কক্সবাজারে আলম গেষ্ট হাউসে ১১ সদস্যের ইয়াবা সিন্ডিকেট

মালিকের পুত্রসহ আটক ২ : ৪ হাজার ইয়াবা ও বাইক জব্দ

শহর প্রতিনিধি: কক্সবাজার শহরের কলাতলীতে আবাসিক হোটেল আলম গেষ্ট হাউস কেন্দ্রিক একটি শক্তিশালী ইয়াবা সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। সিন্ডিকেটের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে কক্সবাজার শহর হয়ে ঢাকা পর্যন্ত ইয়াবা পাচারে জড়িয়ে পড়েছে। শহরের কলাতলী গনপূর্ত আবাসিক এলাকার আলম গেষ্ট হাউসের মালিক ও ঈদগাও এলাকার বাসিন্দা নুরুল আলমের পুত্র মোঃ সাহেদ সিন্ডিকেটটির অন্যতম সদস্য। সিন্ডিকেটটির ১১ সদস্য টেকনাফ, কক্সবাজার, ঢাকার বিভিন্ন অভিজাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা সরবরাহ করে আসছে। মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকা থেকে ইয়াবা কক্সবাজারের কলাতলীর আলম গেষ্ট হাউসে নিয়ে আসা হয়।
সেখান থেকে কক্সবাজারের পর্যটন এলাকার বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতাদের মাঝে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এছাড়া চাহিদা মোতাবেক ইয়াবা পাচার করা হয় ঢাকায়। ঢাকার অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আলম গেষ্ট হাউসের মালিক নুরুল আলমের পুত্র মোঃ সাহেদ। তার নেতৃত্বে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার অভিজাত বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ধনী বাবার বখে যাওয়া সন্তানদের মাঝে ইয়াবা সরবরাহ করে সিন্ডিকেট সদস্যরা। ইয়াবা ব্যবসা করে তারা ইতোমধ্যেই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তাদের এই উত্থানের পেছনে মধ্যপ্রাচ্যের টাকার কথা বলা হলেও আলম গেষ্ট হাউসের মালিক নুরুল আলমের গ্রামের বাড়ী কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাওয়ের মানুষের মাঝে নানা প্রশ্ন ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা ইয়াবা ব্যবসা করেন এমন খবর প্রচার পেলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। অবশেষে গত শনিবার ইয়াবা সিন্ডিকেটের দুই সদস্য আলম গেষ্ট হাউসের মালিক নুরুল আলমের পুত্র মোঃ সাহেদ ও উখিয়ার পাগলীরবিল এলাকার ছৈয়দুর রহমানের পুত্র জয়নাল আবেদিনকে ইয়াবা বিক্রির সময় হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গত শনিবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের কলাতলীতে একটি রেস্টুরেন্টে বসে ইয়াবা বিক্রির সময় ৪ হাজার ইয়াবাসহ তাদের হাতে-নাতে আটক করে র‌্যাব-৭ কক্সবাজারের ইনচার্জ মেজর কাজী মোহাম্মদ রাশেদুল আলম। এসময় তাদের ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মোটর সাইকেলও জব্দ করা হয়। সূত্র জানায়, এই ইয়াবা সিন্ডিকেটের রয়েছে দেশব্যাপী শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। টেকনাফ থেকে কক্সবাজার শহরে রেজিষ্ট্রেশনবিহীন দ্রুতগতি স¤পন্ন একাধিক মোটর সাইকেল রয়েছে তাদের। এসব বাহনের মাধ্যমে দ্রুত ইয়াবা পৌঁছে দেয়া হয় ক্রেতাদের কাছে। খুচরা বিক্রেতাদের মাঝে ইয়াবা সরবরাহ করা হয় সাংকেতিক মাধ্যমে। ইতিপূর্বে আলম গেষ্ট হাউস থেকেই সরাসরি ইয়াবা খুচরা ব্যবসায়ীদের মাঝে সরবরাহ করা হতো। বেশ কিছুদিন আগে গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন সদস্য গোপনে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান ইয়াবা জব্দ করে চুপ মেরে যান। সেসময় মোটা অংকের টাকা দিয়ে তা ধামাচাপা দেয়া হয়। এর পর থেকে হোটেলের বাইরেই কৌশলে ব্যবসা চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া ঢাকার অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেই তাদের নেতৃত্বে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা চালু আছে বলে জানা যায়। আটককৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে সূত্র।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন