মস্তিষ্ক কম্পিউটারের মতো শক্তিশালী

তথ্য ও প্রযুক্তি ডেস্ক : প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানীরা নিউরনের ডেনড্রাইটের সিগনাল পাঠানোর প্রক্রিয়া রেকর্ড করতে সক্ষম হয়েছেন। অক্ষত মস্তিষ্ক থেকে দৃষ্টি সহায়ক আলো নিয়ে মস্তিষ্কে ছবি পাঠায়ে বিশ্লেষণ করে ডেনড্রাইটকে মিনি কম্পিউটার হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। নিউরনের কোষদেহ থেকে বাইরের দিকে বহুভাগে ভাগ হওয়া ডালপালার মতো ছড়িয়ে থাকা শাখাপ্রশাখার নাম ডেনড্রাইট।
ডেনড্রাইট মূলত সেই অংশ, যা মানবদেহের বিভিন্ন ইন্দ্রিয় থেকে অথবা অন্য নিউরন থেকে তথ্য গ্রহণ করে মস্তিষ্কে পাঠায়। বিজ্ঞানীরা কয়েকটি ইঁদুরের ডেনড্রাইটের তথ্য গ্রহণের প্রক্রিয়া রেকর্ড করে যে তথ্য পেয়েছেন, তাতে জানা গেছে, ডেনড্রাইটগুলো যতটা ভাবা হয়েছিল তার চেয়েও জটিল এবং তাদের তথ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের ধরণটাও ভিন্ন। দর্শনীয় বস্তুকে মস্তিষ্ক কিভাবে বিশ্লেষণ করে সেটা জানার জন্য এটা আসলেই অভাবনীয় এটা আবিষ্কার বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডনের স্নায়ুবিজ্ঞানী মিশায়েল হইসার জানালেন, মস্তিষ্কের কোষের ভেতর একটি ‘প্যাচ পিপে’ বা জোড়া লাগানো সরু নল ঢুকিয়ে ভিজ্যুয়াল সিগনাল থেকে ডেনড্রাইট যে তথ্যগুলোর বৈদ্যুতিক রেকর্ড রাখছে সেগুলোর ছবি তুলে রাখেন বিজ্ঞানীরা।

এরভিন নেয়ের এবং ব্যার্ট জাকমান নামে দুই জার্মান বিজ্ঞানী এই গবেষণাটা করেছেন। এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কাজ করার জন্য জাকমান ১৯৯১ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পান।

হইসার জানান, কিভাবে মস্তিষ্ক এই দৃশ্যগুলোকে বিশ্লেষণ করে, এই প্রক্রিয়া তা আমাদের জানতে সাহায্য করে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডন এবং ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাট চ্যাপেল হিল এর স্নায়ুবিজ্ঞানীদের একটি দল এই গবেষণায় অংশ নেন।

মিশায়েল হইসার জানান, নতুন রেকর্ডিং এর ফলাফলে দেখা গেছে, যতটা ভাবা হয়েছিল ডেনড্রাইটগুলো তার চেয়েও সংবেদনশীল। ডেনড্রাইটগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে সাড়া দেয় এবং তাদের তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট পন্থায় চলে।

রেকর্ডিং এর মাধ্যমে জানা গেছে, ডেনড্রাইটগুলো একটি কম্পিউটিং পদার্থের মত কাজ করে। এরপর তথ্যগুলো কোষদেহ বা সোমায় পাঠায়, তারপর প্রক্রিয়া করে তা মস্তিষ্কের নেটওয়ার্কে প্রেরণ করে। হইসারের মতে ডেনড্রাইটগুলো মিনি কম্পিউটারের মতোই শক্তিশালী।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন