আপাতত রাজনীতিতে নয় জোবাইদা

বেঙ্গলিনিউজ: বেশকিছু দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল রাজনীতিতে আসছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের পুত্রবধূ ডা.জোবাইদা রহমান। এ জন্য লন্ডন থেকে বছরের মাঝামাঝিতে স্বামীকে নিয়ে দেশে ফেরার কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে মত পাল্টান বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী। এখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও খুব একটা স্থিতিশীল নয়।
সরকারের শেষ সময়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে রাজনৈতিক সহিংসতা চরমে পৌঁছেছে। অন্যদিকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। তাই সহসাই তাদের দেশে ফেরা হচ্ছে না বলে ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।


বিএনপির একটি অংশ অনেকদিন থেকেই চাইছেন ডা. জোবাইদা রাজনীতিতে আসুন। এ ব্যাপারে ডা. জোবাইদারও ইচ্ছে আছে। কিন্তু তার ইচ্ছের চেয়ে শাশুড়ির (খালেদা জিয়া) সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিচ্ছেন তিনি। তাছাড়া ডা. জোবাইদা এখনও সরকারি চাকরিতে আছেন। নিয়ম অনুযায়ী চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার তিনবছর পর রাজনীতিতে সক্রিয় হতে পারবেন। তাই এখনই রাজনীতি করার সুযোগ নেই তার।


দলের একাধিক সিনিয়র নেতা মনে করেন, জোবাইদা রহমানের ব্যক্তি ইমেজ ভাল। তাছাড়া প্রয়াত বিএনপি নেতা মাহবুব আলী খানের মেয়ে হিসেবে পারিবারিকভাবে রাজনীতির সঙ্গে বেড়ে ওঠা। বিভিন্ন সামাজিক কার্মকাণ্ডেও তিনি যুক্ত ছিলেন। তিনি রাজনীতিতে আসলে ভাল করবেন।তবে এখনও বেগম জিয়া সুস্থ আছেন। তিনি ভালভাবেই দল চালাচ্ছেন। তাই আপাতত জিয়া পরিবারের পুত্রবধূর রাজনীতিতে আসার প্রয়োজন খুব একটা নেই বলে মনে করেন দলের নেতারা।


তবে একটি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির একটি অংশ বেশকিছুদিন ধরেই জোবাইদা রহমানকে রাজনীতিতে আনার জন্য চেষ্টা করছেন। তারা বিএনপি চেয়ারপারসনকেও এ ব্যাপারে প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেছেন-সময় হলে তাদের ইচ্ছে পূরণ হবে।


এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। দলের জন্য যারা কাজ করেন দল তাদের গুরুত্ব দেয় এবং ভবিষ্যতেও দেবে। ধীরে ধীরে তরুণরা ক্ষমতায় আসবেন। ডা. জোবাইদা রহমানের বাবা বিএনপির রাজনীতি করে গেছেন। তিনি যদি তার বাবার আদর্শকে ধারণ করতে পারেন তবে রাজনীতিতে জনপ্রিয়তা পাবেন। তাছাড়া জিয়া পরিবারের আশীর্বাদ তো তার সঙ্গেই আছে।


ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়,তারেক রহমান চাইছেন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির আগে মায়ের পাশে থাকতে। সরকারের মন্ত্রিসভা অক্টোবরের ২৫ তারিখ পদত্যাগ করবে। তার পরই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমান।


জোবায়দা রহমান অসুস্থ তারেক রহমানের চিকিৎসার জন্য ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লন্ডনে যান। যাওয়ার আগে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওএসডি কর্মকর্তা হিসেবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এমডি কার্ডিওলজি কোর্সে অধ্যয়নরত ছিলেন জোবায়দা রহমান।


প্রয়াত নৌবাহিনী প্রধান রিয়াল এডমিরাল মাহবুব আলী খানের ছোট মেয়ে ডা. জোবায়দা দেশের রাজনীতিতে পরিচিত মুখ না হলেও ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে তারেক রহমান, আরাফাত রহমান কোকো ও খালেদা জিয়া কারাগারে গেলে এই পরিবারের দেখভাল করতে গিয়ে প্রকাশ্যে আসেন। সেসময় স্বল্পভাষী এ রমণী সবার নজর কাড়েন।