মহেশখালীতে বেড়ীবাধ রক্ষার ঝাউ বাগানে দেদারসে চলছে গাছ কাটার মহোৎসব

মোহাম্মদ সিরাজুল হক সিরাজ
মহেশখালী চরপাড়ায় বেড়ীবাধ রক্ষার জন্য রোপিত ঝাউ বাগানে দেদারসে চলছে গাছ কাটার মহোৎসব। এসব দেখেও প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। বিগত ১৯৯৭ ইং সালে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে বেড়ীবাধ ভাঙ্গিয়া বিলীন হয়ে গেলে মহেশখালী পৌরসভায় গোরকঘাটা চরপাড়া ৯নং ওয়ার্ডে সাগরের পাশে সরকারি উদ্দ্যোগে দেশ রক্ষার্থে চরে ঝাউ গাছের চারা রোপন করা হয়। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিদুর্গত এলাকায় সফরে এলে মহেশখালী ভূমিহীন প্রতিনিধি, সমাজ সেবক ও গোরকঘাটা ইউনিয়ন ভূমিহীন সমবায় সমিতি লিঃ এর মাধ্যমে চারা রোপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
প্রধান মন্ত্রীর পত্র সংখ্যা- ঘূর্ণিঝড়/১, ঘূর্ণিঝড়/২, তারিখ- ১৯মে/১৯৯৭ ইং এর আলোকে মহেশখালী বেড়ীবাধ সংস্কার, বেড়ীবাধের চতুর্দিকে ও বেড়ীবাধের উপরে ঝাউ গাছ ও সাগরের পার্শ্বে বাইন গাছ লাগানো হয়। এই গাছগুলি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব অর্পিত করা হয় বন বিভাগ কতৃক গোরকঘাটা প্যারাবনের রেঞ্জ অফিসার ও তার সহপাঠিকে। বর্তমানে এই গাছ বড় হয়ে বিশাল গাছে পরিনত হয়েছে। পরিনত হয়েছে বিশাল ঝাউ বাগান। এলাকা হয়েছে উর্বর, যে কারণে সাইক্লোন আসতে বাধাগ্রস্থ হয়। কিন্তু গত ৪/৫ দিন ধরে অনবরতভাবে রক্ষক ভক্ষকের ভূমিকায় পরিণত হয়ে এই বিশাল ঝাউ বাগানের বড় বড় গাছগুলি দিনে রাতে দেদারসে কাটিয়া একটি রোহিঙ্গাদের টুকরী বাসাতে জমায়েত করে গোপনে ও প্রকাশ্যে হাজার হাজার টাকায় বিক্রি করিতেছে গোরকঘাটা রেঞ্জের প্যারাবন বিট অফিসার ও তার সহযোগী অন্যান্য বন কর্মীরা। এইভাবে গোরকঘাটা চরপাড়ায় বিশাল ঝাউ বাগানের বড় বড় গাছ কাটিয়া বিক্রি করিতেছে অথচ প্রশাসনের তিল পরিমানও নজর নাই। তারা এ ব্যাপারে নাকের ডগায় জানিয়াও না জানার ভান করিয়া নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করিতেছে। সরজমিনে পরিদর্শনে গেলে গাছ কাটারত অবস্থায় বন পাহারাদারগণ থেকে জানতে চাইলে তারা গাছ ভাঙ্গিয়া গিয়াছে তাই কাটিতেছে বলে জানায়। আবার প্রায় ১০০ হাত দূরত্বে অবস্থিত মায়ানমার থেকে অগত অবৈধ রোহিঙ্গাদের বাসায় ৭০টির মত গাছ টুকরী দেখে এত গাছ এখানে জমায়েত কেন এবং গাছগুলো ভাঙলে তার ভাঙ্গার চিহ্ন নাই ও গুড়া থেকে কেন কাটা হয়েছে জানতে চাইলে পাহারাদারগণ বলেন বিট অফিসার তাদেরকে গাছগুলি কাটতে বলেছে। তাদের নাম জানতে চাইলে প্রথমে অস্বীকৃতি জানায় পরে একজনের নাম ফরিদ বলে জানা গেছে। এই ধরনের দেশ রক্ষার্থে রোপিত বড় বড় ঝাউ বাগানের গাছ নির্মমভাবে কাটিয়া বিক্রি করিতে থাকিলে মহেশখালী পৌরসভার চর এলাকা সহ ৯নং ওয়ার্ড সাগরে অচিরেই বিলিন হয়ে যাবে। পরিবেশ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এইভাবে মহেশখালীর পুরা ৬৯ নং পুল্ডারের বেড়ীবাধের উপরে ও পার্শ্বে ঝাউ বাগান ও বাইন গাছের বাগান কাটিয়া সাবাড় করিতেছে এই দায়িত্বরত বনকর্মীরা তাদের প্রভুদের সহযোগীতায়। তাই মহেশখালীবাসী তথা সচেতন মহলের দাবী শীঘ্রই যেন এই জঘন্য কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। না হলে মহেশখালীর পর্যটন সমৃদ্ধ এলাকা সাগরে বিলীন হয়ে যাবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন