কক্সবাজার বিমান বন্দর চকরিয়া ও পেকুয়ায় ব্যাপক সম্বর্ধনা : ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
দীর্ঘ কারাভোগের পর নিজ নির্বাচনী এলাকা কক্সবাজারে এসেই হাজারো জনতার ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ। শুক্রবার দুপুরে তিনি রাজধানী থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করলেই সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন মুহূর্তের।
এর আগে নিজেদের প্রিয় নেতা সালাহ উদ্দিন আহমদ কক্সবাজার আসছেন সংবাদ পেয়ে তার নির্বাচনী এলাকা পেকুয়া-চকরিয়াসহ কক্সবাজার জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাজার হাজার দলীয় নেতাকর্মী জড়ো হতে থাকেন বিমান বন্দর এলাকায়। কক্সবাজার জেলা বিএনপি ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে আসা এসব নেতাকর্মীর সাথে যোগ দেয় স্থানীয় নারী-পুরুষ, শিশুসহ আবাল-বৃদ্ধবনিতা। সালাহ উদ্দিন আহমদ বিমান বন্দর থেকে বের হয়ে যেদিকে গেছেন, সেখানেই রাস্তার দু’পাশে ছিল অসংখ্য তোরণ ও জনতার উপচে পড়া ভিড়। বিমান বন্দরে অবতরণের পর দলীয় নেতাকর্মী ও ভক্তদের ফুলে ফুলে সিক্ত সালাহ উদ্দিন আহমদ নিজেই আবেগ-আপ্লুত হয়ে এসব জনতাকে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান। পরে তিনি উৎসুক জনতার বাঁধভাঙা
স্রোত ডিঙিয়ে হোটেল মেরিন প্লাজায় যান এবং সেখান থেকে বাহারছড়া গোল চত্বর মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। এর আগে বিমান বন্দরে অবতরণ করলে তিনি কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক হুইফ শাহজাহান চৌধুরী, সদর-রামু আসনের সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার সহিদুজ্জামান, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী, সাধারণ স¤পাদক এড. শামীম আরা স্বপ্না ও দৈনিক কক্সবাজারবাণী সম্পাদক ফরিদুল মোস্তফা খানসহ উপস্থিত নেতাকর্মীরা তাঁকে ফুলের মালা দিয়ে স্বাগত জানান। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক স¤পাদক জামিল ইব্রাহিম, দপ্তর স¤পাদক ইউসুফ বদরী, প্রচার স¤পাদক অধ্যাপক আকতার চৌধুরী, জেলা শ্রমিক দল সভাপতি রফিকুল ইসলাম, যুবদল সাধারণ স¤পাদক এম মোকতার আহমদসহ যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দল, জিয়া পরিষদ, কৃষক দল, মৎস্যজীবি দল, তরুণ প্রজন্ম দলসহ কক্সবাজারের হাজার হাজার  সাধারণ মানুষ। 
বিকেল ৪ টায় সালাহ উদ্দিন আহমদ চকরিয়া বাসটার্মিনাল মাঠে তাঁকে দেয়া গণসম্বর্ধনায় যোগদান করেন। সেখানেও কক্সবাজারের এই কৃতি পুরুষকে হাজার হাজার জনতা ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন। সম্বর্ধনা সভায় এতগুলো লোকের উপস্থিতি দেখে আবেগ-আপ্লুত সালাহ উদ্দিন আহমদ প্রথমেই সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, দেশের নব্বই ভাগ মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। কিন্তু বাকশালী শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাকে আকড়ে ধরার জন্য নানা পায়তারা শুরু করে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা সরকার এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উপর নির্যাতন আলেম ওলামাদের উপর গুলি, লাঠিচার্জ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হর্ব করেছে। শাপলা চত্বরে রাতের আধারে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরতা চালিয়েছে। এখন হেফাজতের পায়ে মাথা ঠোকছে। কারণ সম্প্রতি ৪টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলী সরকারের ভরাডুবির পর তারা টের পেয়েছে।
সালাহ উদ্দিন আহমদ উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আর বেশি সময় নেই একটু ধৈর্য্য ধরুণ। আওয়ামীলীগ সরকারের দু:শাসনের জবাব দেয়ার সময় আসছে। সরকারের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, ফখরুদ্দীন মইন উদ্দিনের হাত ধরে  ক্ষমতায় এসে দখলবাজী, চাঁদাবাজী, বোমাবাজী, মামলাবাজী ও পুলিশ দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর গুলি করে নির্যাতনের পরিণাম শুভ হবে না। সময় আসলে এ অত্যচার নির্যাতনের জবাব দেবে জনগণ। তখন আপনাদের পালানোর পথও খোঁজে পাওয়া যাবে না। 
বিরল সম্বর্ধনায় অভিষিক্ত সালাহ উদ্দিন আহমদ এসময় পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা জনগনের চাকর। জনগনের টেক্স নিয়ে আপনাদের বেতন দেয়া হয়। আর সেই জনগনের উপর আপনারা আওয়ামীলীগের কিছু সন্ত্রাসীদের কথায় গুলি চালান। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে এর সঠিক জবাব আপনারা পাবেন। বর্তমান আওয়ামীলীগের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মখা আলমগীরের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার জিব্বা লম্বা হয়ে গেছে দ্রুত চিকিৎসা করে নিন। পরে ডাক্তার দেখার সময় পাবেন না। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার ডিসি, এসপি,এএসপি, ওসি যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী আপনারা যদি ওই লুটতরাজ সরকারের গুটি কয়জন লোকের কথায় যেমন ইচছা তেমন করে জনতার খাতায় নাম উঠান, তাহলে মনে রাখবেন সময় এলে  বাংলাদেশের ৫৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের যেখানেই অবস্থান করেন না কেন, সেখান থেকে খোঁজে এনে জনতা বিচার করতে বাধ্য হবে। 
চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়ার সভাপতিত্বে, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক ফখরুদ্দিন ফরায়েজী এবং উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম.মোবারক আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত গণ সম্বর্ধনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী, সহ-সভাপতি কুতুবদিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী, সহসভাপতি এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, যুগ্ম সম্পাদক আবু ছিদ্দিক ওসমানী, সাংগঠনিক সম্পাদক জামিল ইব্রাহিম চৌধুরী, চকরিয়া পৌরসভা মেয়র ও পৌরবিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম হায়দার, মহেশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দিক, মাতামুহুরী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক একেএম ইকবাল বদরী, বান্দরবার পৌরসভার মেয়র জাবেদ রেজা, লামা পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমির হোসেন আমু ও জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম কাউন্সিলর। 
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরী আবু মিয়া, মোহাম্মদ হোছাইন বিএসসি, আনসারুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল মিয়া, পৌরসভা বিএনপি নেতা এম.আবদুর রহিম, জেলা বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন, জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক কুতুবউদ্দিন কমিশনার, জেলা যুবদলের সমাজকল্যান সম্পাদক এএম আলী আকবর, চকরিয়া উপজেলা যুবদলের সভাপতি নুরুল হক রিটু, সাধারন সম্পাদক আবু ইউছুপ, উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি এসএ জয়নাল আবদিন, পৌরসভা যুবদলের সভাপতি আক্তার ফারুক খোকন, সহসভাপতি ও প্যানেল মেয়র শহীদুল ইসলাম ফোরকান, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মনির, উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মো.জকরিয়া, পৌরসভা ছাত্রদলের সভাপতি মনোয়ার আলম মনুসহ দলের সিনিয়র নেতাকর্মীরাসহ লাখো মানুষ এ বিশাল সম্বর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন। চকরিয়ায় বিরল সম্বর্ধনা শেষে সালাহ উদ্দিন আহমদকে দলীয় হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল, বাদ্যযন্ত্র আর মোটর শুভ যাত্রা দিয়ে পেকুয়ায় নিয়ে যান। জানা গেছে, সেখানেও নিজেদের প্রিয় এই নেতাকে অগণিত নারী-পুরুষ , শিশু ও আবাল-বৃদ্ধবনিতা ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন।