২৩০ কিমি বেগে আঘাত হানবে পাইলিন

ডেস্ক রিপোর্ট : ঘূর্ণিঝড় পাইলিন শনিবার সন্ধ্যার দিকে ভারতের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে। বঙ্গোপসাগরে ধীরে ধীরে শক্তি জোগাচ্ছে পাইলিন। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ভারতের পূর্ব উপকূলীয় উড়িষ্যা ও দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় অন্ধ্র প্রদেশে আঘাত হানার সময় ঝড়টির বেগ থাকবে ২৩০ কিলিমিটার ঘণ্টার। তবে বাংলাদেশ আঘাত হানবে কিনা তা স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।
কয়েক ঘণ্টা আগে ভারতের আবহাওয়াবিদরা বলেছিলেন, ২০৫ থেকে ২১৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে পারে ঝড়টি। ঝড়টি আঘাত হানলে এর ভয়াবহতা ১৯৯৯ সালে উড়িষ্যায় আঘাত হানা ঝড়কে ছাড়িয়ে যাবে।

ভারতের একটি সংবাদ মাধ্যম বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ২০০ থেকে ২১০ কিলোমিটার ঘণ্টা গতি বেগে এগুচ্ছে ঝড়টি। 
ঝড়টি বাংলাদেশে আঘাত হানবে কিনা-এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোতে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তবে সতর্কতা হিসেবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্র বন্দর সমূহকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে ঝড়টি অন্ধ্রপ্রদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ভিসাক্ষাপাটনাম থেকে এক হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করেছে বলে জানিয়েছে ভারতের একটি সংবাদ মাধ্যম।

বৃহস্পতিবার রাতে পাইলিনের অবস্থান ছিল দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় পারাদিপ থেকে ৬৫০ কিলোমিটার, গোপালপুর থেকে ৭০০ কিলোমিটার এবং পূর্ব-দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় কলিঙ্গপাটনাম থেকে ৭০০ কিলোমিটার দূরে।

অন্ধ্র ও উড়িষ্যায় মুষলধারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নিচু অঞ্চলের লোকজনদের উচু স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। দুই প্রদেশে শনিবারও প্রচ- বৃষ্টিপাত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাইলিন মোকাবেলায় আগাম সতর্ক ব্যবস্থা নিচ্ছে অন্ধ্র ও উড়িষ্যা প্রদেশ সরকার। 

উড়িষ্যা সরকার প্রতিরোধমূলক কাজ শুরু করেছে। ডিজাস্টার ৠাপিড অ্যাকশন ফোর্সকে মাঠে নামিয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রিপরিষদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী। কর্তৃপক্ষকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

জেলা প্রশাসকদের স্যাটেলাইট ফোন দেওয়া হয়েছে যেন সরকারের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ব্যাহত না হয়।

উড়িষ্যার ১৪টি জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের পূজার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এসব জেলা হচ্ছে-পুরি, খুরদা, নয়াগঢ়, গঞ্জম, বালাসোর, ভাদরাক, ময়ূরভঞ্জ,কেওনঝাড়, ধেনকানাল, জাজপুর, কুটাক, কেন্দ্রাপাড়া, জগৎসিংপুর ও গাজাপাতি।

ঘূর্ণিঝড় প্রবণ পুরি, কেন্দ্রাপাড়া, জগৎসিংপুর, ভাদরাক, বালাসর, গঞ্জমসহ জেলা সদরগুলো ২৪ ঘণ্টা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করেছে রাজ্য সরকার। এসবের সমন্বয় করা হচ্ছে ভুবনেশ্বরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে।

তেলেঙ্গানাকে পৃথক রাজ্য হিসেবে অনুমোদনের প্রতিবাদে অন্ধ্র প্রদেশের বনধ স্থগিত ঘোষণা করেছে আন্দোলনকারী। তারা কাজে যোগ দিয়েছেন। রাজ্যের সীমান্ধারা ১৩ জেলায় বনধের কারণে ৬ দিন থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন।

দুই প্রদেশে ঝড় পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা কাজের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে হয়েছে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীকে।

এদিকে ঝড়টি বাংলাদেশে আঘাত হানবে কিনা তা নিশ্চিত নয়। বাংলাদেশ উপকূল থেকে বেশ কয়েক হাজার কিলোমিটার দূর থেকে উড়িষ্যা ও অন্ধ্র প্রদেশের দিকে এগুচ্ছে ঝড়টি। 

খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মুজিবুর রহমান শুক্রবার পৌনে ১১টার দিকে জানান, ২ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গভীর ও অগভীর সমুদ্রে অবস্থানরত জেলেদের সতর্কভাবে চলার জন্য বলা হয়েছে। বাংলানিউজ 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন