মন্ত্রিসভায় অধিকাংশই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত

আবু সাইদ: আওয়ামী লীগসহ ৫টি দলের সংসদ সদস্যদের নিয়ে রোববার মন্ত্রীপরিষদ গঠন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ৪৯ সদস্য বিশিষ্ট নতুন এ মন্ত্রিসভায় থাকছে ওয়ার্কার্স পার্টির ১জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের ১জন, জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) ১জন এবং এরশাদের নেতৃত্বাধিন জাতীয় পার্টির ৩জন সদস্য। কেবলমাত্র তরিকত ফেডারেশন ও বিএনএফ এর ঠাঁই হয়নি নতুন এই মন্ত্রিসভায়।
সংসদে তিন-চতুর্থাংশ আসনের অধিকারী আওয়ামী লীগ আধিপত্যের এই সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসতে হচ্ছে এই ক্ষুদ্র দুটি দলের একজন করে সদস্যকে।

এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় থাকলেও তারা আবার অভিনব কায়দায় বিরোধী দলেরও ভূমিকা পালন করবে। দলটির নেতা রওশন এরশাদকে এরই মধ্যে সংসদের বিরোধী দলের নেতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ১৯৯৬ এর আদলে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে এ সরকার গঠন করা হয়েছে। যদিও ৯৬’এর সরকারের ধরন ছিল বর্তমান সরকারের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। ঐ সরকারে আওয়ামী লীগের বাইরে জাতীয় পার্টির কেবলমাত্র আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও জেএসডির আসম আব্দুর রব মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিলেন। আর বিরোধী দলের আসনে ছিল বিএনপি ও জামায়াত। পরবর্তীতে এরশাদ আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে বললেও মঞ্জু তা প্রত্যাখ্যান করে জাতীয় পার্টি থেকে বের হয়ে পৃথক জাতীয় পার্টি দল গঠন করে।

বর্তমান সরকারের নতুন মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীসহ ২৯জন পূর্ণ মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী এবং ২ জন উপমন্ত্রী রয়েছে। তবে ২৯ জন পূর্ণমন্ত্রীর মধ্যে কেবলমাত্র ৪জন সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সংসদ প্রতিনিধি। আর বাকিরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। এই মন্ত্রিসভায় দুজন টেকনোক্রেট মন্ত্রীও রয়েছেন। এরা হলেন ধর্মমন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইয়াফেস ওসমান। 

৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটাররা কেবলমাত্র সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৪৭ টি আসনে ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছে। আর বাকি ১৫৩ আসনের প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছে। ফলে দেশের অর্ধেকেরও বেশি ভোটার ভোট দেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের  দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধিন ১৮ দলীয় জোটসহ আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই নির্বাচন বয়কট করে। এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংসদে তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। এরমধ্যে দলটির ১২৭জন প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। 

বৃহস্পতিবার দশম সংসদের নবনির্বাচিত সদস্যরা শপথ নিয়ে নিয়ে সংসদের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অথচ ৯ম সংসদের মেয়াদ এখনও বহাল রয়েছে। কিন্তু পূর্ববর্তী সংসদের মেয়াদ থাকা অবস্থায় পরবর্তী সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব গ্রহণের অনুমতি নেই সংবিধানে। তবে এই নির্বাচন ও সরকার গঠন নিয়ে যত বিতর্ক ও যত প্রশ্নই উঠুক না কেন এর মাধ্যমে শেখ হাসিনা তার তিন দশকের রাজনৈতিক জীবনে তিন বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হলেন। দি ডেইলি স্টার

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন