চকরিয়ার পৌর এলাকায় অল্প বর্ষণে জন দুর্ভোগের অন্ত নেই

নিরসনের উদ্যোগ নেই পৌর কর্তৃপক্ষের 


চকরিয়া প্রতিনিধি
জনঅধ্যুষিত চকরিয়া পৌরসভা খানা খন্দক ও বিশালাকৃতির ভগ্ন দশায় দুর্ভোগে দিন কাটছে পৌরবাসীর। শুরু হয়নি বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রথম সপ্তাহে দু’একদিনের বর্ষণে দেখা দিয়েছে অশনি সংকেতের। এরই কিছু নমুনা -জলাবদ্ধতা ও কাদায় পূর্ণ হয়ে গেছে চকরিয়া পৌরসভার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র চিরিংগা পৌরশহর। কয়েকদিন পূর্বেও এ শহরটি ছিল খুবই সৌন্দর্য্যমন্ডিত।
সড়কগুলো ছিল পরিপাঠি। কিন্তু সামান্য বৃষ্টিতে শহরের পুরো চেহারাটাই পাল্টে গিয়ে শ্রীহিন হয়ে পড়েছে। কাবু হয়ে গেছে জনজীবন ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পুরো পৌর এলাকা। এতে জনদূর্ভোগ  পৌছেছে চরমে। বর্তমানে পৌরশহর চিরিংগার বিভিন্ন স্থানে, খানা খন্দক ও গর্তে ভরা একাধিক সড়কে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সড়কে হাটু পরিমান কাদা জমে বিশ্রী পরিবেশের জন্ম দিলে এ থেকে ছড়াচ্ছে উৎকট দুর্গন্ধ। এতে জনসাধারণ, স্কুল ও কলেজগামী যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীদের হাটাচলায় অবর্ণনীয় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বেশি। বিশেষ করে পৌরসভার ২নং ও ৩নং ওয়ার্ডে অবস্থিত চিরিংগা পৌরশহরের গার্লস হাই স্কুল সড়ক, ওয়াপদা সড়ক, হাই স্কুল সড়ক, সবুজবাগ আবাসিক সড়ক, বাইতুশ শরফ সড়ক, মগবাজার, থানা সেন্টারস্থ মদিনা রাইস মিল এলাকা, প্রধান (আরকান) সড়কে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টিসহ কাদায় পূর্ন হয়ে গেছে। বর্তমানে এসব সড়ক দিয়ে হাটাচলা ভারি মুশকিল হয়ে পড়েছে। গতকাল সরেজমিনে পৌরএলাকার ১নং ও ২নং ওয়ার্ড় ঘুরে দেখা গেছে বৃষ্টি হওয়ার পর চকরিয়া শফিং কমপ্লেক্স ও আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্সের সামনে প্রধান সড়কের ওপর হাটু পরিমাণ পানি জমে রয়েছে। তাৎক্ষনিক ওই পানি সরানোর কোন ব্যবস্থা দেখা যায়নি। বালিকা বিদ্যালয়ের সড়কে দেখা গেছে পুরো সড়কটি একহাত উচ্চতা কাদা সৃষ্টি হয়ে রয়েছে। এতে বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থী ও বাজারগামী মানুষজনের চলাফেরায় অবর্ণনীয় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাদের চলাফেরা করতে হচ্ছে হাটুপরিমাণ কাপড় উঠিয়ে। অনুরুপভাবে ওয়াপদার সড়ক ও হাইস্কুল সড়কেরও একই অবস্থা।  অভিযোগ উঠেছে, পৌরবাসি দীর্ঘদিন হাটা চলায় কষ্ট পেলেও এসব সড়কের দু’পাশে পৌর কর্তৃপক্ষ বৃষ্টির পানি নিস্কাশনের জন্য পরিকল্পিতভাবে আজবদি কোন ড্রেন নির্মাণ করেনি। বালিকা বিদ্যালয় সড়কে ড্রেন নির্মাণ করলেও তা অপরিকল্পিত। আবার ওই ড্রেন পরিস্কার করা হচ্ছে না অনেকদিন ধরে। তাই পৌরশহরের সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হচ্ছে বালিকা বিদ্যালয় সড়কটির। একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে কাদায় পরিণত হয়। কারণ ড্রেন গুলো দীর্ঘদিন ধরে পরিস্কার করেনি পৌরকর্তৃপক্ষ। অপরদিকে এসড়কের পাশে রয়েছে বেশ কয়েকটি সবজি ও তরিতরকারীর আড়ত এবং চকরিয়ার বড়বাজার। ফলে প্রতিদিনের জমে থাকা ময়লা আবর্জনা গুলো ফেলা হয় এসড়কের পাশে। পৌর কর্তৃৃপক্ষ, বাজার ও আড়ত থেকে নিয়মিত রাজস্ব আদায় করলেও ময়লা আবর্জনা গুলো সরানোর কোন ব্যবস্থা নেয় না। এছাড়া ওই সড়কে মালাবাহি বড় বড় ট্রাক ঢুকে সড়কটি আরো কাদায়যুক্ত করে তুলে। এতে পুরো সড়কটি কাদায় পিচ্ছিল হয়ে যায়। কখন এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাবে এখন সেটাই ভাবিয়ে তুলেছে পৌরবাসিকে। এব্যাপারে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড়ের কাউন্সিলর লক্ষণ দাশ জানান, পৌর কর্তৃপক্ষ স্থায়ী ও পরিকল্পিতভাবে জলাবদ্ধতা নিরসন এবং নালা নর্দমা পরিস্কারে আন্তরিকভাবে কাজ না করায় বর্ষা আসলে এঅবস্থার সৃষ্টি হয়। পৌরবাসির দাবির প্রেক্ষিতে মাঝে মধ্যে এসে দায়সারাভাবে ড্রেন পরিস্কার করলেও এসব কাজ কোন আসে না। ফলে পৌরবাসির সমস্যা লেগেই রয়েছে। এদিকে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জলাবদ্ধতা ও পানি নিস্কাশন এবং কাদা সরানোর জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। ড্রেন নির্মাণ ও ড্রেজিং ব্যবস্থার মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান করা হবে। এখন পৌরবাসির এ অবস্থা থেকে পরিত্রান পেতে স্থায়ী ও পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা হবে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন