ডেস্ক রিপোর্ট : পার্লামেন্ট ও রাজ্য বিধানসভাকে দাগি অপরাধীমুক্ত করতে ঐতিহাসিক এক রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল বুধবার দেওয়া এই রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, কোনো পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) কিংবা রাজ্য বিধানসভার সদস্য (এমএলএ)
আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এমপি কিংবা এমএলএ পদ হারাবেন। আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত এমএলএ কিংবা এমপি আর স্বপদে বহাল থাকতে পারবেন না। ভারতে নিম্ন আদালতে এমপি বা এমএলএরা দোষী সাব্যস্ত হলেও উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ পান। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা স্বপদে বহাল থাকতেন। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ধারা ৮(৪)-এর আওতায় উচ্চ আদালতে ঝুলে থাকা আবেদনের কারণ দেখিয়ে বিধায়ক বা সংসদ সদস্যরা যে রক্ষাকবচ পেতেন, গতকাল সেই সুযোগ খারিজ করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
একইসঙ্গে জেলে থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যাবে না বলেও জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক ওই রায়ের ফলে ভারতের রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন কমবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলেও এমপি বা এমএলএরা স্বপদে বহাল থাকতে পারবেন না। উচ্চ আদালতে আপিল করলে রায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের সদস্যপদ বাতিল থাকবে। বিচারপতি একে পাটনায়েক ও এসজে মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছেন, যেদিন থেকে সংসদ সদস্য বা বিধায়করা দোষী সাব্যস্ত হবেন, সেদিন থেকেই তার সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলেই বাতিল হবে সদস্যপদ। উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়েছে, এই যুক্তিতে আর পার্লামেন্ট বা বিধান সভা সদস্য থাকা যাবে না। আদালত জানিয়েছেন, নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এরই মধ্যে যারা উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে এ রায় প্রযোজ্য নয়। বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে সংসদ সদস্য, বিধায়ক বা জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে যে মামলা হবে, সেখানেই এই রায় কার্যকর হবে।
একই রায়ে জেলে থেকে ভোটে অংশগ্রহণ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন ভারতের শীর্ষ আদালত। এ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কপিল সিবাল বলেন, আমরা রায় পড়ে আলোচনা করব। তবে রাজনীতির দুর্নীতি মোচনকারী এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন কংগ্রেস মুখপাত্র রেণুকা চৌধুরী। অন্যদিকে বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, রাজনীতিতে স্বচ্ছতা বজায় রাখার চেষ্টাকে বিজেপি সাধুবাদ জানায়।
জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের বিভিন্ন ধারার সংবিধানের সঙ্গে অসঙ্গতি ও ত্রুটি তুলে ধরে জনৈক লিলি টমাস এবং লোক প্রহরী নামের একটি এনজিওর সচিব এসএম শুক্লার রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গতকাল এই ঐতিহাসিক রায় দেন।