ইন্টারনেটে ডিগ্রি

ডেস্ক রিপোর্ট : ইউনিভার্সিটি অফ দ্যা পিপল, এটি বিশ্বের প্রথম অনলাইনভিত্তিক বিনা বেতনের বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৯ সালে বিনাবেতনের  ধারণা নিয়ে এর কার্যক্রম শুরু হয় একটি প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে। এটি একটি অনলাইনভিত্তিক অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে বেতন নেওয়া হয়না। যারা এখানে পড়তে চান, অধ্যাপকরা তাদের জন্য সময় দেন। এখন, চার বছর পর যখন এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম কেউ ডিগ্রি লাভ করতে যাচ্ছে, তখন একটি প্রশ্ন উঠতেই পারে। একটি বিনাবেতনের অনলাইর ডিগ্রির মূল্য কতটুকু? 

৩৩ বছর বয়স্ক আলি প্যাট্রিক ইড আশা করছেন এই ডিগ্রি তাকে একটি নতুন চাকরির কাছে নিয়ে যাবে। ডেবি টাইম জানুয়ারীতে ‘ব্যচেলর ইন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ ডিগ্রি লাভ করতে যাচ্ছেন। তারপর তিনি জুয়েলারী ব্যবসা শুরু করার আশা করছেন। তার বয়স এখন ৪৮ বছর। তিনি ফ্লোরিডা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে অফিস সহকারি হিসেবে কর্মরত আছেন।
“ডিসটেন্স এডুকেশন” এর ধারণা প্রবর্তিত হওয়ার পর অনলাইন শিক্ষা নতুন একটি পথে এগিয়ে গিয়েছে। অসংখ্য প্রতিষ্ঠান এখন অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এদের মধ্যে একমাত্র ইউনিভার্সিটি অফ দ্যা পিপল ডিগ্রিসহ বিনাবেতনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

ইউনিভার্সিটি অফ দ্যা পিপল এর প্রতিষ্ঠাতা সাই রেশেফ বলেন- প্রচলিত খরচের কমেও যে পড়ালেখা করা যায়, আমরা তারই একটি মডেল তৈরি করতে চাচ্ছি। আমাদের বাৎসরিক বাজেট এক মিলিয়ন ডলার। আমাদের ১৪জন বেতনভুক্ত কর্মচারি এবং ৩০০ সেচ্ছাসেবক আছেন। 

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আমাদেরকে সাহায্য করেন। এদের মধ্যে হিউলেট, দ্যা গেটস ফাউন্ডেশন ও কারিনি্িজ কর্পোরেশন অন্যতম। আমাদের এখানে দরখা¯ত্ম করার জন্য ১০ ডলার থেকে ৫০ ডলার লাগে এবং প্রতিটি পরীক্ষা দিতে লাগে ১০০ ডলার। বৃত্তির ব্যবস্থাও রয়েছে।

সাই রেশেফ, তিনি ্একজন ইসরায়েলী ব্যবসায়ী। তিনি এ পর্যšত্ম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য খরচ করেছেন ৩.৫ মিলিয়ন ডলার।

তিনি বলেন- আমরা সবচেয়ে সহজলভ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। আমাদের এক চতুর্থাংশ শিক্ষার্থীর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ নেই, তাই তারা ভিডিও দেখতে পারেনা। ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। তাই আমাদের শিক্ষা উপকরণ টেক্সট ভিত্তিক।

ইউনিভার্সিটি অফ দ্যা পিপল খুব বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে একসাথে শিক্ষা প্রদান করেনা। এখন তাদের বিশ্বের ১৩৭ দেশের প্রায় ১৫০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের মধ্যে ৭৩৬ জন সক্রিয় আছেন।

২০১৪ সালের মধ্যে ১৭জন ব্যাচেলর ডিগ্রি লাভ করবেন। আলি প্যাট্রিক ইড ও ডেবি টাইম তাদের মধ্যেই আছেন। আরো ৩১ জন অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি লাভ করবেন।

এখনো প্রচুর আগ্রহী রয়েছেন। গত শিক্ষাবর্ষে ৪৪,০০০ এর বেশি আগ্রহী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যোগাযোগ করেছে। মাইক্রোসফট ১০০০ আফ্রিকান শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বৃত্তির ঘোষণা করেছে, তারপরেই তাদের সাথে যোগাযোগ করে ১৫০০০ আগ্রহী।

একটি বড় ব্যাপার হচ্ছে, চাকুরিদাতারা একটি অনলাইন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কিভাবে গ্রহণ করছেন।  ইউনিভার্সিটি অফ দ্যা পিপল এখনো তাদের পূর্ণ স্বীকৃতির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ৬৫৬ জন প্রতিষ্ঠানের উপর করা একটি সমীক্ষা গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত হয়।এতে দেখা গেছে ৮০ শতাংশ অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থাকে মর্যাদার সাথেই দেখছেন, বিশেষ করে বয়স্ক শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে। আবার ৫৬ শতাংশ মত দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপারে।

প্যাট্রিক ইড তার অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি নিয়ে চাকুরির ইন্টাারভিউ এর জন্য গেলে সেখানে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তাদের মধ্যে কেউ এর ব্যাপারে কখনো কিছু শোনেননি এবং এটা একটা প্রতারণা হতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন। আবার কেউ এটাকে খুবই পছন্দ করেছেন। নিউ ইয়র্ক টাইমস

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন