বিলুপ্তি পথে সুস্বাদু বিছাতারা মাছ

ঈদগাঁহ প্রতিনিধি: লোনা পানির সুস্বাদু বিছাতারা (বিশতারা) মাছ ক্রমশঃ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। মাত্র কয়েক বছর আগেও সমুদ্র ও উপকূলবর্তী বিভিন্ন চর এবং নদ-নদী মোহনায় সুস্বাদু এই মাছ প্রচুর ধরা পড়লেও বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন জেলে ও মৎসজীবীরা।
বাইরের সমুদ্র ও চরাঞ্চল ছাড়াও উপকূলীয় বিভিন্ন মৎস্য ও চিংড়ি ঘেরে এ মাছটি প্রচুর উৎপাদন হত। প্রায় চতুর্ভূজ আকৃতির ডোরাকাটা এ মাছ ভূজন রসিকদের কাছে অতি প্রিয়। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের অভিজাত বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরায় ভিআইপি পর্যটকদের উচ্চ দামে পরিবেশন করা হত এ মাছ। বিছাতারা মাছ সারা বছর কম বেশী মিললেও বিশেষ করে চিংড়ি উৎপাদন মৌসুমে (মে-নভেম্বর) পর্যন্ত প্রচুর মিলত। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে বিল্পুপ্ত প্রায় প্রজাতীর তালিকায় উঠার উপক্রম হয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষনা ইনষ্টিটিউটের কক্সবাজার সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, সুস্বাদু এ মাছটি উপকূলীয় এলাকার অগভীর পানিতে প্রজনন ও ডিম ছাড়ে। ডিম নিশিক্ত হয়ে রেনু পুনা বের হওয়ার পর চরাঞ্চলের অগভীর পানিতে নার্সিং পর্যায়ে থাকা সময় বাগদা চিংড়ি পোনা শিকারীদের মশারী জালে আটকে ধ্বংস হচ্ছে বিপুল পরিমাণ রেনু পোনা। উপকূল জুড়ে অবৈধ ভাবে বেআইনি চিংড়িপোনা শিকার অব্যাহত থাকায় অন্যান্য প্রজাতির সাথে বিছাতারা মাছের রেনু পোনাও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ফলে অনিবার্য ভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে সুস্বাদু প্রজাতির এ মাছটি। কক্সবাজার সদরের জালালাবাদ ফরাজী পাড়া এলাকার প্রবীণ মুরব্বি আব্দুল কাদের বলেন, আগে মাছ ধরতে গেলে ঝাঁকি জালের কয়েক ক্ষেপ মারলেই বিভিন্ন প্রজাতীর রকমারী মাছে ডুলা পূর্ণ হয়ে যেত। কিন্তু বর্তমানে সারা দিন জাল মারলেও এক পোয়া মাছ পাওয়া যায়না। আশির দশক থেকে দেশে চিংড়ি চাষ শুরু হওয়ার পর থেকে উপকূল জুড়ে অব্যাহত ভাবে বাগদা চিংড়ি পোনা শিকার করার ফলে অন্য প্রজাতীর শত শত কোটি পোনা ধ্বংস হচ্ছে। অবৈধ পোনা শিকার বন্ধে অবিলম্বে সাঁড়াসি অভিযান পরিচালনার দাবী জানিয়েছেন জেলার সচেতন মহল। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন