ব্রিটেন যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়স্থল!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অন্তত ৯৯ জন যুদ্ধাপরাধী ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের জন্যে আবেদন করেছে। এদের বিরুদ্ধে হত্যাযজ্ঞের অভিযোগ রয়েছে ইরাক, লিবিয়া, ইরান, আফগানি¯ত্মান ও রুয়ান্ডায়। এদের মধ্যে ৪৬ জনের আবেদন গৃহিত না হওয়ার পর তারা বহাল তবিয়তে ব্রিটেনে অবস্থান করছেন। স্বরাষ্টমন্ত্রণালয় ব্রিটিশ সরকারকে হুশিয়ার করে বলছে, দেশটি যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে। 


গত বছর প্রায় ১শ’ যুদ্ধাপরাধী ব্রিটেনে এসেছে। এবং এ সংখ্যা বাড়ছেই। এরা নিজেদের দেশে বিচার এড়িয়ে যেতে দেশ ত্যাগ করে ব্রিটেনে ঢুকে পড়েছে। কিন্তু ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলছে এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশটি যুদ্ধাপরাধীদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠবে। গত বছর থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যšত্ম ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় অšত্মত ৮শ’ ব্যক্তির তথ্য নিয়ে দেখেছে এরা নিজেদের দেশে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল অথবা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। গত বছর যুদ্ধাপরাধীর সঙ্গে জড়িত থাকায় ৩ ব্যক্তিকে ব্রিটেন থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। বিবিসি’র এক তথ্য অনুযায়ী অšত্মত ১৬ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছে। 

লেবার পার্টির সংসদ সদস্য মাইকেল ম্যাকক্যান যিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে জাতিগত হত্যাকাণ্ড রোধে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন তিনি বলেন, এধরনের তথ্য জানান দিচ্ছে বিষয়টি নিয়ে সরকারের আরো স্বচ্ছতা থাকা উচিত। বিশেষ করে এধরনের যুদ্ধাপরাধীরা ব্রিটেনে আশ্রয় পেতে থাকলে তা দেশটির নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্যে হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। গত মে মাসে ব্রিটেনে রুয়ান্ডায় যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় যাদের বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে ৮ লাখ মানুষ হত্যার অভিযোগ রয়েছে। তবে এদের মধ্যে ২ জন জামিনে মুক্তি পান। ২০০৫ থেকে গত বছর পর্যšত্ম অšত্মত ৭শ’ যুদ্ধাপরাধী ব্রিটেনে ঢুকে পড়েছে। হত্যাযজ্ঞ’র বিরুদ্ধে কাজ করে এমন একটি প্রতিষ্ঠান রেডরেস’এর কর্মকর্তা কেভিন লাউই বলেন, পুলিশের পর্যাপ্ত লোকবল ও তথ্য দরকার যাতে যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে সঠিক তদšত্ম করতে পারে। এজন্যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি বলে তিনি মšত্মব্য করেন।  

মেট্রোপলিটন পুলিশ বিবিসিকে জানিয়েছে সম্প্রতি ৫৬ জনকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যদিও এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় মাত্র ৯ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে কাজ করছে এমন আরেকটি প্রতিষ্ঠান এইজিস’এর পরিচালক ড. জেমস স্মিথ বলেন, যদি যুদ্ধাপরাধীদের ব্রিটেন থেকে বের করে দেয়া সম্ভব না হয় তাহলে তাদের বিচার এদেশেই করার ব্যবস্থা নেয়া দরকার। এব্যাপারে বিদ্যমান আইন অনুসারে উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানান তিনি। 

রুয়ান্ডায় গণহত্যা থেকে বেঁচে আসা  বেথা উওয়াজনিনকা বিবিসি ব্রেকফ্রাস্ট অনুষ্ঠানে বলেন, যুদ্ধাপরাধীরা যেখানে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তাদের সেখানেই বিচারের জন্যে পাঠিয়ে দেয়া উচিত। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন