অভিযানের প্রভাব পড়েছে সৌদি জনজীবনে

ডেস্ক রিপোর্ট: সৌদি আরবে অবৈধ শ্রমিকদের ধরপাকড় শুরু হবার পর দেশটির নাগরিকদের মাঝে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধ হলেও এধরনের শ্রমিক বা কাজের মানুষের ওপর তারা অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। এখন অবৈধ শ্রমিকরা আতঙ্ক নিয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ফলে এর প্রভাব পড়েছে সৌদি আরবের জনজীবনে। আরব নিউজ
দেশটির শ্রমমন্ত্রণালয়ের তদারককারীরা সোমবার অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার ৯১৮ জন অবৈধ শ্রমিককে আটক করেছে বলে জেদ্দা পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। মদিনায় পুলিশ ৩শতাধিক অবৈধ শ্রমিককে আটক করে। এ অভিযানের মুখে সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। জেদ্দা ইসলামিক পোর্টের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রভাবে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যমূল্য বেড়ে গেছে।

জেদ্দা ও রিয়াদে যারা অবৈধ হয়ে বসবাস করছেন তারা পারতপক্ষে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। বেশ কিছু স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে কারণ এসব স্কুলের কোনো কোনো শিক্ষকের পক্ষে এখনো বৈধ কাগজপত্র সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। ফলে তারা ক্লাস নিতে পারছেন না।

এদিকে জেদ্দার প্যালেস্টাইন স্ট্রিটের প্রিন্স মাজেদ সড়কে প্রায় হাজার তিনেক ইন্দোনেশিয় নাগরিক এক বিক্ষোভ মিছিল করে এবং তাদের বৈধ কাগজপত্র দেয়ার দাবি জানায়। তারা জানায়, পাসপোর্ট দেয়া সম্ভব না হওয়ায় তারা বৈধ কাগজপত্র হাতে পাচ্ছেন না। জেদ্দা শ্রম দপ্তরের প্রধান আব্দুলমেনিম আল-শেরি জানান, বিভিন্ন বাণিজ্যিক অফিস ও বিপনী বিতানগুলোতে অভিযান জোরদার করা হচ্ছে এবং অবৈধ শ্রমিকদের চিহ্নিত করতে এটি কৌশলেরই অংশ। এধরনের অভিযান আরো জোরদার করা ছাড়াও এতে আরো দক্ষ লোকবল অšত্মর্ভূক্ত করার কথাও জানান তিনি।
আব্দুলমেনিম আল-শেরি আরো জানান, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন অফিস থেকে এ অভিযানে তারা বেশ সহায়তা পাচ্ছেন। তবে যারা এধরনের অভিযানে সহায়তা করবেন না বা বাধার সৃষ্টি করবেন তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
সৌদি আরবের শ্রমমন্ত্রণালয় এধরনের অভিযান শুরু করার আগে ৭ মাসের সুযোগ দেয়। এ সময়ের মধ্যে বৈধ কাগজপত্র বা আকামা সংগ্রহ করে নেয়ার জন্যে বিদেশি শ্রমিকদের নির্দেশ দেয়া হয়। দুইবার এ সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়। তবে অদক্ষ জনবল, খণ্ডকালীন ও স্কুল শিক্ষকদের একটা বড় অংশ বৈধ কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পারেনি। তবে সৌদি আরবের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ আশ্বাস দেয়া হয়েছে স্কুলগুলোতে কোনো ধরনের অভিযান চালানো হবে না। এবং শিক্ষকদের ক্ষেত্রে নমনীয় মনোভাব দেখানো হবে।
এছাড়া ছোট খাট দোকানপাট, রেস্টুরেন্ট বন্ধ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে অবৈধ লোকবল সহজেই কাজের সুযোগ পেত। রিয়াদের আল-বাথা শপিং কমপ্লেক্সের অধিকাংশ দোকান বন্ধ রয়েছে। তবে বৈধ কাগজপত্র সংগ্রহের প্রক্রিয়ার মধ্যে যারা এখনো রয়েছেন তাদের প্রতি সহায়তা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে সৌদি আরবের শ্রমমন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে আবাসিক কাজে জড়িত রয়েছেন এমন শ্রমিকদের বৈধ করে নেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। আকামা ও কাজে যোগ দেয়ার ক্ষেত্রে অনুমতি থাকলে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এছাড়া এসব কাগজপত্র নবায়ন করে নেয়ার জন্যে www.ajeer-sa.com এ ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন