কোনো কিছুতেই শেয়ার বাজার উঠছে না



ডেস্ক রিপোর্টঃ
৯শ’ কোটি টাকার সরকারি প্রণোদনা ঘোষণার কোনো প্রভাব পড়তে দেখা যাচ্ছে না শেয়ারবাজারে। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোনো চাঞ্চল্য নেই, নেই কোনো শলাপরামর্শ, নেই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার কোনো আগ্রহ। বাজার যেমন ঝিম ধরে রয়েছিল তেমনি নিশ্চুপ! তবে এ মরা বাজার থেকেও যারা আখের গুছিয়েছেন তারা আছেন বহাল তবিয়তে।
ফের সরকারি প্রণোদনা আসছে তারাও ছলচাতুরির নতুন কৌশল নিচ্ছেন। কীভাবে বাজারে নীরিহ বিনিয়োগকারীদের ফের স্বর্বশাšত্ম করে আবারো গুটিয়ে নিবেন নিজেদের। বাজার যেমন তেমনি থাকবে। এই হয়ত শেয়ার বাজারের নিয়তি। বিনিয়োগকারীদের কপাল মন্দ!

২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর পুঁজি বাজারে দেশের সবচেয়ে বড় ধসের পর আড়াই বছর পার হয়ে গেলেও এখনো বাজার স্বাভাবিক হয় নি। এই সময়ে বাজারকে স্থিতিশীল করতে বাংলাদেশ ফান্ড গঠনসহ বেশ কয়েকটি প্রনোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আড়াই বছরে কখনো থেমে থেমে আবার কখনো একটানা ধসের কারণে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী হয়েছেন নিঃস্ব। 

বাজারকে কেন্দ্র করে একটি চক্র প্রতারণার জাল ফেলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ। আর এ চক্র এতটাই শক্তিশালী যে তাদের কিছু কিছু লেনদেনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসার পরেও তারা সব সময় থেকে গেছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এমনটি বহুল আলোচিত  খন্দকার ইব্রহিম খালেদের তদšত্ম রিপোর্টে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও নেয়া হয় নি কোন ব্যবস্থা। তারপরেও আশায় বুক বেধে প্রতিনিয়তই বিনিয়োগ করছেন সাধারণ মানুষ। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের পরামর্শমত মৌলভিত্তিক শেয়ার ক্রয় করেও লোকসানের হাত থেকে রেহায় পায়নি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ব্যাংককে অন্যতম শক্তিশালী মৌলভিত্তিক শেয়ার বলা হলেও ২০১২ সালের শেষে এই সেক্টরই দিয়েছে সবচেয়ে কম লভ্যাংশ। এতে হতাশ হয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
 
এত অনিশ্চয়তার মাঝেও আসছে নির্বাচনী বাজেটে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি পুশিয়ে নিতে বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করবে সরকার। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এমন আশা নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুণছে। গত ২৯ মে পুঁজি বাজারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৯’শ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণায় আশায় বুক বেধেছে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। তবে এ ঘোষণার পরদিন বাজারের সূচক বেড়েছে মাত্র ২২ পয়েন্ট। 

বিনিয়োগকারী ও বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসব প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে বাজার স্থিতিশীল করা সম্ভব নয়। এজন্য বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা ও সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটাতে হবে। বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি একে এম মিজানুর রহমান চৌধুরী আমাদের সময় ডটকমকে অভিযোগ করে বলেন, অতীতে বাজেটে বাজার স্থিতিশীল করতে সরকার  প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করলেও তা বা¯ত্মবায়ন করা হয় নি। তাই এবারের বাজেটে যে প্রণোদনাগুলো দেয়া হবে তা যেন সঠিকভাবে বা¯ত্মবায়ন হয়। 

শেয়ার বাজার স্থিতিশীল করতে প্রত্যেক শেয়ারের দাম কমার ক্ষেত্রে একটি সার্কিট ব্রেকার ও অšত্মত ১০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার দাবি জানান বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি। 

সরকারের শেষ বছর ও নির্বাচনী বাজেটকে ঘিরে শেয়ার বাজার স্থিতিশীল হতে পারে বিনিয়োগকারীদের এমন আশায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সহ-সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেছেন, সরকারের সদিচ্ছার কোন অভাব না থাকলে বাজার অবশ্যই চাঙ্গা হবে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ আমাদের সময় ডটকমকে বলেছেন, বর্তমানে বিনিয়োগের অত্যšত্ম সুন্দর পরিবেশ থাকলেও ক্রমাগত বাজার নিম্নমুখি হওয়ার কোন কারণ পাওয়া যায় না। এ বিষয়ে অনেক অভিজ্ঞ বাজার বিশ্লেষকরাও কোন কারণ খুঁজে পাননি। বাজারের প্রতি বিনিয়োগাকারীদের আস্থা না থাকায় তা স্থিতিশীল হচ্ছে না বলে মনে করেন তিনি। এজন্য বিভিন্ন সময় নেয়া সিদ্ধাšত্ম বা¯ত্মবায়ন না করাকেই দায়ী করলেন ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ। তিনি বলেন, বাজারকে স্থিতিশীল ও বিনিয়োগাকারীদের আকৃষ্ট করতে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে। স্বল্প সময়ের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে বাজার ধরে রাখা সম্ভব নয়। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে ব্যাংক আমানতের ওপর লভ্যাংশ কমানোর পরামর্শ দেন তিনি।   

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন