ফাস্টফুড’র দোকানে ভেজাল গুঁড়োদুধের মিষ্টি দই

শহর প্রতিনিধি: কক্সবাজার শহরের ফাস্টফুড’র দোকান গুলোতে বিক্রি হচ্ছে নিম্নমানের, জনস্বাস্থ্যের ক্ষতিকর ভেজাল গুঁড়ো দুধের মিষ্টি-দই। আর এসব ভেজাল গুড়োদুধের মিষ্টি এবং দই খেয়ে স্বল্পমেয়াদী ব্যাকটেরিয়াজনিত ল্যাক্টোবিসিলাম রোগে আক্রান্ত ও খাদ্যে বিষক্রিয়া, পেটের পীড়া, কিডনির জটিলতা, রক্তের সংক্রমণ, যকৃতের সংক্রমণ এবং দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। আবার শিশুরা যদি এসব গুড়ো তৈরী মিষ্টি ও দই খায় তাহলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এবং মা-বাবারা খেলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিশ্লেষকের ধারণা। সরেজমিনে পরিদর্শনে জানা গেছে, ফাস্টফুড ও মিষ্টির দোকানে বিএসটিআই’র অনুমোদনহীন গুঁড়ো দুধ দিয়ে তৈরী হয় মিষ্টি ও দই। এক শ্রেণীর প্রতারক আমদানীকারকদের কাছ থেকে সস্তায় মেয়াদোত্তীর্ণ ও মানহীন গুঁড়োদুধ কিনে নেয় কক্সবাজারের মিষ্টির দোকানদার আর ফাস্টফুডের মালিকেরা। এ গুঁড়ো দুধের তৈরী মিষ্টি দই দেদারছে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। আবার খোলা রাস্তার পাশে বগুড়ায় তৈরী মিষ্টি দই বলে ভেজাল দই বিক্রি করছে প্রতারকেরা। সরল বিশ্বাসে এসব খেয়ে সাধারণ মানুষ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ জনিত ল্যাক্টোব্যাসিলাস, খাদ্যে বিষক্রিয়া, পেটের পীড়া, কিডনির জটিলতা, যকৃতির সংক্রমণ, শারীরিক প্রতিকূলতাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দীর্ঘদিন ধরে খাদ্যের নামে এসব বিষাক্ত দ্রব্য গ্রহণ করার ফলে মারাত্মক শারিরীক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে মানুষের। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা না করায় এসব ভেজাল গুড়ো দুধের তৈরী মিষ্টি, দই বহাল তবিয়তে বিক্রি করছে অসাধু ও মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা। বিএসটিআই’র সূত্রে জানা যায়, স্বাদের মিষ্টি দই তৈরী করতে হলে প্রথমে বিএসটিআই’র অনুমোদন, তৈরীকৃত পণ্যের তরল দুধের পরিমান শতকরা স্ট্যান্ডার্ড লিমিট ৩.০০ (মিনিমাম), মিল্ক সলিডস নন ফ্যাট কনটেন্ট শতকরা হিসেবে ৮.২০ মিনিমাম, লাইভ কালচার চিনি ইত্যাদির প্রয়োাজন এবং ওই দইয়ের বাজারজাত করতে হলে পণ্যের উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ, ওজন, মিশ্রণ প্রক্রিয়া, বিএসটিআইয়ের মান সনদের নাম্বার মোড়কজাত পণ্যের গায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লেখা থাকতে হবে। এসবের কোনটা উল্লেখ না থাকলে কিংবা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশী নিলে বিএসটিআই’র আইন অনুযায়ী জরিমানার বিধান রয়েছে। কক্সবাজারের প্রায় সবক’টি ফাস্টফুড ও মিষ্টির দোকানে আইনকে অমান্য করে প্লাস্টিকের কৌটা ও মাটির কৌটায় করে ভেজাল গুঁড়ো দুধের তৈরী দই নিজস্ব উৎপাদন এবং কোন কোন ফাস্টফুড ও মিষ্টির দোকানে বগুড়ার তৈরী মিস্টি দই বলে দেদারছে বিক্রি করছে কতিপয় অসাধু ও মুনাফালোভী ব্যবসায়ী।

সূত্রে জানা যায়, মিষ্টি ও মিষ্টি দই তৈরীতে তরল দুধের বিকল্প নেই। অথচ কক্সবাজার জেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোন খামার গড়ে না ওঠায় বিদেশ থেকে প্লাস্টিক বস্তা ভর্তি নিম্মমানের ভেজাল গুড়ো দুধ আমদানী করে অসাধু ব্যবসায়ীরা। আমদানীকৃত নি¤œমানের গুড়ো দুধের তৈরী মিষ্টি ও দধি বিএসটিআই’র অনুমোদন ছাড়া বাজারজাত করে আমজনতাকে বোকা বানিয়ে নিজেদের ফায়দা লুটছে। আর সচেতনতার অভাবে কক্সবাজার জেলার মানুষ এসব খেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সচেতনরা মনে করেন

বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানীকৃত অবৈধ ও নি¤œমানের গুড়ো দুধে রয়েছে বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় পদার্থ যা স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে আনা হয় না এবং এসব গুড়ো দুধে গুণগত মান বজায় থাকেনা। এসব অবৈধ ভাবে গুড়ো দুধের তৈরী দই খেয়ে শিশুদের বিকলাঙ্গ, বৃদ্ধি প্রতিবন্ধী হিসেবে মারাত্মক ক্ষতিকর রোগ সৃষ্টি করতে পারে। এসব গুড়ো দুধের তৈরী মিষ্টি ও দই খেলে স্বল্পমেয়াদী ব্যাকটেরিয়াজনিত ল্যাক্টোবিসিলাম রোগে আক্রান্ত ও খাদ্যে বিষক্রিয়া, পেটের পীড়া, কিডনির জটিলতা, রক্তের সংক্রমণ, যকৃতের সংক্রমণ এবং দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে পারে। আবার শিশুরা যদি এসব গুড়ো তৈরী মিষ্টি ও দই খায় তাহলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এবং মা-বাবারা খেলে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হতে পারে। এ থেকে বাঁচতে হলে বিশুদ্ধ তরল দুধের খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি এসব অবৈধভাবে গুড়ো দুধের তৈরী মিষ্টি ও দই বর্জন করতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন