উখিয়ায় পাহাড় ও গাছ কেটে বসতভিটা বিক্রির হিড়িক

ভাড়া ও বিক্রিতে নিশ্চিন্ত বনবিভাগ

সাঈদ রহমান
দিন দিন দখল হয়ে যাচ্ছে কক্সবাজারের উখিয়া ডিগ্রি কলেজের আশপাশের এলাকায় অবস্থিত সরকারি বনভূমি। একই সাথে সেখানকার বিশাল বিশাল বৃক্ষ ও পাহাড়গুলো কেটে সমতল করে ফেলা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সমতল করে বনবিভাগের এসব জমি বিক্রির মহোৎসবও চলছে ওই এলাকায়।
ফলে বনবিভাগের জমিগুলো শুধু বেহাত হচ্ছে তা নয়, উজাড় হয়ে যাচ্ছে বনভূমি। এতে করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র কলেজ এলাকায় অবস্থিত বনভূমিগুলো বিরাণ করে নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তির মত বিক্রি করে দেওয়ায় ইতোমধ্যে সেখানে অসংখ্য বসতবাড়ি গড়ে উঠেছে। দিবালোকের মত স্পষ্ট এই দৃশ্যটি বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করে থাকায় এলাকাবাসি মনে করছেন, অদূর ভবিষ্যতে এই এলাকায় বনভূমি আর থাকবে না। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় বনবিভাগের কিছু দূর্নীতিবাজ সদস্য রয়েছে, যারা এই এলাকায় অবস্থানরত ভূমিগ্রাসীদের সাথে আঁতাত করে পিএফ জমিতে ভিটে তৈরি করে লোকজনদের কমমূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছে। সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে এই এলাকার শত শত একর পিএফ জমি ভিটে বাড়ির জন্য বিক্রি হয়েছে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক পরিচয়ী কিছু ভূমিগ্রাসী এসমস্ত জমিগুলো লোকজনদের মাঝে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে হস্তান্তর করে চলছে। সূত্র মতে, উখিয়া ডিগ্রি কলেজের আশপাশের এলাকায় বনবিভাগের জমিগুলো এখন একর প্রতি ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় চলছে। 
কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের পাশে মনোরম পরিবেশে অবস্থান হওয়ায় এসমস্ত জমিগুলো বসতভিটার জন্য হুমড়ি খেয়ে কিনছেনও অনেকে। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, এই এলাকার গহিন অরণ্যে বর্তমানে প্রচুর দালান কোটা নির্মাণ হয়েছে। এখনো সেখানে বহু বসতবাড়ি নির্মাণ কাজ চলছে। সরকারি বনভূমি জবরদখল ও ক্রয়-বিক্রয় করে লোকজনের এভাবে বসতি গড়ে তোলার বিষয়টি স্থানীয় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করলেও এলাকাবাসি বলছেন, বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট কিছু দূর্নীতিবাজ সদস্য আছেন যারা এলাকার ভূমিগ্রাসীদের সাথে আঁতাত করে এখানকার পাহাড়গুলো কখনো ভাড়া আবার কখনো বিক্রয় কাজে জড়িত দীর্ঘদিন ধরে। তাই জরুরি ভিত্তিতে এ ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ, গাছ ও পাহাড় কাটা বন্ধসহ সরকারি সম্পদ রক্ষায় এলাকাবাসি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।  এ ব্যাপারে তারা কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, বনবিভাগের দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা রাখা দরকার। অন্যথায়, তারা এই অঞ্চলের পিএফ জমি ক্রয়-বিক্রয় করবেন তা বড় কথা নয়, বনভূমিগুলো উজাড় করে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করবে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন