ্লীলতা হানী করে। রাত ১০টার পর মরিয়ম কোন মতে লম্পট রানার কবল থেকে বেরিয়ে মধ্যরাতে ঘরে ফিরে যায়। সারা দিন ও মধ্যরাত পর্যন্ত কোথায় ছিল মা-বাবা জানতে চেয়ে বকাঝকা করে। পরদিন ২৭ এপ্রিল বিকালে মা-বাবার অনুপস্থিতিতে হিন্দু ছেলের হাতে ইজ্জত নষ্ট হওয়ার ক্ষোভে মরিয়ম গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। 
এঘটনায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে এবং লম্পট রানার শাস্তির দাবী করে। ২৮ এপ্রিল উখিয়া থানার পুলিশ কোন অভিযোগ ছাড়া নিজ উদ্যোগে লম্পট রানাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অবশেষে ৩০ এপ্রিল নির্যাতিত মাদ্রাসার ছাত্রী মরিয়মের পিতা আমির হামজা বাদী হয়ে রানা ও তার সহযোগি শিবলুর বিরুদ্ধে উখিয়া থানার অভিযোগ দায়ের করে। উখিয়া থানা পুলিশ অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা দায়ের করে রানাকে আদালতের মাধ্যমে ৫ দিনের রিমান্ডে আনে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ কালে রানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলে উখিয়া থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন মিয়া জানান। উক্ত মামলার প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ২৩ মে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আমিনুল ইসলামের উপস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, স্থানীয় গ্রামবাসী ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মরিয়মের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে গতকাল দুপুরে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক মহিত জানান। এদিকে মরিয়ম হত্যা কান্ডের সুষ্ঠু বিচার ও লম্পট রানার ফাঁসির দাবীতে স্থানীয় শত শত গ্রামবাসী কর্তব্যরত ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন