সরকারের সঙ্গে জাপার কী নিয়ে আলোচনা

নতুন বার্তা: জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে আবার শুরু হয়েছে নানান হিসাব-নিকাশ। রুহুল আমিন হাওলাদার বলছেন, সরকারের সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে। তার এই বক্তব্যে দুটো বিষয় সামনে এসেছে: প্রথমত, কী নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, আলোচনা সফল হলে এরশাদ কি আবারো নির্বাচনে যাবেন? শুক্রবার সকালে রাজধানীর বারিধারায় প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রুহুল আমিন হাওলাদার।সরকারের সঙ্গে জাতীয় পার্টির আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি বলেন, সরকার তো সরকারই। সরকারের সঙ্গে আলোচনা হতেই পারে, এতে দোষের কিছু নেই।

সরকারের পক্ষ থেকে আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ যোগাযোগ করছেন কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, “যোগাযোগ হতেই পারে। আমরা সরকারের সঙ্গে দেশ পরিচালনা করেছি, দীর্ঘদিন আমরা সরকার চালিয়েছি। পদত্যাগটা যেন সৌজন্যমূলক হয়। আমরা কোনো দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই না। তবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না, যা বিবেকবর্জিত ও দেশের মানুষের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে।”

রওশন এরশাদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ও ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের পদত্যাগ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, এখনো এ তিনজনের পদত্যাগপত্র এরশাদের কাছে নেই। তবে তারা পার্টির সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন। রওশন এরশাদের বাসায় যাচ্ছেন বলে সাংবাদিকদের জানান রুহুল আমিন হাওলাদার।

এরইমধ্যে খবর বেরিয়েছে, সরকারের সঙ্গে দরকষাকষিতে নামছেন এরশাদ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাপার চার মন্ত্রী ও এক উপদেষ্টার বৃহস্পতিবারের বৈঠক নিয়েও চলছে নানা কানাঘুষা।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম দেখা করেন জাপার তিন মন্ত্রী- রওশন এরশাদ, রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক। সবাই ধারণা করেছিল, তারা পদত্যাগ করতে গিয়েছেন। তবে পরে জানা যায় আলোচনা করতে যান তারা। একটি দৈনিকে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই তিন মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনটি দাবি পেশ করেন। এরশাদের বিরুদ্ধে থাকা জেনারেল মঞ্জুর হত্যা ও জনতা টাওয়ার মামলা প্রত্যাহার এবং নির্বাচনের তফসিল পেছানো। প্রধানমন্ত্রী তাদের আশ্বস্ত করেন।

এই তিন মন্ত্রী বেরিয়ে যাওয়ার পর জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যরিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও নারী উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু প্রধানমন্ত্রীর কক্ষে প্রবেশ করেন। ঘন্টাখানের চলে আলোচনা। এই আলোচনার বিষয় কী ছিল তা কেউ জানে না। জাপার এ দুই মন্ত্রী ‘আওয়ামী ঘেঁষা’ বলে পরিচিত।

সবমিলিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট, সরকারের সঙ্গে এরশাদের সঙ্গে দরকষাকষি চলছে। একটি রফা হলেই এরশাদ আবার ডিগবাজি খাবেন-তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ এরশাদের নিজের কথায় টিকে থাকাটাই বিস্ময়কর ঘটনা। আর তিনি যদি পাল্টি খান তাহলে সেটিই স্বাভাবিক। আর এরশাদ কখন কী কথা বলেন তা সম্ভবত নিজেও জানেন না। তার সম্পর্কে কোনো স্থায়ী ধারণা পোষণ করা বোকামি বলেই মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন