মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিতরা ভোটারতালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে


বাংলানিউজ: মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিতরা কেবল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকার থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে না, এবার ভোটার তালিকা থেকেও তাদের নাম বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরই মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র বিভাগকে (এনআইডি) এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। চলতি সপ্তাহেই বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ইসি বৈঠকেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


একই সঙ্গে এর আগে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে দালালদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার

ধারাবাহিকতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দালালদের আরো নাম পর্যালোচনার তাগিদ দিয়েছে ইসি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো ৪৭ জন দণ্ডিত দালালের তালিকা ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রকল্পে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া ‘মুক্তিযুদ্ধ ৭১: দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী’ বইয়ের তালিকা পর্যালোচনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

ইসি সচিবালয়ের উপ সচিব আবদুল ওদুদ গত সপ্তাহেই এ চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।

তিনি জানান, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের পর একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তার দায়ে দালাল আইনে দণ্ডিতদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে।

আবদুল অদুদ বলেন, কমিশনের সিদ্ধান্তের পর দণ্ডিতদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালককে ৪৭ জনের তালিকা পাঠানো হয়েছে।

তিনি জানান, সেই সঙ্গে এ এস এম সামছুল আরেফিন সম্পাদিত ‘মুক্তিযুদ্ধ ৭১: দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী’ বইটির কিছু অংশ প্রিন্ট করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। দালালদের তালিকার বিষয়ে আরো পর্যবেক্ষণে মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।

আর এবার যুদ্ধাপরাধীদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে আইনে সংশোধন আনতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
ইসির আইন শাখার যুগ্ম সচিব এন আই খান বাংলানিউজকে বলেন, ভোটার তালিকা থেকে নাম কর্তনে নতুন এ দুই বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে সংশোধনের চিন্তা করছে কমিশন।

ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯ এর ধারা ৯ এ তালিকাভুক্তির বাধা নিষেধে (গ) ও (ঘ) সংযোজিত হচ্ছে। ধারা ১৩-এ ভোটার তালিকা থেকে নাম কর্তনে প্রতিস্থাপিত হবে- ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত আছে এমন কোনো ব্যক্তি দেশের নাগরিক না থাকলে বা উপযুক্ত আদালতে অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হলে বা ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন কোনো অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে বা যুদ্ধাপরাধী হিসেবে কোনো জাতীয়/আন্তর্জাতিক আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হলে তার নাম ভোটার তালিকা থেকে কর্তিত হয়ে যাবে।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করে। এরইমধ্যে ছয় জনের রায়ও হয়েছে। এরমধ্যে চারজনের ফাঁসির হুকুম হলেও দুইজনকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।