টেকনাফে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা বহাল তবিয়তে

সংবাদ দাতা: বহাল তবিয়তে রয়েছে টেকনাফের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা । ঈদকে সামনে রেখে ইয়াবা ক্রয়-বিক্রয় করতে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা মরিয়া হয়ে উঠেছে । মটর সাইকেল ও নোয়া নিয়ে ইয়াবার চালান নিয়ে প্রকাশ্যে আসা-যাওয়া করলেও তাদের বিরুদ্বে মূখ খুলতে পারছেনা কেউ ।  
টেকনাফে প্রতিটি গ্রামে দিনে ও রাতে মটর সাইকেল ও বিভিন্ন নামিদামী গাড়ীতে ইয়াবা বহন করে ব্যবসা করে যাচেছ শত শত ব্যক্তি। এমনকি যারা এলাকার মেম্বার,চেয়ারম্যান ও সর্দার রয়েছে,তারাও ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেনা । অনেক এলাকায় জন প্রতিনিধিরাও এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে । ফলে টেকনাফের প্রতিটি অলিগলি ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দখল হয়ে আছে । স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দপ্তর যাদের নিয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তালিকা করেছে,এ সব তালিকার বাহিরে শত শত ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছে । বর্তমানে তালিকা ভূক্ত অভিযুক্তদের চেয়ে তালিকার বাহিরে যারা রয়েছে,তারাই খুববেশী সক্রিয় হয়ে উঠেছে ।  বর্তমানে টেকনাফ উপজেলা বিভিন্ন এলাকার ইয়াবা ব্যবসায়ীরা শতাধিক ইটের পাকাঁবাড়ী নির্মান করছে । অথচ এরা সরকারী কোন তালিকায় নেই । এরা ইয়াবার ব্যবসা করে কি ভাবে ইটের বাড়ী নির্মান করে যাচেছ,কেন তাদের কেউ বাঁধা প্রধান করছেনা তা জনমনে ব্যাপক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে । টেকনাফ অনেক যুবক রয়েছে যাদের কোন বৈধ উপার্জন নেই অথচ রেজিস্ট্রেশনবিহীন নতুন ও পুরাতন মটর সাইকেলে চড়ে বেড়ান- এরা ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারে জড়িত ।  আশংকা প্রকাশ করা হচেছ, ইয়াবা ট্যাবলেট সরবরাহে জড়িত মাদক ব্যবসায়ীদের এ মুহুর্তে প্রতিরোধ করতে না পারলে এদেশের যুব সমাজ অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইয়াবার কারখানা, ইতিহাস, পাচারের কৌশল ও রোড স¤পর্কে নথিতে উল্লেখ করেছে, ইয়াবা ট্যাবলেটের উৎপাদন স্থল হল, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায়। পূর্ব মিয়ানমারের শান প্রদেশের এক সময়কার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ওয়া আর্মি আশির দশকে মিয়ানমার সরকারের সাথে স¤পাদিত চুক্তির পর হতে প্রকাশ্যে ইয়াবা ট্যাবলেট উৎপাদন শুরু করে। মিয়ানমারের মংডু এলাকায় ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরীর ৪/৫টি কারখানায় শুধুমাত্র বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরী করা হয় বলে জানানো হয়।  বাংলাদেশে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারের রোড থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্ত হয়ে আকিয়াব-মংডু দিয়ে টেকনাফ ও মহেশখালী হয়ে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের মংডু হতে বিভিন্ন প্রকার ফিশিং বোট ও কাঠের বোটের মাধ্যমে টেকনাফেরস্থলবন্দর,শাহপরীরদ্বীপ,
মাঝরপাড়া, জালিয়াপাড়া, ট্রানজিট ঘাট, নাইট্যংপাড়া, নয়াপাড়া,টেকনাফ নাজির পাড়া,মৌলভীপাড়া,নিলা চৌধুরীপাড়া সহ টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে আনা হয়। বোরকা পরিহিত মহিলা, বর্মী চোরাকারবারি, দাঁড়ি টুপিওয়ালা মৌলভী, প্যান্ট শার্ট পরা ভদ্র লোক মটর সাইকেল, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার অথবা পাবলিক যানযোগে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম কিংবা ঢাকায় ইয়াবা ট্যাবলেট সরবরাহ করে থাকে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইয়াবা পাচার প্রতিরোধে ৪টি সুপারিশও করেছে। সুপারিশসমূহ হল: (ক) সামাজিক প্রতিরোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে জনসচেতনতা তৈরীতে প্রচার মাধ্যমগুলোকে এগিয়ে আসার জন্য তথ্য ও গণযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা যেতে পারে, (খ) ইয়াবা ট্যাবলেট ব্যবসা ও পাচারে জড়িতদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় এনে দন্ড প্রদান করা যেতে পারে, (গ) সীমান্ত এলাকায় বিজিবিসহ অন্যান্য আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো তৎপরতার সাথে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া যেতে পারে এবং (ঘ) ইয়াবা ট্যাবলেটসহ অন্যান্য মাদক পাচারকারী ও ব্যবসায়ীদের জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন ও আটককৃতদের জামিন না দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। বিভিন্ন সূত্র জানায়, ইতি মধ্যে কৌশলে ইয়াবা ব্যবসা করে যারা জিরো থেকে হিরো ও লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক হয়েছে তারা হল-টেকনাফ নিলা ইউনিয়নের লেদা গ্রামের নুরুল হুদা(২৮),পূর্বশিকদার পাড়ার শমশু আলম(৪১)প্রকাশ বার্মাইয়া শমশু,মাসুদ,বাজার পাড়ার রুসতম(৩৪),নির্মল ধর(৫১),জাহাঙ্গীর আলম ও রবিউল আলম,ফুলের ডেইলের আলী নেওয়াজ,আবু তৈয়ুব,বাবুল ও জুলফিকার । সিকদার পাড়ার রশিদ কুলু,চৌধুরী পাড়ার ছৈয়দ আহাম্মদ,রসতমও আবদুস সালাম,সদর ইউনিয়ন,লেঙ্গুর বিলের মোস্তাক(৩১),দিদার(২৯),হাবির পাড়ার রশিদ(২৮),মৌলভী পাড়ার একরাম(২৬),আবদুর রহমান(২৭),আঃগনি(৩১),ডেইল পাড়ার মৌলভী বোরহান(৫৮),মোঃ আমিন(২৮),মোঃ শফিক(২৭),মোঃ রফিক(২৭),নাজির পাড়ার নুরুল হক ভূট্রো(২৮),আকতার হোসেন(২৮),গুরা মিয়া(২৯),মোঃআলী(৩২),নুর মোহাম্মদ(৩১),পৌরসভার পুরাতন পল্লান পাড়ার শাহ আলম(৩৫),ইসমাইল(৩২),নাইট্যং পাড়ার রফিক(৩৪) জালিয়াপাড়ার সিরাজ মিয়া, জাদিমুরার আবদুল হাসান, চৌধুরী পাড়া জহির নাজির পাড়ার, আব্দুর রহমান,হারিয়াখালী ইব্রাহিম,নাইট্যং পাড়া, নূর মোহাম্মদ,ইসলামাবাদের রহমত উল্লাহ(২৮)। স্থানীয়রা মনে করেন যে এলাকায় বেশী ইয়াবা ব্যবসা চলে ও হাত বদল হয়,সে এলাকায় যদি প্রশাসনের লোক সিভিল পোষাকে একজন সাধারন মানুষের মত যে কোন একটা কাজ করে দুই এক মাস অবস্থান করে,প্রশাসন তাহলে টেকনাফে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করতে পারবে বলে মনে করেন ।  এছাড়া ইয়াবার ব্যবসা করে টেকনাফে যারা বাড়ী,গাড়ী ,জমিক্রয় ও বিভিন্ন কাজ করছে,তাদেরকে তালিকা ভূক্ত করার আহবান জানান এলাকার সচেতন মহল ।