চকরিয়ায় গুলিতে নিহত জাকেরের দাফন সম্পন্ন, জানাজায় জনতার ঢল

চকরিয়া প্রতিনিধি: চকরিয়া উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের বানিয়ারছড়া গ্রামের আলহাজ্ব আব্বাছ আহমদের পুত্র আবদুল হালিমের ২য় নামাজে জানাজা শেষে পৌর বাসটার্মিনাল থেকে লাশ নিয়ে মিছিল সহকারে বাড়ি ফেরার পথে গত ২৯নভেম্বর পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষ পরবর্তী চিরিংগা বায়তুশ শরফ রোডের মাথা এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত জাকের হোসেনের দাফন গতকাল ৩০নভেম্বর বিকেলে সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের নামারচিরিংগা মিয়াজীপাড়া গ্রামের মৃত আকবর আহমদের তৃতীয় পুত্র জাকের হোসেন ঘটনারদিন বিকেলে বাড়ির বাজার করার জন্য বের হলে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত অবস্থায় দিক-বেদিক উপর্যপুরী গুলি বর্ষণ করলে রাস্তার ধারে দাঁড়ানো অবস্থায় তার মুখের সামনের অংশ দিয়ে গুলি লেগে পীছন দিয়ে বের হয়। গুলি লাগার পর বায়তুশ শরফ রোডের ভেতর দিকে হেটে আসার পর অতিরিক্ত রক্ষ ক্ষরণ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চকরিয়া জমজম হাসপাতালে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু বরণ করে। ঘটনার পর সন্ধা ৭টার দিকে কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো: খালেদ উজ জামান,চকরিয়া থানার ওসি রনজিত কুমার বড়–য়া ও ওসি (তদন্ত) নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ দল নিহত জাকের হোসেনের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ওইদিন রাত অনুমানিক ১২টার দিকে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। গতকাল ময়না তদন্ত শেষে বিকাল ২টার দিকে নিহতের লাশ বাড়িতে পৌছলে স্বজনদের কান্নায় আকাশ বাতাশ ভাড়ি হয়ে উঠে। স্ত্রী,সন্তান-সন্ততী ও আত্মীয় স্বজনরা আত্মচিৎকার করেন নিহত জাকের হোসেন (৪৮) কোন সময় কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেননা, কোন সভা-সমাবেশে যাননি, এরপরও কেন তাকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। এর বিচার তারা মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে কামনা করেন। স্থানীয় লোকজন তাদের কান্না থামাতে বিভিন্নভাবে শান্ততা দিতে চেষ্টা করেন। নিহত জাকের হোসেনের সংসারে ১স্ত্রী, ৫কন্যা ও ১ছেলে, বৃদ্ধা মা রয়েছে। সংসারের একমাত্র উপার্যনের ব্যক্তি ছিলেন তিনি। বর্তমানে এ সংসারের দায়ভার কে নেবে? কার কাছে গিয়ে আশ্রয় নেবে তারা। কেন কেড়ে নেয়া হলো তার তাজা প্রাণ, জাতীর কাছে পরিবার পরিজন, এতিম ও বিধবা স্ত্রীর একমাত্র প্রশ্ন। এদিকে ৩০নভেম্বর বিকাল ৪,৩০ঘটিকায় নামারচিরিংগাস্থ পুরাতন জামে মসজিদ ময়দানে মরহুম জাকের হোসেনের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় শোকাহত হাজার হাজার জনতা দল মত নির্বিশেষে উপস্থিত হয়ে নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। জানাজা পূর্ব হেদায়তী ধর্মীয় বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ মাওলানা কফিল উদ্দিন ফারুক ও পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের ছোট ভাই আমির হোসেন ও ভাতিজা সাংবাদিক আবদুল মজিদ এবং নামাজে ইমামতি করেন আলহাজ্ব মাওলানা কুতুব উদ্দিন হেলালী। এদিকে বিভিন্ন পেশাজীবি ও সামাজিক সংগঠন এবং এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নির্মম এ হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার,দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও বিচার দাবী করেছেন। অন্যথায় সুষ্ঠু বিচার করা না হলে ভবিষ্যতে আরো অনেক নিরীহ ব্যক্তির নির্মম কায়দায় যান কেড়ে নিয়ে পরিবার পরিজনকে একইভাবে এতিম হয়ে দু:খে কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করতে হবে।
ঘটনার বিষয়ে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রনজিত কুমার বড়–য়া জানান, জাকের হোসেন হত্যাকান্ডের সাথে থানা পুলিশ জড়িত নয়। কেবা কারা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে এ জন্য তদন্ত করা হচ্ছে। এরপরও ক্ষতিগ্রস্ত ও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিভত অভিযোগ পেলে মামলা হিসেবে নেয়ার আশ্বাস দেন। তিনি লাশ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালের মাধ্যমে ময়না তদন্তের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন