কাশেম আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি ২৭ জুন

নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগের মামলায় গ্রেফতার দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান জামায়াতের নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দেওয়া অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২৭ জুন দিন ধার্য করেছেন। ওই দিনের মধ্যে আসামিপক্ষকে তাদের তথ্যপ্রমাণ দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এর আগে গত ১৬ মে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমসহ প্রসিকিউশন টিম ১৪টি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর দাখিল করেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৬ মে দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১। মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগ ছাড়া বাকি সব অভিযোগই আটক করে নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে। ১১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তর সালের ২৮ নভেম্বর শহীদ জসিমসহ ছয়জনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। ১২ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ তিনজনকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয়। এরপর সেখান থেকে দুইজনকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয়। এ ছাড়া বাকি সবগুলো অভিযোগেই আটক করে নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে।
একাত্তর সালে নভেম্বর মাসের শেষ দিকে ওমর-উল ইসলাম চৌধুরী, লুৎফর রহমান ফারুক, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সাইফুদ্দিন খান, আব্দুল জব্বার মেম্বার, হারুন অর-রশিদ খান, মো.সানাউল্লাহ চৌধুরী, নুরুল কুদ্দুস, সৈয়দ মো. এমরান, জাকারিয়া, সুনীল কান্তি বর্ধণ ও নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয়। এর আগে গত ৬ মে মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৪টি অভিযোগের তদন্ত চূড়ান্ত করে তদন্ত সংস্থা প্রসিকিউশনে জমা দেয়।
গত বছরের ১৭ জুন মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ওইদিন বিকেলে মতিঝিলে দৈনিক নয়া দিগন্ত কার্যালয়ের (দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশন) থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিকেল সোয়া চারটার দিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।  ট্রাইব্যুনাল মীর কাশেম আলীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে ওইদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ১৯ জুন মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে মীর কাশেমের জামিন আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ৫ জুলাই তার বিরুদ্ধে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। গত ৮ জুলাই প্রসিকিউশনের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মীর কাশেম আলীকে সেভ হোমে একদিনের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর পর্যায়ক্রমে তাকে সেভ হোমে নিয়ে দুইবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রোববার সকালে মীর কাশেম আলীকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন