টেকনাফ উপজেলা মাদকদ্রব্যে ভাসছে

আসছে ইয়াবা, জড়িয়ে পড়ছে গোটা যুবসমাজ

আবুল কালাম আজাদ
ইদানিং টেকনাফ সীমান্ত উপজেলা মাদকদ্রব্যে ভাসছে। প্রতিদিন দিবারাত্রি সমানতালে মিয়ানমার থেকে নাফনদী পার হয়ে আসছে ইয়াবার পাশাপাশি হরেকরকমের মাদকদ্রব্যের বড় বড় চালান।
প্রতিদিন বিজিবিসহ বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ধরা পড়ছে বড় বড় চালান। হাত বাড়ালেই পাওয়া পাচ্ছে মাদকদ্রব্য। খোঁজখবর নিয়ে দেখা যায়, টেকনাফের ধনীর দুলাল থেকে আরম্ভ করে নিম্ন স্তরের রিক্সাওয়ালা পর্যন্ত এ লাভজনক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। ফলে মাদকের ব্যবসা যেমনি বাড়ছে পাশাপাশি মাদকসেবীও তার চেয়ে ৩/৪ গুণ বাড়ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে মাদকসেবনকারী ও মাদকের চালান বাড়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে প্রতিদিন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা যেভাবে আটক করে চালান দিচ্ছে তারচেয়ে বেশি মাদকসেবনকারী, ব্যবসায়ী জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বেশি সংখ্যক চলে আসছে। ফলে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনদের মধ্যে আটকের ব্যাপারে অনীহা-প্রবণতা বেশী দেখা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে কয়েকজন আইনজীবীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, বিচার বিভাগ সঠিকভাবে আইনের বিশ্লেষণ করে সঠিক বিচারের রায় দিচ্ছে। বের হওয়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন যে সমস্ত মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদেরকে মামলা রুজু করে কোর্টে পাঠাচ্ছে এগুলোর বেশির ভাগই দুর্বল। এখানে সাক্ষীর অভাব, ঠিকভাবে সাক্ষীর লোকজন হাজির হয়না। ফলে দুর্বল মামলা হওয়ায় মহামান্য আদালত এ মামলাগুলো খারিজ করে দেয়। এদিকে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কর্তাব্যক্তিদের সাথে আলাপ করা হলে তারা জানায়, লোকবল সংকট, সীমান্ত চৌকির সংখ্যা নগন্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সচেতন মহলের তদবির ইত্যাদির কারণ চুনোপুঁটিদেরকে আটক করলেও গডফাদারদেরকে আটক করা সম্ভব হয় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সচেতন মহল জানায়, টেকনাফে মাদকদ্রব্য ব্যবসায় যারা জড়িত এদের বেশির ভাগই হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষপর্যায়ের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজন। পাশাপাশি বিরোধী দলীয় ছোটখাট কিছু লোকজন এ ব্যবসা করলেও তারা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদেরকে কর দিয়ে ব্যবসা করছে। যার ফলে সচেতন মহল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মুখ খুলতে পারেনা। জানা গেছে গত ২ সপ্তাহে টেকনাফ উপজেলায় ১/২ কোটি টাকার মাদকদ্রব্যের চালান আটক করেছে বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন। ইদানিং মাদকদ্রব্য ব্যবসা জমজমাট হওয়ায় ও বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্র শূন্য হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য বৈধ ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার মাঠ পর্যায়ের লোকজন মাদকদ্রব্য আটকের চেয়ে মালামালগুলো হাতিয়ে নিয়ে নগত টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার পন্থায় লিপ্ত হয়ে পড়েছে বলে প্রতক্ষদর্শীর সূত্রে জানা যায়। ফলে মাদক ব্যবসা হ্রাসের চেয়ে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক কথায় সচেতন মহলের মতে সামাজিকভাবে বয়কট, কঠোর আইন, সাজা বৃদ্ধি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কড়া নজরদারি ও গডফাদারদেরকে আইনের আওতায় আনা গেলে মাদকদ্রব্য ব্যবসা, সেবন বন্ধ হয়ে পড়বে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন